দেশব্যাপী চলছে বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের আঞ্চলিক পর্ব। আগামী ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি যথাক্রমে যশোর ও বরিশাল অঞ্চলে আয়োজিত হবে এ উৎসব। একই তারিখে ঢাকায় আয়োজিত হবে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের জাতীয় পর্ব।
সুতরাং, যারা গণিত অলিম্পিয়াডের জাতীয় পর্বে অংশগ্রহণ করতে চাইবে তাঁরা ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের আঞ্চলিক পর্বে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এ জন্য ফিজিক্স অলিম্পিয়াড টিম সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যশোর ও বরিশাল অঞ্চলের যে সব শিক্ষার্থী গণিত অলিম্পিয়াডের জাতীয় পর্বে অংশগ্রহণ করবে, তাঁরা চাইলে সরাসরি ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের জাতীয় পর্বে অংশগ্রহণ করতে পারবে। তবে শর্ত হলো, গণিত অলিম্পিয়াডের জাতীয় পর্বে অংশগ্রহণ করা শিক্ষার্থীদের অবশ্যই ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের বাছাইপর্বে নির্বাচিত হতে হবে। অর্থাৎ, যারা বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের অনলাইন বাছাইপর্বে নির্বাচিত হয়েছে তাঁদের মধ্যে যারা গণিত অলিম্পিয়াডের জাতীয় পর্বে অংশগ্রহণ করবে, শুধু তারাই ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের জাতীয় পর্বে অংশগ্রহণ করতে পারবে। গণিত অলিম্পিয়াডের জাতীয় পর্বের অংশগ্রহণকারী সার্টিফিকেট দেখিয়ে সরাসরি ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের জাতীয় পর্বে অংশগ্রহণ করতে পারবে এই দুই অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা।
আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার যশোর জিলা স্কুলে আয়োজিত হবে যশোর আলিঞ্চল উৎসব। এখানে জানিয়ে রাখি, খুলনা বিভাগের শিক্ষার্থীরাও যশোরে আয়োজিত আঞ্চলিক পর্বে অংশগ্রহণ করবে। যশোর অঞ্চলের অন্তর্ভূক্ত জেলাগুলো হলো খুলনা, কুষ্টিয়া, বাগেরহাট, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, মেহেরপুর, নড়াইল ও সাতক্ষীরা। এসব অঞ্চল থেকে অনলাইন বাছাইপর্ব শেষে চার ক্যাটাগরিতে ৫০৫ জনকে বাছাই করা হয়। এর মধ্যে ‘এ’ক্যাটাগরির ৩০ জন, ‘বি’ক্যাটাগরির ৬৮ জন, ‘সি’ক্যাটাগরির ২৮৫ জন এবং ‘ডি’ক্যাটাগরি থেকে ১২২ জনকে বাছাই করা হয়।
বরিশাল আঞ্চলিক উৎসব অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি, শনিবার বরিশাল জিলা স্কুলে। বরিশাল অঞ্চলের মোট ১৪৪ জন নির্বাচিত শিক্ষার্থী এ আয়োজনে অংশ নেবে। ‘এ’ক্যাটাগরি থেকে ৭ জন, ‘বি’ক্যাটাগরির ২১ জন, ‘সি’ক্যাটাগরির ৯০ জন এবং ‘ডি’ক্যাটাগরি থেকে ২৬ জন নির্বাচিত হয়েছে এ অঞ্চলে। বরিশাল অঞ্চলের অন্তর্ভূক্ত জেলাগুলো হলো বরিশাল, বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী ও ভোলা।
১৩তম ফিজিক্স অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হচ্ছে চারটি ক্যাটাগরিতে। ৫ম-৬ষ্ঠ শ্রেণি বা সমমানের শিক্ষার্থীরা ‘এ’ক্যাটাগরি, ৭ম-৮ম শ্রেণি বা সমমানের শিক্ষার্থীরা ‘বি’ক্যাটাগরি, ৯ম-১০ম শ্রেণি বা সমমানের শিক্ষার্থীরা ‘সি’ক্যাটাগরি এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি বা সমমানের শিক্ষার্থীরা ‘ডি’ক্যাটাগরি।
ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের ঢাকা আঞ্চলিক পর্ব। গত ৪ ফেব্রুয়ারি, শনিবার রাজধানীর ইনডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত হয় এ উৎসব। এতে অংশগ্রহণ করে প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী। এ পর্ব শেষে চার ক্যাটাগরি থেকে মোট ২৪৪ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। এর মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে ৪৭ জন, ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ৫৭ জন, ‘সি’ ক্যাটাগরিতে ৮৪ জন ও ‘ডি’ ক্যাটাগরিতে ৫৬ জন। পুরস্কার হিসাবে তাদের দেওয়া হয় মেডাল, সার্টিফিকেট ও টিশার্ট। নির্বাচিত এ শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের জাতীয় পর্বে।
২০২৩ সালে জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত হবে ৫৩তম ফিজিক্স অলিম্পিয়াড। এ লক্ষ্যে প্রতিবারের মতো এবারও দেশব্যাপী ১৩তম ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো ফিজিক্স অলিম্পিয়াড ২০২৩ আয়োজন করা হচ্ছে। শুরুতে দেশব্যাপী শিক্ষার্থীরা অনলাইনে নিবন্ধন করে। এরপর অনলাইনে আনুষ্ঠিত হয় বাছাইপর্ব। এ পর্বের নির্বাচিতদের নিয়ে আয়োজিত হচ্ছে আঞ্চলিক ফিজিক্স অলিম্পিয়াড। আঞ্চলিক পর্বের বিজয়ীদের নিয়ে আয়োজিত হবে জাতীয় উৎসব। পরে জাতীয় উৎসবের বিজয়ীদের নিয়ে ক্যাম্প আয়োজন করা হবে। ক্যাম্প শেষে বাছাইকৃতদের নিয়ে গঠিত হবে বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পিয়াড দল। ওই দলটিই জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠেয় ৫৩তম ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে।
এ অলিম্পিয়াডের আয়োজন করছে বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পিয়াড কমিটি। আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতা করছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক। ব্যবস্থাপনায় রয়েছে প্রথম আলো। এ ছাড়া ম্যাগাজিন পার্টনার হিসাবে থাকছে কিশোর আলো ও বিজ্ঞানবিষয়ক মাসিক ম্যাগাজিন বিজ্ঞানচিন্তা। টেকনিক্যাল পার্টনার হিসাবে আছে বিডিকম।
দেশের শিক্ষার্থীদের পদার্থবিজ্ঞানে দক্ষ করে তুলতে ২০১১ সাল থেকেই আয়োজিত হচ্ছে ফিজিক্স অলিম্পিয়াড। এবারেও একই উদ্দেশ্য নিয়ে শুরু হচ্ছে ফিজিক্স অলিম্পিয়াড ২০২৩।
লেখক: সম্পাদনা দলের সদস্য, বিজ্ঞানচিন্তা