pH স্কেল

অম্লীয়, ক্ষারীয় এবং নিরপেক্ষ বলতে আসলে কী বোঝায়?

কোনো দ্রবণ অম্লীয়, ক্ষারীয় নাকি নিরপেক্ষ—তারই একটা পরিমাপ এই pH স্কেল। এখানে ০ হলো সবচেয়ে অম্লীয়, ৭ মানে নিরপেক্ষ এবং ১৪ মানে সবচেয়ে ক্ষারীয়। তার মানে, ৭–এর কম হলে দ্রবণটি অম্লীয় হবে আর বেশি হলে হবে ক্ষারীয়। আর ৭ বা নিরপেক্ষ হলে? আসলে, পানির pH হলো ৭।

কথা হচ্ছে, এখানে আমরা মাপছিটা কী?

এর উত্তর বুঝতে হলে একটুখানি রসায়ন ঘেঁটে দেখতে হবে।

পানির রাসায়নিক সংকেত H2O। তার মানে, এখানে দুটো হাইড্রোজেন আর একটা অক্সিজেন থাকে। কিন্তু এরা আসলে মৌল হিসেবে থাকে না, থাকে আয়ন হিসেবে। আয়ন মানে যার যে কয়টা ইলেকট্রন থাকার কথা, তার চেয়ে কম বা বেশি ইলেকট্রন থাকা। যেমন, হাইড্রোজেনে (H) একটা ইলেকট্রন থাকার কথা। কিন্তু H+ –এ একটা ইলেকট্রন কম থাকে, তাই এটি একটি আয়ন।

যা–ই হোক, পানির মধ্যকার আয়ন দুটোর একটা হাইড্রোজেন (H+), আরেকটা হাইড্রক্সাইড (OH-)। তার মানে, প্রতিটা হাইড্রোজেন যখন একটা করে হাইড্রক্সাইডের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তখন দ্রবণটা নিরপেক্ষ অবস্থায় থাকবে। pH স্কেলের মান ৭–এর কম হওয়ার অর্থ দ্রবণে হাইড্রোজেনের পরিমাণ বেশি। সে জন্যেই দ্রবণটা অম্লীয়। আবার, pH স্কেলের মান ৭–এর বেশি হওয়ার অর্থ দ্রবণে হাইড্রক্সাইডের পরিমাণ বেশি। ফলে দ্রবণটি ক্ষারীয়।

আরেকটা ব্যাপার হলো ঘনমাত্রা। যে দ্রবণের pH ৬, তার মধ্যকার হাইড্রোজেনের ঘনমাত্রা pH ৭ দ্রবণ থেকে ১০ গুণ বেশি। একইভাবে যে দ্রবণের pH ৫, তার মধ্যকার হাইড্রোজেনের ঘনমাত্রা pH ৬ দ্রবণ থেকে ১০ গুণ বেশি এবং pH ৭ দ্রবণ থেকে ১০০ গুণ বেশি। এভাবে ক্ষারীয় দ্রবণে হাইড্রক্সাইডের ঘনমাত্রা বেশি থাকে।

অম্লীয় দ্রবণে ক্ষার মেশানোর অর্থ দ্রবণে অতিরিক্ত হাইড্রক্সাইড মেশানো। ফলে দ্রবণের মধ্যকার অতিরিক্ত হাইড্রোজেনগুলো এই হাইড্রক্সাইডদের সঙ্গে যুক্ত হয়। সে জন্য দ্রবণটি নিরপেক্ষ দ্রবণ হওয়ার দিকে এগিয়ে যায়। একইভাবে ক্ষারীয় দ্রবণকে নিরপেক্ষ করতে হলে অতিরিক্ত হাইড্রোজেন মেশাতে হয়।