পুকুর, নদী, সমুদ্র, এমনকি সুইমিংপুলেও গোসলের সময় পানির নিচে ডুব দিলেই কানের পর্দায় চাপ লাগার অনুভূতি হয়। অনেকেই এ অনুভূতির সঙ্গে পরিচিত। পানির যত নিচে যাবেন, দেখা যায়, চাপ তত বাড়ছে। কিন্তু এর পেছনের কারণ কী?
আসলে সবার অজান্তেই বাতাস প্রতিনিয়ত আমাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে। এ চাপে আমরা এত অভ্যস্ত যে তা আমাদের কাছে স্বাভাবিক বলে মনে হয়। আলাদা করে আর টের পাই না। বাতাসের এই চাপ আমাদের স্বাভাবিক জীবনের জন্য প্রয়োজনীয়ও বটে। সমুদ্রপৃষ্ঠে এ বায়ুচাপ সাধারণত ৭৬০ মিলিমিটার পারদ-চাপ। আর প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে বায়ুচাপ সাড়ে ৬ কেজি বা ১৪.৭ পাউন্ড।
কিন্তু ভূপৃষ্ঠ থেকে যত ওপরে ওঠা যায়, এ বায়ুচাপ তত কমতে থাকে। সাড়ে তিন মাইল ওপরে (প্রায় ১২ হাজার ফুট) এ বায়ুচাপ কমে ৪৮০ মিলিমিটার পারদ-চাপে দাঁড়ায়। এ জন্য পাহাড়ে উঠলে অনেকের নাক দিয়ে রক্ত বের হয়। আবার চাপ কমে যাওয়ায় বাতাসে অক্সিজেনের ঘনত্বও কমে যায়। এতে শ্বাস নিতেও সমস্যা হয় অনেকের।
বাতাসের মতো পানিরও রয়েছে চাপ সৃষ্টির ক্ষমতা। অবশ্য পানির চাপ নানামুখী হয়। উর্ধ্বচাপের ফলে কোনো হালকা জিনিস যেমন ওপরে তুলে দেয়, তেমনি তার পার্শ্বচাপও রয়েছে। মূলত একটি ক্ষেত্রফলের ওপর কোনো তরল পদার্থ যে চাপ প্রয়োগ করে, তাকে বলে তরলের চাপ। পানির যত গভীরে যাওয়া যায়, তত তার উর্ধ্বচাপের পাশাপাশি পার্শ্বচাপও বাড়ে। ফলে পানির গভীরে আমাদের দেহের ওপর পার্শ্বচাপ বেড়ে যায়। দেহের অন্যান্য অংশের চেয়ে কানের অংশটুকু, অর্থাৎ কানের পর্দা পাতলা। এ কারণে দেহের সব অংশে সমপরিমাণ চাপ সৃষ্টি হলেও শুধু কানেই তা অনুভূত হয়।