সমুদ্রগামী নাবিক ও মৎস্যজীবীদের জন্য সতর্কসংকেতের শুরুটা হয় ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দিয়ে। এ সংকেত মানে হলো, সমুদ্রবন্দর থেকে দূরে একটা ঝোড়ো হাওয়া বইছে। সেই হাওয়ার বেগ সর্বোচ্চ ৬১ কিলোমিটার। অর্থাৎ ছোটখাটো একটা ঝড় বইছে দূরে। সুতরাং জাহাজ বা মাছ ধরার নৌকাকে অবশ্যই সতর্কতার সঙ্গে এ সময় সমুদ্রে চলাচল করতে হবে। এক্ষেত্রে বন্দরে ও উপকূলীয় এলাকায় একটি লাল পতাকা টাঙানো হয়।
গভীর সমুদ্রে হয়তো তখন একটা ঝড় তৈরি হয়েছে, যার বেগ ঘণ্টায় ৬১-৮৮ কিলোমিটার। অর্থাৎ এ সংকেতের মানে গভীর সমুদ্রে মাঝারি তীব্রতার একটি ঝড় হচ্ছে।
এ ক্ষেত্রে ঝোড়ো হাওয়াটা আসলে উপকূলেই বইছে। বিশেষ করে সমুদ্রবন্দর আক্রান্ত। বন্দর এলাকায় এর গতিবেগ ৩০-৪০ কিলোমিটার। যেহেতু উপকূল ঘেঁষেই ঝড়টা বইছে, তাই গভীর সমুদ্রে এই ঝড় আরও শক্তিশালী। এ অবস্থায় জাহাজ বা নৌকা বন্দর ত্যাগ করলে ঝড়ের কবলে পড়বে। এমনকি বন্দরে নোঙর করা জাহাজ বা নৌকাও ঝড়ে আক্রান্ত হতে পারে। এক্ষেত্রে বন্দরে ও উপকূলীয় এলাকায় দুটি লাল পতাকা টাঙানো হয়।
এটি ৩ নম্বরের চেয়ে আরেকটু শক্তিশালী এবং এই ঝড়ে বন্দরের জাহাজ ও নৌকা ইতিমধ্যে ঝড়ে আক্রান্ত হয়েছে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ৫১-৬১ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
এ সংকেতের অর্থ হলো সমুদ্রবন্দর আরেকটু তীব্র ঝড়ে আক্রান্ত হবে। এ সময় ছোট বা মাঝারি ঝড় বয়ে যাবে বন্দর এলাকা দিয়ে। ঘণ্টায় যার গতিবেগ হবে ৬২-৮৮ কিলোমিটার। এটা বন্দরকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করে ঘূর্ণিঝড়।
এই ঝড়ের গতিবেগ ৫ নম্বরের মতোই। তবে এটা বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল এলাকা ত্যাগ করে।
এর ঝড়ের গতি একই। তবে এ সংকেতের অর্থ হলো ঝড় সরাসরি বন্দরের ওপর দিয়ে চলে যেতে পারে অথবা বন্দরের কোল ঘেঁষে উপকূল ত্যাগ করবে। এক্ষেত্রে বন্দরে ও উপকূলীয় এলাকায় তিনটি লাল পতাকা টাঙানো হয়।
মহাবিপৎসংকেত শুরু হয় ৮ নম্বর থেকে। ঝড়ের বেগ তখন প্রচণ্ড—৮৯ কিলোমিটারের বেশি। এ সময় ঝড়টি বন্দরকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এই মাত্রার ঝড়ে।
এটিও ৮ নম্বরের মতো। দুইয়ের পার্থক্য হলো ঝড় এ সময় উপকূল অতিক্রম করে বন্দরকে ডানে রেখে।
সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝড় যখন সরাসরি বন্দরের ওপর দিয়ে অতিক্রম করে, তখন ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের ঘোষণা দেন আবহাওয়াবিদেরা। এ সময় ঝড়ের গতিবেগ থাকে ৮৯ কিলোমিটারের বেশি। কিন্তু সরাসরি বন্দর অতিক্রম করে বলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও অনেক বেশি হয়।
সর্বোচ্চ মাত্রার বিপদসংকেত হলো ১১ নম্বর যোগাযোগবিচ্ছিন্ন সংকেত। এ সময় আবহাওয়া অফিসের সঙ্গে বা অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব রকম যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে যায় উপদ্রুত বন্দর বা সামুদ্রিক জাহাজগুলো। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।