তিন বিজ্ঞানীর সমুদ্রদর্শন

একজন পদার্থবিজ্ঞানী, একজন জীববিজ্ঞানী এবং একজন রসায়নবিজ্ঞানী একবার গেলেন সমুদ্রদর্শনে। তবে এই তিনজন এতই সিরিয়াস বিজ্ঞানী যে তাঁরা কখনো নিজেদের ল্যাবরেটরি থেকে বের হয়ে প্রকৃতির কাছে যাননি। এই প্রথম তাঁরা যাচ্ছেন সমুদ্রদর্শনে। তবে বিশাল সমুদ্রের সামনে দাঁড়িয়ে তাঁরা তিনজনই যেন হকচকিয়ে গেলেন। সমুদ্র সত্যিই এত বিশাল আর এত উদ্দাম, এত জীবন্ত! পদার্থবিজ্ঞানী আবেগে চিত্কার করে বললেন:

আমাকে এই উদ্দাম সমুদ্রের ঢেউয়ের ফ্লুইড ডিনামিকস সম্পর্কে জানতেই হবে। বলে তিনি ছুটে গেলেন সমুদ্রের ঢেউয়ের কাছে। উদ্দাম ঢেউ টেনে নিয়ে গেল পদার্থবিজ্ঞানীকে। বলা বাহুল্য, পদার্থবিজ্ঞানী সাঁতার জানতেন না। ফলে তিনি ভেসে গেলেন মুহূর্তে গভীর সমুদ্রে।

জীববিজ্ঞানীরও একই অবস্থা, তিনিও হতভম্ব সমুদ্রের বিশালতায়! তিনি খেয়াল করলেন, ঢেউয়ের সঙ্গে সৈকতে আছড়ে পড়ছে নানান আকারের জেলি ফিশ, স্টার ফিশ, প্ল্যাঙ্কটন...। জীববিজ্ঞানীও আবেগে চিত্কার করে উঠলেন:

আমাকে জেলি ফিশ, স্টার ফিশ, প্ল্যাঙ্কটন... এগুলো সম্পর্কে জানতে হবে। বলে ছুটে গেলেন সমুদ্রের উদ্দাম ঢেউয়ের কাছে। এবং তাঁকেও সমুদ্রের জোয়ারের উদ্দাম ঢেউ ভাসিয়ে নিয়ে গেল গভীর সমুদ্রে। বলা বাহুল্য, জীববিজ্ঞানীও কিন্তু সাঁতার জানতেন না।

রসায়নবিজ্ঞানী অবশ্য অন্য দুজন বিজ্ঞানীর মতো অত উত্তেজিত হলেন না। তিনি সাঁতার জানলেও তাঁদের মতো আবেগে সমুদ্রে ঝাঁপও দিলেন না। তিনি পকেট থেকে নোটবুক বের করে নোট করলেন, ‘সমুদ্রের লোনাপানিতে পদার্থবিজ্ঞানী ও জীববিজ্ঞানী খুব সহজেই দ্রবীভূত হয়।’

রসায়নবিজ্ঞানীদের মনে হয় রসকষ একটু কমই হয়ে থাকে, নইলে তাঁদের নিয়ে এ রকম গল্প তৈরি হবে কেন? না ওপরের গল্পটার কথা বলছি না, নিচেরটা খেয়াল করুন।

এক তরুণীর ভয়াবহ কোনো রোগ হয়েছে। ডাক্তার দেখেটেখে বললেন, ‘আপনি আর মাত্র ছয় মাস বাঁচবেন।’ তরুণী হাহাকার করে উঠল:

- কোনো উপায়ই নেই বাঁচার?

- এক কাজ করতে পারেন।

- কী কাজ?

- আপনি কি বিবাহিত?

- না

- তাহলে কোনো রসায়নবিজ্ঞানীকে বিয়ে করে মেক্সিকোর ‘লস ক্যাবস’ সিটিতে চলে যান।

- তাহলে আমি বেঁচে উঠব?

- না, তখন ছয় মাস সময়টাকে অনেক দীর্ঘ মনে হবে।

লেখক: কার্টুনিস্ট