ন্যানোর দুনিয়ায় বাংলাদেশ

ঘটনাটি ২০১৬ সালের জুন মাসের। ফ্রান্সের ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি অব মেট্রোলজি অ্যান্ড টেস্টিংয়ে নিত্যদিনের চারটি খাবার পরীক্ষা করা হয়েছিল। খাবারগুলোর মধ্যে ছিল চকলেট বিস্কুট, চুইংগাম, বাছুরের মাংস দিয়ে তৈরি খাবার এবং অ্যাভোকাডো ফল দিয়ে তৈরি বিশেষ মসলাদার খাবার। পরীক্ষায় দেখা গেল, চারটি খাবারের প্রতিটিতেই ন্যানো কণার অস্তিত্ব রয়েছে।

জাতিসংঘের ইউনেসকো এ ঘটনাটি সে সময় উল্লেখ করে বলেছিল, অনেক দেশেই ন্যানোকণা যে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠছে, তা ওই পরীক্ষা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়। পোশাক, গাড়ির টায়ার, সার ও প্রসাধনীতেও এগুলো পাওয়া যায়। দিন দিন ন্যানো প্রযুক্তি প্রয়োগের সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো বিস্তৃত হওয়ায় অনেক দেশের গবেষণার অগ্রাধিকারের তালিকায় এখন এই প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান। ‘ইউনেসকো সায়েন্স রিপোর্ট: টোয়ার্ডস ২০৩০’ অন্তত তা–ই বলছে।

বাংলাদেশেও বিভিন্ন গবেষণা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ন্যানো পদার্থ ও ন্যানো প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা চলছে। এ বিষয়ে সামগ্রিক তথ্য–উপাত্ত পাওয়াও দুষ্কর। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের জার্নাল অব কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে প্রকাশিত প্রসপেক্ট অব ন্যানোটেকনোলজি ইন বাংলাদেশ পারসপেক্টিভ শীর্ষক নিবন্ধটি কিছুটা হলেও এ বিষয়ে ধারণা দেয়। যেমন: বাংলাদেশে ২০–২৫টি প্রতিষ্ঠান ন্যানো প্রযুক্তি গবেষণায় যুক্ত। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ, জাতীয় জৈবপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য। ন্যানোটেক গবেষণায় এসব প্রতিষ্ঠানে আনুমানিক ৩০টি যন্ত্রপাতি রয়েছে। আর ন্যানো প্রযুক্তি গবেষণার ২০–২৫টি ক্ষেত্রে সক্রিয় আছেন অন্তত ৫০ জন গবেষক। মূলত কৃষি, প্যাকেজিং, সৌরকৌষ, ফেব্রিকস, এনার্জি, পরিবেশদূষণ নিয়ন্ত্রণ, বায়োসেনসর তৈরিতে এসব গবেষণা হচ্ছে। ২০১৩–১৪ সালে সরকার ন্যানো প্রযুক্তি গবেষণায় ব্যয় করেছে ২৩ দশমিক ৩৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

সম্প্রতি ‘জাতীয় কৃষিনীতি ২০১৮’-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। দেশের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্য কৃষিকে নিরাপদ ও লাভজনক করে তুলতে ন্যানো প্রযুক্তি ব্যবহার করবে সরকার। এই কৃষিনীতির আওতায় প্রাথমিক পর্যায়ে ফসলের রোগ, জাতভিত্তিক পুষ্টিচাহিদা নির্ণয় ও পুষ্টি আহরণক্ষমতা বৃদ্ধি, ন্যানো সেন্সর ব্যবহারের মাধ্যমে ভূমির গুণাগুণ পর্যবেক্ষণ ও উৎপাদন বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। ন্যানো প্রযুক্তির সার ও বালাইনাশক উদ্ভাবন ও ব্যবহারের উদ্যোগও থাকবে।

