লোহিত রক্তকণিকার আত্মকথা

হ্যালো! আমি লোহিত রক্তকণিকা। আজ বলব আমার জীবনচক্রিকা কেমন। আমি দেহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ  অনেক কাজ করি। আমি সাধারণত করি শিরা দিয়ে চলাচল করি। শিরাগুলো খুবই নমনীয়। তাদের ভেতর দিয়ে যেতে মজা লাগে।  আমি হৃৎপিণ্ডের ভেতর উচ্চতর শিরা দিয়ে ডান অলিন্দে চলে যাই। এসময় খুলে যায় পর্দাগুলো। তখন সহজেই ঢুকতে পারি নিলয়ে (এটি হৃদপেশি পাম্প করে)। এরপর, আমি হৃদযন্ত্র থেকে একটা ধাক্কার মাধ্যমে ঢুকি ফুসফুসে, আরেকটি শিরার মাধ্যমে। হৃদযন্ত্র থেকে আমার বের হবার রাস্তাটির নাম হলো পালমোনারি বা ফুসফুসীয় ধমনি। ফুসফুস ভ্রমণের আমার সাথে যোগ দেয় কার্বন ডাই-অক্সাইড। তখন আমি হয়ে যাই কার্বন ডাই-অক্সাইডেসমৃদ্ধ রক্ত।

এরপর অক্সিজেনের সংস্পর্শে আসি। তখন আমি পরিণত হই অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্তে।

এরপর ধমনির ভেতর দিয়ে ফেরত আসি হৃদযন্ত্রে। এবার প্রবেশ করি বাম নিলয়ে (এটি হৃদপেশি পাম্প করে)। এরপর মহাধমনী থেকে একটি ধমনী দিয়ে বের হই। তারপর চলে যাই দেহের নানা অঞ্চলে। ধমনি হলো পুরু রক্তনালিকা। এখানে অতি উচ্চচাপ বিদ্যমান। তাই এখান দিয়ে আমি অতিদ্রুত ভ্রমণ শেষ করতে পারি।

আমি অক্সিজেন আর পুষ্টি পৌঁছে দিই গোটা দেহে। তখন শরীরের বিভিন্ন অঞ্চলের বর্জ্য পদার্থ এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড আমার সাথে যোগ দেয়। কিন্তু আমি বর্জ্য পদার্থকে বের করে দিই শরীর থেকে। আর এই কাজ করার জন্য আমি কৌশিক নালিকা দিয়ে চলাফেরা করি।

আমরা প্রায় ৫০ লাখ সদস্যের পরিবার। পুরো দেহের প্রতিটি কোণায় এরা ছড়িয়ে আছে। আমার জীবনকাল প্রায় মোটে ১২০ দিন! হিমোগ্লোবিন আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু, ওর পছন্দের রং লাল।

যদিও আমি দেহের অতি ক্ষুদ্র একটি অংশ, তবুও দেহের সবাই আমাকে সাদরে গ্রহণ করে, ভালোবাসে। আর এ বিষয়টিই সবচেয়ে মজার!

লেখক: শিক্ষার্থী, মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল এন্ড কলেজ