মহাশূন্যে গেলে কি মানুষের উচ্চতা বাড়ে?

মহাশূন্যে গেলে কি মানুষের উচ্চতা বাড়ে?

না, কথাটা ঠিক সে রকম নয়। এটা সত্য যে মহাশূন্যে পরিভ্রমণের সময় শরীর কোনো ওজন অনুভব করে না। তাই দেহের উচ্চতা সামান্য বেড়ে যায়। কিন্তু সেটা বাড়ার কারণ সম্পূর্ণ ভিন্ন। এটা এ জন্য নয় যে হাত-পায়ের দৈর্ঘ্য বেড়ে গেল। না, তা নয়। আসলে ব্যাপারটা হলো কী, আমরা যখন পৃথিবীতে থাকি, তখন আমাদের দেহের ওপর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি কাজ করে। তখন আমরা ওজন অনুভব করি। কিন্তু নভোচারীরা নিদিষ্ট কক্ষপথে পৃথিবীকে ঘিরে মুক্তভাবে পড়তে থাকেন। তাই তারা ওজন অনুভব করেন না। তখন মেরুদণ্ডের কশেরুকাগুলোর মধ্যে ফাঁকা অংশ কিছুটা বেড়ে যায়। ফলে ওদের উচ্চতা ৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এ জন্য ওদের স্পেসস্যুটও একটু জায়গা রেখে বানানো হয়, যেন উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য সমস্যায় পড়তে না হয়। আবার পৃথিবীতে ফিরে এলে উচ্চতা আগের মতোই কমে আসে। রাতে আমরা বিছানায় লম্বা হয়ে ঘুমাই। এ সময় যেহেতু মাধ্যাকর্ষণ শক্তি মেরুদণ্ডের ওপর উল্লম্বভাবে চাপ ফেলে না, তাই ঘুমের সময় উচ্চতা সামান্য বাড়ে। কিন্তু সেটা খুবই সামান্য। দিনের বেলায় চলাফেরার সময় আবার ঠিক হয়ে যায়।

কখন দাঁত মাজব?

দাঁতের যত্ন যে কত দরকার তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কথায় বলে দাঁত থাকিতে দাঁতের মর্যাদা বোঝে না! যাদের দাঁতে পোকা ধরে (ক্যাভিটি), তারাই হাড়ে হাড়ে টের পায়।

সকালে ঘুম থেকে উঠে নাশতার আগে দাঁত মাজতে হয়। ছোটবেলা থেকে এটাই শিখে এসেছি। এরপর বিজ্ঞানীরা বললেন সকালে নয়, রাতে খাওয়ার পর দাঁত মাজলে আর পোকা ধরবে না। শুরু করলাম রাতে দাঁত মাজা। এখন গবেষকেরা বলছেন, শুধু রাতে নয়, সকালেও দাঁত মাজতে হবে এবং সেটা নাশতার আগেই! ব্যাপার কী? তাহলে কি আমাদের পূর্বপুরুষদের অভিজ্ঞতাই ঠিক ছিল? অনেকটা তাই। তবে একটু বিজ্ঞানের বিষয় আছে।

আসলে রাতে শোয়ার আগে একবার দাঁত মাজা দরকার। কারণ, সারা দিনের খাওয়ার পর কিছু খাদ্যকণা দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকে। সারা রাতে ওই সব খাদ্যকণায় ব্যাকটেরিয়া জমে। ওরা জমে থাকা খাদ্যকণা খায় আর অ্যাসিড তৈরি করে। দাঁতের এনামেল নষ্ট হয়। দাঁতে গর্তও হয়, যাকে আমরা বলি পোকা ধরা। তাই রাতে একবার দাঁত মাজলে ব্যাকটেরিয়া জমলেও ওরা কিছু খাবার পাবে না। অ্যাসিডও বের হবে না। যদি রাতে দাঁত মাজার আগে বা পরে সুতা দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করি (ফ্লসিং) তাহলে আরও ভালো। যদিও অনেক বিজ্ঞানী বলেন, ফ্লসিংয়ে যে কতটা উপকার, তা আজও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। গবেষণা চলছে।

এখন রাতে দাঁত ব্রাশ করে ঘুমাতে গেলেন। কিছু ব্যাকটেরিয়া কিন্তু দাঁতের ফাঁকে ফাঁকে জমবে। অবশ্য ওরা খুব বেশি খাবার পাবে না। শুধু দাঁতের ওপর জমে ওঠা সাদা পদার্থের পরতে বা দন্তমলে (প্লাক) জড়ো হয়ে অপেক্ষায় থাকবে, কখন কিছু খাদ্যকণা পাওয়া যাবে। যেহেতু ঘুমের মধ্যে মুখে লালা বের হয় না, তাই এই প্লাকে ব্যাকটেরিয়ার টিকে থাকা সহজ। এরা খুব দ্রুত কাজ করতে পারে। খাওয়া পেলেই মিনিট পাঁচেকের মধ্যে অ্যাসিড বের করতে থাকে, যা দাঁতের ক্ষতি করে। তাই সকালে খাওয়ার আগে দাঁত মাজলে ওই ব্যাকটেরিয়াগুলো নির্মূল হয়ে যায়। এরপর সারা দিনে মুখে প্রচুর লালা বের হয়। ব্যাকটেরিয়ার টিকে থাকা একটু কঠিন হয়। সে জন্য রাতে খাওয়ার পর ও সকালে খাওয়ার আগে, দুবার দাঁত মাজলে দাঁত নিয়ে ঝামেলা অনেক কমে যায়।

ডার্ক ম্যাটার

ডার্ক ম্যাটার কী?

আমরা একে ‘অদৃশ্য বস্তু’ বলতে পারি। এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিকসের অ্যাস্ট্রোনমির অধ্যাপক ডাউগ ফিনকবেইনার (স্মিথসোনিয়ান ম্যাগাজিন, ১ এপ্রিল ২০১৭)। তাঁর মতে, একে দেখা যায় না, কারণ এটা আলো ছড়ায় না, শোষণ বা প্রতিফলনও ঘটায় না। মহাবিশ্বে যত বস্তু (ভরশক্তি)আছে তার প্রায় ৯৫ ভাগই ডার্ক ম্যাটার ও এনার্জি। তাকে দেখা যায় না, কিন্তু সব দৃশ্যমান পদার্থকে মহাকর্ষ বলের প্রভাবে আকর্ষণ করে। সে জন্যই এর অস্তিত্ব আমরা টের পাই। ডার্ক ম্যাটার এমনকি কয়েকটি গ্যালাক্সিকে ধরে রাখতে পারে।