বড় পরিসরে ভূমিকা রাখতে চায় বিসিএসআইআর

সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন মানেই সূর্যের আলো থাকতে হবে। আকাশ মেঘলা থাকলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ। সৌরবিদ্যুৎ নিয়ে এমন ধারণা আমাদের অনেকের কমবেশি রয়েছে। তবে দেশে প্রথমবারের মতো ন্যানো প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) তৈরি করেছে দ্বিতীয় প্রজন্মের সৌরকোষ বা থিন ফিল্ম সোলার সেল। যার বড় সুবিধা হলো মেঘলা দিনেও বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। এই সৌরকোষ বানাতে সিলিকনের বদলে ব্যবহার করা হয়েছে তামা, টিন, দস্তা ও সালফার, কাচ ইত্যাদি সহজলভ্য ও সস্তা পদার্থ। বানানোর খরচও কম। প্রথম প্রজন্মের চেয়ে প্রায় ৫০ ভাগেরও কম খরচ।

দ্বিতীয় প্রজন্মের সৌরকোষ উদ্ভাবনের কাজটি করেছে বিসিএসআইআরের জ্বালানি গবেষণা ও উন্নয়ন ইনস্টিটিউট। তারা ন্যানোম্যাটেরিয়াল উন্নয়ন ও ন্যানোম্যাটেরিয়াল ভিত্তিক শক্তি রূপান্তরের পদ্ধতি উদ্ভাবনে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। ন্যানো প্রযুক্তিনির্ভর বিভিন্ন ক্ষতিকর গ্যাস, পদার্থ ও মৌল শনাক্তকরণের যন্ত্র উন্নয়নের গবেষণাও চলছে এই ইনস্টিটিউটে। পোশাকশিল্প, ওষুধশিল্প, চিকিৎসা ও জীবন সুরক্ষার নানা কাজে ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন ধরনের ন্যানোম্যাটেরিয়াল তৈরির সহজ, সাধারণ ও সাশ্রয়ী মাধ্যম উদ্ভাবনের চেষ্টাও চলছে।

শুধু জ্বালানি গবেষণা ও উন্নয়ন ইনস্টিটিউট নয়, বিসিএসআইআরের আরও কয়েকটি বিভাগ ন্যানোটেকনোলজি ও ন্যানোম্যাটেরিয়াল নিয়ে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটির পাইলট প্ল্যান্ট অ্যান্ড প্রসেস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার ন্যানো হ্যাপ বা হাইড্রক্সি এপাটাইট তৈরি করেছে। হাইড্রক্সি এপাটাইট আমাদের শরীরের হাড় ও দাঁতের প্রাকৃতিক খনিজ উপাদান হিসেবে পরিচিত। হাড়ের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ এবং দাঁতের ৯০ শতাংশ এনামেল এই খনিজ দিয়ে তৈরি। ন্যানোহাইড্রক্সি এপাটাইটও একই খনিজ, যা গবেষণাগারে তৈরি হয়। কোনো কারণে হাড় কিংবা দাঁতের ক্ষতি হলে বা ক্ষয় হলে সেখানে ন্যানোহাইড্রক্সি এপাটাইট প্রতিস্থাপন করা হয়, যা স্বাভাবিক নিয়মে এনামেলকে ফিরিয়ে আনে। নতুন হাড় গঠনেও ভূমিকা রাখে। এ–সংক্রান্ত একটি যৌথ গবেষণা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে শুরু হয়েছে।

উন্নত দেশে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় চিকিৎসা ও জীববিজ্ঞানের সমন্বয়ে বায়োমেডিকেলের ক্ষেত্র দিন দিন বিকশিত হচ্ছে। তৈরি করা হচ্ছে বায়োমেডিকেলে প্রয়োগ উপযোগী সিলভার ন্যানো কণা। ক্ষতিকর অণুজীব মোকাবিলা, প্রদাহজনিত প্রভাব নিয়ন্ত্রণে বিশেষভাবে কার্যকর এই সিলভার ন্যানো কণা। দৈনন্দিন জীবনে আমরা বায়ুদূষণের ঝুঁকিতে রয়েছি। এমন ঝুঁকি থেকে রক্ষা দেবে ন্যানোগ্যাস সেন্সর। বিসিএসআইআরের পাইলট প্ল্যান্ট অ্যান্ড প্রসেস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার ই–বর্জ্য থেকে জিংক অক্সাইড ন্যানো কণা, বায়োমেডিকেলে প্রয়োগ উপযোগী সিলভার ন্যানো কণা, বিভিন্ন ধরনের গ্যাস সেন্সর, হিউমিডিটি সেন্সর তৈরির জন্য থিনফিল্মের ওপর গবেষণা করছে।

