অন্য কোনো গ্রহে বুদ্ধিমান প্রাণী থাকতে পারে কি?

ই-টি বা এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল প্রাণীর কথা আমরা সব সময়ই শুনি। কিন্তু এখন পর্যন্ত পৃথিবীর বাইরে ভিনগ্রহে কোনো বুদ্ধিমান প্রাণীর অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। রেডিও ওয়েভের মাধ্যমে অনেক ধরনের সংকেত মহাবিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারপর মহাকাশ থেকে কোনো উত্তর আসে কি না, সেই অপেক্ষায় বিজ্ঞানীরা রয়েছেন। না, কোনো খবর নেই। এরপরও এ বিষয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। সনি পিকচার্স এন্টারটেইনমেন্ট সম্প্রতি এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল নিয়ে একটা সিনেমা তৈরি করেছে। সেখানেও কল্পিত কিছু দেখানো হয়েছে। কিন্তু পৃথিবীর বাইরে কোথাও বুদ্ধিমান প্রাণী থাকতে পারে কি না, সেটা সিনেমার বিষয়বস্তু নয়। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ম্যাগাজিনের, জুন ২০১৯ সংখ্যায় এ বিষয়ে একটি তথ্যবহুল লেখা ছাপা হয়েছে। আসুন দেখা যাক সম্ভাবনা কতটা। বিজ্ঞানীরা খুঁজে দেখছেন আমাদের সূর্যের মতো অন্য কোনো নক্ষত্র আছে কি না, যার চারপাশে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৃথিবীর মতো কোনো গ্রহ ঘুরছে কি না। প্রথমে হিসাব করে দেখতে হয় ক্রমপ্রসারমাণ মহাবিশ্বে মোট কত নক্ষত্র আছে। এর সংখ্যা অন্তত (১০)২২ । তার মানে ১০–এর পর ২২টি শূন্য। বিরাট সংখ্যা। এর মধ্যে যদি ৫ শতাংশ নক্ষত্র সূর্যের মতো হয়, তাহলেও ঠিক ও রকম ৫০০ বিলিয়ন বিলিয়ন নক্ষত্র রয়েছে। এদের মাত্র ৫ ভাগের ১ ভাগ নক্ষত্রের যদি পৃথিবীর মতো গ্রহ থাকে, তাহলেও সেই সংখ্যাটা হবে ১০০ বিলিয়ন বিলিয়ন। আমাদের ছায়াপথেই আছে এ ধরনের ৫০ হাজার কোটি নক্ষত্র। তাহলে ভেবে দেখুন, আমাদের পৃথিবীর মতো এত কোটি কোটি গ্রহের কোনো একটিতে প্রাণের অস্তিত্ব কি একেবারেই অসম্ভব? তাহলে কেন সন্দেহ? কারণ, প্রশ্ন হলো, মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণী থাকার সম্ভাবনা কতটা? এটা আসলেই কঠিন। আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসমৃদ্ধ অগ্রসর সভ্যতার কথা না হয় ছেড়েই দিই। যদি থাকেও বাইরের জগতে, সেখানে বুদ্ধিমান প্রাণীদের অনেক উঁচু পর্যায়ে যেতে হবে। তাহলে হয়তো আমাদের পাঠনো সংকেত তরঙ্গ ওরা ধরতে পারবে। হাজার হাজার আলোকবর্ষ দূর থেকে সেই সংকেতের উত্তর যদি কেউ পাঠায়, সেটা পৌঁছাতে লাগবে আরও হাজার হাজার বছর। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, বাইরের জগতে কোনো গ্রহে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীর অস্তিত্ব থাকলেও তার খোঁজ পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।