ন্যাচারাল কিলার সেল

আমাদের শরীরে তিন ধরনের রক্তকণিকা থাকে। লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা ও অণুচক্রিকা। লোহিত রক্তকণিকা অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইড পরিবহন করে আর অণুচক্রিকা রক্ত জমাট বাঁধায় অংশ নেয়। আর শ্বেত রক্তকণিকার কাজ অনেক। প্রধান কাজ শরীরেই ইমিউনিটি দেওয়া। ইমিউনিটি মানে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা। আমাদের সবার শরীরে ইমিউনিটি থাকে। এটি না থাকলে রোগজীবাণুর আক্রমণে আমরা ধ্বংস হয়ে যেতাম।

শ্বেত রক্তকণিকা আবার পাঁচ ধরনের। নিউট্রোফিল, ইয়োসিনোফিল, বেসোফিল, লিম্ফোসাইট ও মনোসাইট। লিম্ফোসাইটও আছে দুই ধরনের— টি লিম্ফোসাইট ও বি লিম্ফোসাইট। এগুলো লিম্ফয়েড সেলের মধ্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে এ দুটি ছাড়াও ন্যাচারাল কিলার বলে আরেক ধরনের সেল বা কোষ আছে। তবে বি ও টি লিম্ফোসাইটের সঙ্গে এই কোষের গঠনগত ও কাজের পার্থক্য আছে।

ন্যাচারাল কিলার সেলের ভেতর দানা থাকে। অন্য কোষকে ধ্বংস করার ক্ষমতাও আছে এর। টিউমার সেল ও ভাইরাস আক্রান্ত কোষকে ন্যাচারাল কিলার সেল ধ্বংস করতে পারে। কীভাবে ন্যাচারাল কিলার সেল ক্যানসার ও ভাইরাস আক্রান্ত সেলকে ধ্বংস করে, বিজ্ঞানীরা অবশ্য সব জানতে পারেননি। এ পর্যন্ত জানা গেছে যে ন্যাচারাল কিলার সেল যখন টিউমার সেল দেখে, তখন কাছাকাছি চলে আসে। তারপর ক্যানসার সেলে ছিদ্র করে তাকে ধ্বংস করে।

উত্তেজিত হলে ন্যাচারাল কিলার সেল বিভিন্ন সাইটোকাইন তৈরি করে। এসব সাইটোকাইন বিভিন্ন ক্ষতিকর কোষের মৃত্যু ঘটায়। ন্যাচারাল কিলার সেল সম্পর্কে আজও সবকিছু জানা সম্ভব হয়নি। তবে গবেষণা চলছে। আশা করা যায়, অদূর ভবিষ্যতে অনেক কিছু জানা সম্ভব হবে।

লেখক: চিকিৎসক, মেডিসিন বিভাগ, রাজশাহী মেডিকেল ও কলেজ হাসপাতাল