Nothing!

জ্ঞানী বিজ্ঞানীদেরও উত্তর জানা নেই, এমন হাজারটা প্রশ্ন করতে পারে শিশুরা। এমনই এক শিশুর ধারাবাহিক প্রশ্নের প্যাঁচে পড়ে গেলেন বিজ্ঞানমনস্ক এক বাবা।

বাবা, অক্সিজেন আবিষ্কার করেছেন কে?

জোসেফ প্রিস্টলি

কত সালে?

১৭৭৪ সালে।

তার আগে মানুষ শ্বাসপ্রশ্বাস নিত কীভাবে? বাবা ভ্যাবাচেকা খেয়ে বাক্‌রুদ্ধ হয়ে গেলেন যেন! সাহায্যে এগিয়ে এলেন মা—

আরে বাপু, তখন কি এখনকার মতো এত সুযোগ–সুবিধা ছিল? মানুষ তখন কাজকাম করেই সময় পেত না, শ্বাসপ্রশ্বাস নেবে কখন?

তবে বলা বাহুল্য, এখনকার শিশুরা অনেক স্মার্ট আর তাদের হাতে আছে স্মার্টফোন। মা–বাবা কারও উত্তরে সে সন্তুষ্ট নয়। সে গুগল আঙ্কেলের দ্বারস্থ হলো। এবং গুগল আঙ্কেল যা জানাল, তা এ রকম—‘অক্সিজেনের প্রথম ধারণা দেন দা ভিঞ্চি। বাতাসে এমন কিছু একটা আছে, যা আগুন জ্বলতে সাহায্য করে এবং যা না থাকলে মানুষের অস্বস্তি বোধ হয়। তারপরই ১৭৭২ সালে কার্ল হুইলেম নামের এক সুইডিশ কেমিস্ট অক্সিজেনের সন্ধান পান। তিনি চিঠি লিখে তাঁর আবিষ্কারের কথা পাঠিয়ে দেন ফ্রান্সে ল্যাভেশিয়ারের কাছে, যিনি তখন অক্সিজেন নিয়ে ব্যাপক গবেষণা করছিলেন। কিন্তু সেই চিঠি দুই বছরেও পৌঁছায়নি ল্যাভেশিয়ারের কাছে। ফলে ১৭৭৪ সালে ততক্ষণে ব্রিটেনের প্রিস্টলি আবিষ্কার করে ফেললেন অক্সিজেন...’

শিশুটির তখন সুইডিশ কেমিস্টের জন্য বড্ড মায়া হয়। বিষয়টা মাকে জানালে, মা–ও কার্ল হুইলেমের জন্য দুঃখিত হন—‘আহা বেচারা, ডাক বিভাগের কারণে অক্সিজেন আবিষ্কারের ক্রেডিটটা পেলেন না।’

ইউরোপিয়ানদের ডাকে নিশ্চয়ই সমস্যা ছিল। বরং আমাদের ডাকই ভালো ছিল। সেই ১৫০০ সালের দিকেই আমাদের শেরশাহ ঘোড়ার ডাক প্রচলন করেন...! শিশুটি আবার কনফিউজড, বলল—

১৫০০ সালের আগে কি তাহলে ঘোড়া ডাকত না? এ যুগের স্মার্ট মাকে আটকানো কঠিন আছে, বললেন—

আরে বাবা, চিঠিপত্রের বোঝা নিয়ে ঘোড়া তখন ২৪ ঘণ্টা দৌড়ে কূল পায় না, ডাকবে কখন?

আসলে অনেক প্রশ্নই আছে, যার উত্তর খুঁজতে গেলে কমবেশি সবাইকে বিজ্ঞানী না হলেও দার্শনিক হওয়া জরুরি। তেমনি এক মৌলিক প্রশ্ন—‘Why something invented before nothing?’

অর্থাৎ ১ ২ ৩ ৪ ৫ ৬ ৭ ৮ ৯ (something) আবিষ্কারের পর কেন শূন্য (nothing) আবিষ্কার হলো? আগে কেন হলো না?

তবে এক রসিক প্রবরের উত্তরটা এ রকম—‘শূন্য আসলে ওই একই সময়ে আবিষ্কৃত হয়েছিল। কিন্তু আবিষ্কারক লজ্জায় বলতে পারছিলেন না...।’

লজ্জা কেন?

কারণ, তিনি যে কিছুই আবিষ্কার করেননি...nothing!

লেখক: কার্টুনিস্ট, সম্পাদক, উন্মাদ