বিসিএসআইআরের অ্যানার্জি কনভার্সন অ্যান্ড স্টোরেজ রিসার্চ: ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিজিকস ডিভিশনও ন্যানোর দুনিয়ার নানা বিষয় নিয়ে গবেষণা করছে। সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব মেটাল অক্সাইড ন্যানো স্ট্রাকচারড (যেমন ন্যানো পার্টিক্যাল, ন্যানো ফাইবার, ন্যানো রড, ন্যানো টিউব ইত্যাদি) বস্তুর সিনথেসিস ও ভৌত ধর্মের উন্নয়নে কাজ করছে। এ ছাড়া ন্যানো স্ট্রাকচারড (ফটো) এনোড ও ক্যাথোড ম্যাটেরিয়ালের সিনথেসিস ও ভৌত-রাসায়নিক ধর্মের উন্নয়নেও কাজ হচ্ছে। প্রধানত সোলার ফুয়েল, যেমন হাইড্রোজেনের সাশ্রয়ী উৎপাদন এবং অত্যাধুনিক হাইক্যাপাসিটি ব্যাটারিতে এই গবেষণার ফল কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

বর্তমানে ম্যাগনেটিক ন্যানো কণা নিয়েও গবেষণা করছে বিসিএসআইআর। ম্যাগনেটিক ন্যানো কণার ব্যবহার শুধু ইলেকট্রনিক পণ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এটি এখন চিকিৎসাবিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এনএমআর প্রযুক্তির মাধ্যমে মস্তিষ্কের ক্যানসার শনাক্তকরণে মস্তিষ্কের রক্তনালির মধ্যে ম্যাগনেটিক ন্যানো কণা প্রবেশ করানো হয়, যার ফলে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যানসার নির্ণয় অত্যন্ত সহজ হয়ে উঠেছে।

বিসিএসআইআরের গবেষণা কার্যক্রম সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছেন ড. মোসা. হোসনে আরা বেগম। তাঁর মতে, উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বর্তমানে বিসিএসআইআর ন্যানো প্রযুক্তি ও ন্যানোম্যাটেরিয়াল নিয়ে কাজ করছে। যথাযথ গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশে ন্যানোর জগতে এই প্রতিষ্ঠানের অবদান আরও বড় পরিসরে ভূমিকা রাখবে।

আশা জাগাচ্ছে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন

গাছের পাতা যেমন তুলসী, কাঁঠালপাতা ও কলাপাতা থেকে রাসায়নিক পদ্ধতিতে বিশেষ ন্যানো পাউডার তৈরি করেছেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের বিজ্ঞানীরা। এই ন্যানো পাউডার ব্যবহার করে তড়িৎকোষ তৈরি করা হয়েছে, যা ১২ ওয়াটের এলইডি বাতি জ্বালাতে সক্ষম। বর্তমানে এই ন্যানো পাউডারের সক্ষমতা আরও বাড়ানোর গবেষণা চলছে। মূলত গ্রিন সিনথেসিসের মাধ্যমে এই গবেষণার কাজটি করা হচ্ছে।

কোনো কারণে আমাদের দাঁত ক্ষতিগ্রস্ত হলে সাধারণত ধাতব দাঁত প্রতিস্থাপন করা হয়। এর নানা জটিলতাও আছে। কিন্তু ন্যানো পদার্থের তৈরি দাঁত সেই সমস্যা থেকে আপনাকে মুক্তি দিতে পারে। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন জিরকোনিয়াম জাতীয় পদার্থ দিয়ে তৈরি কৃত্রিম দাঁত নিয়ে গবেষণা করছে। এই দাঁত স্বাভাবিক দাঁতের মতোই কার্যক্ষম। আবার শরীরের জন্য ক্ষতিকরও নয়।

