আত্মত্যাগ

২৮১৯ সাল।

ট্রাপিস্ট বি গ্রহে মহাকাশ ও বহির্বিশ্ব স্টেশনে দূর আকাশ পর্যবেক্ষণ করছিল এরিনা। তার সঙ্গে আছে পৃথিবী প্রতিনিধি ম্যাক। ২৬০০ সালে এখানে প্রথম এসেছিল মানুষ। তারই ধারাবাহিকতায় ম্যাক আজ এখানে।

যখন এরিনা দূর আকাশ দেখছিল, তখনই চোখে পড়ল কোনো গ্রহের স্পেসশিপ। এ গ্রহের দিকে ধেয়ে আসছে। এরিনা ছুটল উচ্চপদস্থ বিজ্ঞানীদের উদ্দেশে।

ম্যাক ভালো করে দেখাল স্পেসশিপটা। চিনতেও পারল, ট্রাপিস্ট ডি গ্রহের এলিয়েনদের স্পেসশিপ। ওদের সঙ্গে মানুষের বহুদিনের বিরোধ। অন্য সব গ্রহ ট্রাপিস্ট বিকে শ্রেষ্ঠ গ্রহ হিসেবে মেনে নিয়েছে। কিন্তু ট্রাপিস্ট ডি মানেনি।

ম্যাক এরিনার সঙ্গে যোগাযোগ করল, ‘এরিনা, এটা ট্রাপিস্ট ডি-এর স্পেসশিপ।’

‘হ্যাঁ, আমরা দেখেছি। কিন্তু এখানে একটা নয়, অনেক স্পেসশিপ।’

‘তোমরা ওদের আটকানোর চেষ্টা করো। নিশ্চয় এরা কোনো খারাপ মতলবে এখানে এসেছে।’

‘হ্যাঁ, তা-ই করছি।’

এই বলে সে লাইন কেটে দিল।

কিছুক্ষণ পর এরিনা ম্যাকের সঙ্গে যোগাযোগ করল: ‘ম্যাক, শুনতে পারছ?’

‘হ্যাঁ, এরিনা পারছি।’ ‘তোমরা ওদের আটকাতে পেরেছ?’

‘না, ওরা আমাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা ভেদ করে এ গ্রহে ঢুকে পড়েছে। আমরা এখন অনিরাপদ। তুমি জলদি এখানে এসো।’

‘ওকে’, বলে ম্যাক লাইন কেটে রওনা দিল।

‘ওদের আটকানোর কি কোনো উপায় নেই?’

‘আছে, তবে তা কঠিন কাজ।’

‘কী?’

‘আমাদের কাছে একটি অস্ত্র আছে, ওটা ওদের ওপর ছাড়লে ওরা শেষ হয়ে যাবে। তবে সেটা ওদের কাছ থেকে নিক্ষেপ করতে হবে। যে নিক্ষেপ করবে এতে সে নিহত হবে।

‘অস্ত্রটা কোথায়?’ উত্তেজিত কণ্ঠে বলল একজন।

‘এই স্টেশনে পুব দিকে। যন্ত্রটা খুবই ছোট, কিন্তু শক্তিশালী।’

ম্যাক লুকিয়ে ট্রাপিস্ট বি গ্রহের এলিয়েনদের মিটিং লুকিয়ে শুনছিল। সব শুনেটুনে সরে পড়ল।

ট্রাপিস্ট ডি গ্রহের এলিয়েনরা যেখানে ল্যান্ড করেছে, সেখানে এরিনা ও অন্যরা একটি বিস্ফোরণ দেখতে পেল। সবাই তাতে অবাক। তারা তাদের ড্রোনের তোলা ছবিতে ও ভিডিওতে দেখতে পেল ম্যাক অস্ত্র নিয়ে ওদের ওপর নিক্ষেপ করল এবং তাদের শেষ করে দিল। এরিনা এ দেখে তার চোখে পানি ধরে রাখতে পারল না।

ট্রাপিস্ট বি গ্রহের এলিয়েনদের জন্য ম্যাকের আত্মত্যাগ পৃথিবীবাসীদের জন্য গৌরব। এই আত্মত্যাগ আজ পৃথিবী আর ট্রাপিস্ট বি গ্রহের মানুষের মধ্যে বন্ধুত্ব তৈরি করেছে।