হাইড্রোজেনের কথা

পর্যায়সারণির প্রথম মৌল হাইড্রোজেন। বিগ ব্যাংয়ের কিছু সময় পরে তৈরি হওয়া প্রথম তিনটি মৌলের মধ্যে হাইড্রোজেন অন্যতম। ষোড়শ শতকের দিকেই এই গ্যাসটি সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন রসায়নবিদেরা। গ্যাসটি বাতাসের সংস্পর্শে জ্বলে ওঠে বলে তাঁরা একে ‘দাহ্য বাতাস’ নামেই চিনতেন। তবে মৌলটি নিয়ে একসময় গলদঘর্ম হতে হয় বিজ্ঞানীদের। ১৮ শতকের মাঝামাঝি ব্রিটিশ রসায়নবিদ হেনরি ক্যাভেন্ডিশ তাঁর পূর্বসূরিদের তুলনায় এই গ্যাসটি সহজে প্রস্তুতের প্রণালি আবিষ্কার করেন। গ্যাসটির ধর্ম সম্পর্কে অন্যদের চেয়ে বেশি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছিলেন তিনি। ১৭৬৬ সালে পাতলা সালফিউরিক অ্যাসিডের সঙ্গে লোহার বিক্রিয়া ঘটিয়ে এই অতি দাহ্য ও হালকা গ্যাসটি সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। পরে সাধারণ বাতাসে গ্যাসটি পুড়িয়ে পানি পেয়েছিলেন ক্যাভেন্ডিশ। প্রায় একই সময় স্কটিশ প্রকৌশলী জেমস ওয়াটও একই ফল পান।

১৭৭৯ সালের দিকে পানির আণবিক গঠন নির্ধারণের সময় দেখা গেল, এতে একটি অক্সিজেনের পরমাণুর সঙ্গে দুটি হাইড্রোজেন পরমাণু যুক্ত থাকে। এর চার বছর পর, রসায়নবিদ ল্যাভয়সিয়ে এবং লাপ্লাস বাতাসে হাইড্রোজেন পুড়িয়ে পানি পান। সে কারণে ল্যাভয়সিয়ের এই গ্যাসটির নাম প্রস্তাব করেন হাইড্রোজেন (Hydrogen)। কারণ গ্রিক শব্দ হাইড্রো (hydro) অর্থ পানি, আর জিনস (genes) অর্থ সৃষ্টিকারী। আর সংকেত প্রস্তাব করেন ঐ। আবার অনেকের মতে, ল্যাটিন শব্দ হাইড্রোজেনিয়াম (Hydrogenium) থেকে এ শব্দটি ধার করেছিলেন তিনি। ল্যাটিনে হাইড্র (Hydr) অর্থ পানি, আর জেনেয়া (gennao) অর্থ সৃষ্টি বা উত্পন্ন হওয়া।