অতিন্দ্রীয় ক্ষমতার প্রাণীরা

স্পর্শ, বর্ণ, গন্ধ, স্বাদ আর শ্রবণ—এই পাঁচ অনুভূতিশক্তি নিয়ে আমাদের ইন্দ্রিয়। বেঁচে থাকার জন্য এই পাঁচ শক্তিকে আমরা ব্যবহার করি। ভাবুন তো? এদের যেকোনো একটি না থাকলে আমাদের কী হতো? টিকে থাকাটাই অসম্ভব হয়ে যেত। প্রাণিকুলের অন্য প্রাণীদের ক্ষেত্রেও তা–ই। তবে বিশেষ কিছু প্রাণীকে বিশেষ কিছু শক্তি দেওয়া হয়েছে। কল্পকথার সুপারম্যান বাস্তবে না থাকলেও সুপার অ্যানিমেল কিন্তু আমাদের আশপাশেই আছে। তারা তাদের সুপার সেন্স নিয়ে বেঁচে আছে বছরের পর বছর। সেই সুপার সেন্সগুলো আসলে কী কী এবং সেগুলো তারা কী কাজে ব্যবহার করে, চলুন তা জেনে আসি।
খাবার খুঁজতে তীব্র ঘ্রাণশক্তি কাজে লাগায় মেরু ভালুকেরা।

ঘ্রাণশক্তি

মেরু ভালুক ১৬০ কিলোমিটার দূরত্বে থাকা সঙ্গীদের অবস্থানও বুঝতে পারে শুধু তাদের গায়ের গন্ধ শুঁকে! শুধু সঙ্গী খুঁজতে নয়, খাবার খুঁজতে বা শত্রুদের হাত থেকে বাঁচতেও এই তীব্র ঘ্রাণশক্তি কাজে লাগায় মেরু ভালুকেরা। তাদের এই সুপার শক্তির বেশ কিছু কারণ আছে। প্রথম দৃশ্যমান কারণ, তাদের বড় সাইজের নাক। যত বড় নাক, তত বেশি জায়গা আর বেশি জায়গায় বেশি পরিমাণ রিসেপ্টর থাকে। অতিরিক্ত রিসেপ্টর অতিরিক্ত ঘ্রাণের সংকেত গ্রহণ করতে পারে। তাদের নাক শুধু সাইজেই বড় নয়, নাকে থাকে বিশেষ ধরনের মাংসপেশি। এই বিশেষ মাংসপেশি নানা অ্যাঙ্গেলে ঘুরিয়ে নানা দিক থেকে গন্ধ শুঁকতে পারে। নাকের সঙ্গে মস্তিষ্কের সাইজও বেশ বড়। তবে পুরো মস্তিষ্কের আকার কিন্তু বড় নয়, বরং মানুষের তুলনায় আকারে বেশ ছোট। কিন্তু ঘ্রাণ প্রক্রিয়া করার অংশটুকু মানে অলফ্যাক্টরি বাল্বের আকার প্রায় পাঁচ গুণ বড়!

এ রকম পোলার বিয়ারের সঙ্গে আমাদের পরিচিতি কেবল টেডি বিয়ারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আসল পোলার বিয়ারকে কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য বেশির ভাগেরই হয়নি। এমনকি মেরু অঞ্চলেও এই ভালুক বিলুপ্তির মুখে আছে। কিন্তু এমন ঘ্রাণশক্তি শুধু দুর্লভ পোলার বিয়ারে আছে, এমন নয়। আমাদের অতিপরিচিত ইঁদুরের ঘ্রাণশক্তিও বেশ প্রবল। ঘ্রাণ নেওয়ার জন্য দুই ধরনের সিস্টেম আছে ইঁদুরের শরীরে। এদের মধ্যে একটি সবার মতো সাধারণ সিস্টেম। নিশ্বাসের সঙ্গে বাতাস নাকের পর্দায় গিয়ে লাগে। পর্দার রিসেপ্টর সংকেত গ্রহণ করে। তবে তাদের রিসেপ্টরগুলোর জন্য দায়ী হাজারের বেশি জিন, যেখানে মানুষের ক্ষেত্রে এই ধরনের রিসেপ্টরের জন্য মাত্র ৩৫০টির মতো জিন থাকে। ঘ্রাণ নেওয়ার অন্য আরেকটা পদ্ধতির মধ্যে আছে ভোমেরোন্যাসাল অঙ্গের মাধ্যমে ফেরোমোন চিহ্নিত করা। এই বিশেষ অঙ্গটি ইঁদুরের নাকের মধ্যেই থাকে। সেখান থেকে মস্তিষ্কে সংকেত পৌঁছে যায়। ফেরোমোন একধরনের রাসায়নিক পদার্থ, যা প্রাণীদের গা থেকে নিঃসৃত হয় এবং বিশেষ ধরনের গন্ধ তৈরি করে। ইঁদুর এই ফেরোমোন চিহ্নিত করে সঙ্গী নির্বাচন করে।

