তেলে-জলে যেমন মেশে না, পিঁপড়া আর জলেও তেমনি মেশে না। পানিকে এরা বড় ভয় পায়। সাধারণত পিঁপড়াদের দল বেঁধে থাকতেই দেখা যায়, বৃষ্টির সময় এই দলীয় বন্ধন আরও জোরদার হয়। এ সময় তারা একে অপরের সঙ্গে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে সেতুবন্ধ তৈরি করে। মানবন্ধনের মতো পিঁপড়াবন্ধন! এভাবে একত্র হয়ে নিজেদের রক্ষা করে। কিন্তু চলার পথে আর কোনো পিঁপড়াকে কাছে না পেলে? ডাক শুনে কেউ না এলে একলা তো চলতেই হবে। এ ক্ষেত্রে পানিই বরং পিঁপড়াকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। পানির ঢল নেমে না এলে শুধু স্থির পানির ওপর হেঁটেই চলাচল করতে পারে পিঁপড়া, পানির পৃষ্ঠটান এ ক্ষেত্রে সাহায্য করে। আরও সাহায্য করে পিঁপড়ার পানিরোধী পা আর কম ওজন। তবে তাপমাত্রা একটু বেশি হলেই বিপদ, তাপমাত্রা যত বাড়বে, ততই পানির পৃষ্ঠটান কমে আসবে, পিঁপড়াও ধীরে ধীরে তলিয়ে যাবে পানিতে। তবে ডুবসাঁতার দিয়েও পিঁপড়া বেঁচে থাকতে পারে অনেকক্ষণ। কতক্ষণ? যতক্ষণ পর্যন্ত এর ট্রাকিয়া বাতাস ধরে রাখতে পারবে। ট্রাকিয়া পিঁপড়ার শ্বসন অঙ্গ, ঠিক যেমন আমাদের ফুসফুস। নাকের ছিদ্র দিয়ে যেমন আমরা অক্সিজেন নিই, পিঁপড়াদের শরীরেও তেমন ছিদ্র আছে, নাম স্কাইরাকল। এই স্কাইরাকল খুব ছোট, প্রায় ১ মিলিমিটারের হাজার ভাগের এক ভাগ। ছিদ্রগুলো ছোট হওয়ার সুবিধা হলো খুব বেশি পানি চট করেই শরীরে ঢুকতে পারে না। আবার পিঁপড়ার শরীরে খুব দ্রুত অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় না, কয়েক ঘণ্টা এরা শ্বাস আটকে রাখতে পারে। এর মধ্যে পানির ধারা পার হয়ে শুকনো জায়গায় চলে আসতে পারলেই হলো, আর ডুবে মরার আশঙ্কা নেই। তবে আকারে বড় পিঁপড়াদের ডুবে মরার আশঙ্কা কিন্তু বেশ। এদের শরীর বড়, শরীরে অক্সিজেনের অনেক বেশি ও দ্রুত দরকার পড়ে। তাই বেশিক্ষণ শ্বাস ধরে রাখতে পারে না। আবার স্কাইরাকলের আকার অনেক বড়, সহজেই বেশি পানি ঢুকে পড়ে। পানির স্রোতের কাছে বড় সাইজের পিঁপড়াই হার মানে বেশি।ডিসকভারিজ