আগের পর্বে রেফারেন্স নাম্বারের সাহায্যে ছোট গুণ করেছি। ছোট গুণ মানে ২০-এর চেয়ে ছোট এবং ১০-এর চেয়ে বড় সংখ্যা। কিন্তু আজকে শিখব ২০-এর চেয়ে ছোট ও বড় সংখ্যার গুণ। ধরো, সংখ্যা দুটি ১৮ ও ৩৪। রেফারেন্স নাম্বার আগের মতোই ২০।
যেহেতু রেফারেন্স নাম্বার ২০ থেকে আমাদের প্রথম সংখ্যা ১৮ দুই কম, তাই ২ বসছে ১৮-এর নিচে। আর ২০ থেকে দ্বিতীয় সংখ্যা ৩৪-এর মান ১৪ বেশি। তাই ১৪ বসেছে ওপরের বৃত্তে।
এখন হয় ৩৪ থেকে ২ বিয়োগ করতে হবে, অথবা ১৮-এর সঙ্গে যোগ করতে হবে ১৪। যেহেতু ২ বিয়োগ করা সহজ, তাই বিয়োগই করা যাক।
৩৪ - ২ = ৩২
এই ৩২-এর সঙ্গে গুণ করতে হবে রেফারেন্স নাম্বার। অর্থাৎ, ৩২ ও ২০ গুণ। যেকোনো সংখ্যাকে ২০ দিয়ে গুণ করার কৌশল আগেই শিখিয়েছি। আবারও একটু দেখা যাক। যে সংখ্যাকে ২০ দিয়ে গুণ করব, সে সংখ্যাকে প্রথমে গুণ করতে হবে ২ দিয়ে। যেমন ৩২-কে ২ দিয়ে গুণ করলে পাব ৬৪। এবার এই ৬৪-কে ১০ দিয়ে গুণ করতে হবে। খুব সহজ, ডানে একটা শূন্য বসবে। অর্থাৎ গুণফল ৬৪০।
এবার ওপরের বৃত্তের দিকে খেয়াল করো। নিচে আছে ২, আর ওপরে ১৪। প্রথমে এ দুটি সংখ্যা গুণ করো। ১৪×২ = ২৮। এখানে আরেকটা বিষয় খেয়াল করতে হবে। আগের গুণগুলোতে দুটো বৃত্তই হয় নিচে ছিল, নয়তো ওপরে। কিন্তু এখানে একটি বৃত্ত নিচে, অন্যটি ওপরে। আমরা জানি, ওপরে থাকা মানে যোগ, আর নিচে থাকার মানে বিয়োগ। অর্থাৎ একটা যোগ এবং অন্যটা বিয়োগ। তাহলে প্লাস আর মাইনাস গুণ করলে কী হয়? মাইনাস হয়।
অন্যভাবেও ভাবতে পারো। ধরো, নিচে আছে -২, আর ওপরে আছে +১৪। তাহলে, (-২) × (+১৪) = -২৮। এ কারণে আমরা ওপরের ৬৪০ থেকে ২৮ বিয়োগ করব। বিয়োগফল পেলাম ৬১২। এই বিয়োগ করতে আবার ক্যালকুলেটর ব্যবহার করছ না তো! করলেও আর করতে হবে না। বিয়োগেরও আছে কৌশল।
প্রথমে ৬৪০ থেকে বিয়োগ করো ৩০। অর্থাৎ, ৬৪০ - ৩০ = ৬১০। কিন্তু আমাদের বিয়োগ করার কথা ২৮। আমরা বিয়োগ করেছি ৩০। তাহলে কত বেশি বিয়োগ করলাম? মাত্র ২। এই ২-কে তুমি বিয়োগফল ৬১০-এর সঙ্গে যোগ করে দাও। দেখবে, উত্তর ঠিক ঠিক মিলে যাচ্ছে। অর্থাৎ ৬১২।
এবার চলো, পরীক্ষা করে দেখা যাক, আমাদের উত্তর ঠিক আছে কি না। সে জন্য কী করতে হবে? আগেও শিখিয়েছি কয়েকবার। বিস্তারিত জানতে আগের পর্বগুলো দেখতে পারো। এখানে ছোট করে বলে দিই। যে দুটি সংখ্যা গুণ করতে হবে, সেই সংখ্যা দুটির অঙ্কগুলো যোগ করতে হবে। যেমন আমাদের গুণ করতে হবে ১৮ ও ৩৪। প্রথমে ১৮-এর জন্য হিসেব করব, ১ + ৮ = ৯। আর ৩৪-এর ক্ষেত্রে, ৩ + ৪ = ৭। তাহলে দুটি সংখ্যা থেকে যথাক্রমে পেলাম ৯ ও ৭। এবার এই দুটি অঙ্ক গুণ করতে হবে। ৯×৭ = ৬৩। তাহলে ৬ + ৩ = ৯।
এবার উত্তরের অঙ্কগুলোর এরকম যোগফল যদি ৯ হয়, তাহলেই বুঝতে হবে ওপরের গুণ ঠিক আছে। চলো, দেখা যাক। উত্তর পেয়েছিলাম ৬১২। এ সংখ্যার অঙ্কগুলো যোগ করতে হবে। অর্থাৎ, ৬ + ১ + ২ = ৯।
যেহেতু উভয় জায়গায় উত্তর ৯, তার মানে উত্তর ঠিক আছে। তোমরা এগুলো নিয়ম করে মাঝেমধ্যে চর্চা করতে ভুলো না যেন। আগামী পর্বে রেফারেন্স নাম্বার ৫০ ধরে গুণ করব। তাহলে আজ এখানেই শেষ করছি। আবার কথা হবে শিগগিরই।
লেখক: সম্পাদনা দলের সদস্য, বিজ্ঞানচিন্তা
সূত্র: ম্যাথ স্পিড ফর কিডস
আগের সব পর্বের লিংক
দ্বিতীয় পর্ব: গুণের আরও সহজ কৌশল
চতুর্থ পর্ব: বড় গুণের আরও সহজ কৌশল
পঞ্চম পর্ব: দ্বৈত গুণের সহজ পদ্ধতি
অষ্টম পর্ব: যোগ ও বিয়োগ করে গুণ
দশম পর্ব: কীভাবে বুঝবে তোমার গুণ সঠিক?
একাদশ পর্ব: বড় গুণ পরীক্ষার সহজ কৌশল
দ্বাদশ পর্ব: রেফারেন্সে নাম্বারের সাহায্যে গুণ