বেশির ভাগ মানুষ নিজের গলার স্বর এমনিতে পছন্দ করেন। সরাসরি শুনলে ভালো লাগে। ঝামেলা বাঁধে রেকর্ড করে শুনলে। অনেকের কাছে তখন আর নিজের কন্ঠ ভালো লাগে না। কণ্ঠ তো একই, তাহলে এমন হয় কেন?
এরকম হওয়ার পেছনে বৈজ্ঞানিক কারণ আছে। কারণ আসলে দুটো। প্রথমত, রেকর্ড করা কথা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তীক্ষ্ণ শোনায়। কারণ, কথা বলার সময় আমাদের গলার স্বর, অর্থাৎ শব্দ তরঙ্গের কিছু অংশ মাথার হাড়ের মধ্য দিয়ে এসে কানে পৌঁছায়। ফলে শব্দ কিছুটা গভীর বা ভারী শোনায়। আর রেকর্ড করা শব্দের ক্ষেত্রে তরঙ্গে পুরোটাই সরাসরি কানের পর্দায় এসে আঘাত করে। তীক্ষ্ণ লাগে। এ জন্য কিছুটা অপরিচিত শোনায় নিজের গলার স্বর। অস্বস্তিটা সেখান থেকেই আসে।
দ্বিতীয় কারণটা মনস্তাত্ত্বিক, তবে ওপরের কারণের সঙ্গে সম্পর্কিত। ব্রিটিশ স্নায়ুবিজ্ঞানী ক্রিস্টিয়ান জ্যারেটের মতে, সাধারণত নিজেদের গলার স্বর আর অন্যদের গলার স্বর আমরা আলাদাভাবে মূল্যায়ন করি। রেকর্ডিং শোনার সময় এ জায়গায় পরিবর্তন আসে। এ সময় আমরা অন্যদের মতো করেই মূল্যায়ন করি নিজের গলার স্বরকে। তখন নিজের ব্যক্তিস্বত্তাকে যেভাবে ভেবে অভ্যস্ত, তার চেয়ে অনেকটা ব্যতিক্রম মনে হয়। ফলে অস্বস্তি বাড়ে।
পুরোটাই অনুভূতি বা মনের বিষয়। নিজের গলার স্বর নিজের কাছে শুনতে কেমন কেমন লাগলেও অন্যদের কাছে অত ভিন্ন লাগে না। চাইলে নিজেই বিষয়টা পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। এবার যেহেতু কারণটা জানেন, তাই চাইলে হয়তো অস্বস্তিটাও কমাতে পারবেন। নিজেই না হয় চেষ্টা করে দেখুন।