প্রতিশোধ

পৃথিবীতে

রিনা...না...না...। চমকে উঠল রিনা। পেছনে তাকাল সে। কেউ কি ডাকল? নাহ্! হয়তো মনের ভুল। আবার সেই ডাক ‘রিনা... না...না...। ‘ঝট করে পেছনে যেন কিছু একটা নড়ে উঠল। রিনার একটু অস্বস্তি লাগল। এই বোটানিক্যাল গার্ডেনে একা কাজ করছে সে। রিনা বোটানির ছাত্রী। প্রফেসর আফ্রিকা থেকে নতুন একটা গাছ এনেছেন। সেই গাছের কিছু নমুনা পরীক্ষা করতে হবে। রিনা গাছটা খুঁজছিল, তখনই কে যেন তার নাম ধরে ডাকতে লাগল। পেছন ফিরল রিনা। নাহ্, কেউ নেই। হঠাৎ চোখে পড়ল, সব গাছ স্থির থাকলেও শুধু একটি গাছ সামনে-পেছনে দোল খাচ্ছে। মনে হচ্ছে গাছটি যেন হাতছানি দিচ্ছে রিনাকে। রিনা মন্ত্রমুগ্ধের মতো এগোতে লাগল। মনে হচ্ছে নিজের পায়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই রিনার। গাছটাকে ছুঁতেই গাছটার কিছু লতা রিনাকে পেঁচিয়ে ধরে ওপরে তুলে নিল। রিনা চিত্কার করার সময় পর্যন্ত পেল না।

পরদিন। অনিলা বোটানিক্যাল গার্ডেনে এসেছে। হঠাৎ মনে হলো তার পায়ে কিছু একটা জড়িয়ে যাচ্ছে। নিচে তাকাতেই দেখল কোনো গাছের শিকড়। অনিলা শিকড়টাকে ছুটিয়ে আনার জন্য যে-ই টানল, অমনি শিকড় ভেঙে ভেতর থেকে নীল রঙের গ্যাস বেরিয়ে পড়ে। অজ্ঞান হয়ে যায় অনিলা। অনিলার খোঁজ পাওয়া যায়নি।

রাত প্রায় সাড়ে ১২টা। নিজের ডেস্কে বসে কাজ করছিল রাকিব। হঠাৎ লাইটটা জ্বলতে-নিভতে শুরু করল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই নীল ধোঁয়ায় ভরে যায় ঘরটা। রাকিব খেয়াল করে কিছু একটা এগিয়ে আসছে তার দিকে, তবে সেটা যে মানুষ নয়, সেটা বোঝার আগেই জ্ঞান হারায় রাকিব।

প্রফেসর হোসেন কয়েক দিন ধরে বেশ চিন্তিত। তাঁর গবেষণার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজ হারিয়ে গেছে। সেই গবেষণার বিষয় মানববসতি-সম্পর্কিত। সেই কাগজ শত্রুর হাতে পড়লে মানববসতি হুমকির মুখে পড়বে। সবচেয়ে বড় বিষয় তার বোটানির নতুন গাছটা নেই। তার জায়গায় বিশাল এক গর্ত। আশ্চর্য গাছটা কি চুরি হলো! তাও কি সম্ভব! তবে গাছটা কি নিজে হেঁটে গিয়েছে!

অন্য গ্রহে

সম্রাট আম্রবৃক্ষ গুরুগম্ভীর স্বরে বললেন, ‘অবশেষে পৃথিবী জয়ের পথে এগিয়েছি আমরা। এতকাল যে অত্যাচার আমরা সহ্য করেছি, আজ সেই মানুষদের ওপর আমরা রাজত্ব করব। এর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করছি। বৃক্ষের জয় হোক।’

প্রবল হর্ষধ্বনিতে ফেটে পড়ল সভা।

লেখক: শিক্ষার্থী, নবম শ্রেণি, ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, রংপুর