গ্যালিয়াম, আর্সেনাইট, ক্যাডমিয়াম, সেলেনাইট জাতীয় পদার্থ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ন্যানো কোয়ান্টাম ডট। এই কণার আকৃতি পাঁচ ন্যানো মিটারেরও কম। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে বিভিন্ন ধরনের কোয়ান্টাম ডট তৈরি করে সৌরকোষ ডিজাইন করা হচ্ছে। এমন কণার আকৃতি অত্যন্ত ক্ষুদ্র হওয়ায় শক্তির অপচয় কম হয়, সৌরকোষের দক্ষতাও বাড়ে। ন্যানো জগতের এমন ঘটনাকে বল ও মার্বেলভর্তি দুটি বাক্সের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। ধরা যাক, একটি বাক্সে তিনটি ফুটবল রাখা হলো। একই আকৃতির আরেকটি বাক্সে দুই হাজার মার্বেল রাখা হলো। এই দুই বাক্সে রাখা বস্তুর পারস্পরিক সংযুক্তি বল দুই ধরনের। বলগুলোর চেয়ে মার্বেলগুলোর সংযুক্তি বল বহুগুণ বেশি। ন্যানোর জগতে বস্তুর ধর্মও তেমনি।

ড. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম খান ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ন্যানো প্রযুক্তি ও ন্যানো পদার্থ নিয়ে গবেষণা করছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স ডিভিশনের প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর মতে, আগামী দিনে বাংলাদেশকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এগিয়ে নিতে হলে এই ন্যানো প্রযুক্তির ওপর গবেষণা জরুরি। কিন্তু এর জন্য দরকার সরকারি–বেসরকারি আরও উদ্যোগ। তা ছাড়া কেন্দ্রীয়ভাবেও একটি আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার প্রতিষ্ঠিত হলে ন্যানো গবেষণায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

গড়ে উঠছে ন্যানো গবেষণা দল, বাড়ছে যৌথতা

বাংলাদেশে বর্তমানে ন্যানো গবেষণায় প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগের পাশাপাশি বিভিন্ন গবেষণা দল গড়ে উঠছে। যেমন বুয়েটের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে গড়ে উঠেছে ন্যানোটেক রিসার্চ গ্রুপ, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে ন্যানোস্কেল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি রিসার্চ গ্রুপ, ম্যাকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে ন্যানো ম্যাটেরিয়ালস রিসার্চ গ্রুপ।

সম্প্রতি বুয়েট ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় ন্যানো প্রযুক্তি ব্যবহার করে জীবাণু প্রতিরোধী কাগজ উদ্ভাবন করা হয়েছে। এই কাগজ খাদ্য বা পণ্যের মোড়ক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। গুরুত্বপূর্ণ নথি ও বই প্রকাশের ক্ষেত্রেও এই কাগজের ব্যবহার হতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন।

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা যৌথভাবে গবেষণা করে কাঁঠালপাতা থেকে টাইটোনিয়াম ন্যানো কণা তৈরি করেছে। এই কণা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াল ও ক্যানসারাস কোষের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এই কণা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে সম্পূর্ণভাবে এবং ক্যানসার কোষকে আংশিক ধ্বংস করতে পারে।

পানি পরিশোধনে ন্যানো ফিল্টারিং নিয়ে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন ও বুয়েটের গ্লাস অ্যান্ড সিরামিক বিভাগ যৌথভাবে গবেষণা করছে। সিলিকা, অ্যালুমিনা, আইরন অক্সাইড জাতীয় পদার্থের ন্যানো ফিল্টারের জালিকার ছিদ্র ২০ ন্যানো মিটারের নিচে। এর ফলে অতিশয় ক্ষুদ্র ব্যাকটেরিয়া থেকে শুরু করে ক্ষতিকর জীবাণু পরিশোধনে এই ফিল্টার বেশ কার্যকর হবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

কম্পিউটারে ম্যাগনেটিক মেমোরি বৃদ্ধির জন্য একাধিক স্তরবিশিষ্ট থিন ফিল্ম তৈরির ওপর গবেষণা করছে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন। এতে সুইসিং কারেন্ট লস কমে যায়। মেমোরি ডিভাইসেরও কার্যক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। জাপানের তোহোকু বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তায় এই গবেষণাটি হচ্ছে।

মূলত ন্যানো গবেষণায় প্রকৌশলের বিভিন্ন শাখা যেমন ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল, মেটেরিয়ালস ও কেমিক্যাল; আণবিক জীববিজ্ঞান ও রসায়নের আন্তযোগাযোগ রয়েছে। তাই ব্যক্তিকেন্দ্রিক গবেষণার জায়গায় সামষ্টিক গবেষণা বাড়ছে। গুরুত্ব পাচ্ছে যৌথ গবেষণা।

লেখক: সাংবাদিক