বিশ্ব বিজ্ঞান একাডেমির ফেলো হলেন বাংলাদেশি গবেষক

Palash

বিশ্ব বিজ্ঞান একাডেমির ফেলো নির্বাচিত হলেন অধ্যাপক ও গবেষক মো. তোফাজ্জল ইসলাম। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। আন্তর্জাতিকভাবে মনোনীত বিশ্ব বিজ্ঞানে বিশেষ স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি এই সম্মান লাভ করেছেন।

৩ নভেম্বর বিশ্ব বিজ্ঞান একাডেমির সভাপতি এবং নির্বাহী পরিচালক তোফাজ্জল ইসলামকে এক অভিনন্দন বার্তার মাধ্যমে এ সংবাদ জানান। ২০২২ সালের প্রথম দিন থেকেই তাঁর এই আজীবন ফেলোশিপ কার্যকর হবে।

২০১৬ সালে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আট জেলায় অজানা ছত্রাকের সংক্রমণে ১৫ হাজার হেক্টর জমির গম নষ্ট হয়। অধ্যাপক তোফাজ্জল প্রথম সংক্রমণের জন্য দায়ী ছত্রাকটির চিহ্নিত করেন। এজন্য জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে ছত্রাকটি চিহ্নিত করেন তিনি। এ সময় চারটি মহাদেশের ৩১ জন বিজ্ঞানীকে সম্পৃক্ত সমস্যাটির সমাধান করেন। দায়ী ছত্রাকটি চিহ্নিত করার পর সেটা থেকে কীভাবে বাঁচা যাবে সে দিক-নির্দেশনাও তিনি ও তাঁর দল দেন চাষিদের। তার সেই দিকনির্দেশনা পরের বছর গমের সংক্রমণ কমিয়ে আনে প্রায় শূন্যের কোঠায়।

বর্তমানে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হলো গমের ব্ল্যাস্ট। রোগটি মোকাবেলায় অধ্যাপক তোফাজ্জল জিন এডিটিং, ন্যানোটেকনোলজি, প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়াসহ, আধুনিক বায়োটেকনোলজি প্রয়োগ করেছেন। ফল পেয়েছেন আশানুরূপ। গমের ব্ল্যাস্ট দ্রুত শনাক্তের জন্য একটি সহজ জীবপ্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন তিনি। এর বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে ব্যবহারের প্রক্রিয়া চলছে। এ ছাড়াও তিনি ধান, গম এবং স্ট্রবেরিতে রাসায়নিক সারের বিকল্প হিসেবে সাশ্রয়ী প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া প্রযুক্তি আবিষ্কার করে কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ভেষজ উদ্ভিদ এবং অণুজীব থেকে তিনি ৫০টিরও বেশি প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার করেছেন তিনি।

সম্প্রতি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের জার্নাল প্লস বায়োলজি-তে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে তিনি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুই শতাংশ বিজ্ঞানীদের একজন এবং বাংলাদেশে জীবপ্রযুক্তি এবং অণুপ্রাণবিজ্ঞানে দেশের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীর মর্যাদা পেয়েছেন। সার্বিক গবেষণা আর সাফল্যের কারণেই বিশ্ব বিজ্ঞান একাডেমির ফেলোশিপ লাভের গৌরব অর্জন করেছেন তিনি।