চিংড়ির চোখে আছে ১২ থেকে ১৬ ধরনের লক্ষাধিক ফটোরিসেপ্টর।

দৃষ্টি

পতঙ্গ প্রজাতির অন্তর্গত ভারতীয় আর প্রশান্ত মহাসাগরের চিংড়ির আছে বিশেষ দৃষ্টিশক্তি। এর বড় বড় দুই চোখের আছে সুপার পাওয়ার! দুটো চোখ স্বাধীনভাবে নাড়াতে পারে তারা। অর্থাৎ একটি চোখ দিয়ে ডান দিকে আড়চোখে তাকালে আরেকটি চোখ দিয়ে বাঁ দিকে তাকাতে পারে। আপনি আপনার মাথা স্থির রেখে নিজের দুই চোখের আইবলগুলো একই সঙ্গে দুটি ভিন্ন দিকে নাড়াতে চেষ্টা করুন। অবশ্যই আপনি ব্যর্থ হবেন। কিন্তু চিংড়ি এ কাজ বেশ সফলতার সঙ্গেই করতে পারে। এদের আছে ট্রাইনোকুলার দৃষ্টিশক্তি। মানে, প্রতিটা চোখ একই সঙ্গে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন জিনিসকে চিহ্নিত করতে পারে। চিংড়ির চোখে আছে ১২ থেকে ১৬ ধরনের লক্ষাধিক ফটোরিসেপ্টর। মানুষের মাত্র ৩ ধরনের ফটোরিসেপ্টর থাকে। চিংড়ির বিভিন্ন ধরনের রিসেপ্টর ভিন্ন ভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো চিনতে পারে।

গিরগিটির চোখ দুটোও সুপার আই। একটা উন্নত মানের ক্যামেরার মতোই কাজ করে গিরগিটির চোখ। আধুনিক যুগে ৩৬০ ডিগ্রি ছবির সঙ্গে আমরা পরিচিত। অথচ গিরগিটির মতো প্রাণী তার চোখ দিয়ে জন্ম থেকেই ৩৬০ ডিগ্রি কোণে দেখতে পায়। এর মানে, একই সঙ্গে ডান-বাম, ওপর-নিচ, সামনে-পেছনে সবটা দেখতে পায়! আবার ক্যামেরার মতো ‘জুমইন’ করার ক্ষমতাও তার চোখের আছে। আমরা যেমন ক্যামেরা স্থির রেখে দূরের কোনো জিনিসকে জুম অপশন ব্যবহার করে কাছে এনে দেখতে পারি, গিরগিটিও তেমনি তার চোখ দিয়ে দূরের বস্তুকে বড় আর স্পষ্ট করে দেখতে পারে। শিকার থেকে যথেষ্ট দূরে থেকেও সে শিকারকে স্পষ্টভাবে দেখতে পায়। আর তাই শিকারি হিসেবে গিরগিটির জুড়ি মেলা ভার। গিরগিটির এই সুপার আই বড় আকৃতির চোখের পাতা দিয়ে ঢাকা থাকে। পাতার ওপর আবার শক্ত আঁশ থাকে চোখের সুরক্ষার জন্য। এ জন্যই গিরগিটির চোখ দেখতে ভয়ংকর লাগে।

স্বাদ

খাবার বাছাইয়ে অনেক প্রাণী বেশ খুঁতখুঁতে। মজার খাবার ছাড়া তাদের চলেই না। জিবের টেস্ট বাড স্বাদ বোঝার জন্য দায়ী। ভোজনরসিক প্রাণীদের এই টেস্ট বাডের সংখ্যা একটু বেশি হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু দেখা গেছে, নিতান্ত সাদামাটা খাবার খাওয়া প্রাণীদের মধ্যেও কারও কারও টেস্ট বাডের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেশি। মানুষের জিবে টেস্ট বাড থাকে ৯ থেকে ১০ হাজারের কাছাকাছি।

মজার ব্যাপার হলো, টেস্ট বাড যে কেবল প্রাণীদের জিবেই থাকে তা নয়। শিং, মাগুর–জাতীয় ক্যাটফিশের সারা শরীরে টেস্ট বাড থাকে। এর মানে, তারা কি সারা শরীর দিয়েই খাবারের স্বাদ গ্রহণ করতে পারে? ব্যাপারটা অনেকটা সে রকমই। অস্বচ্ছ, কাদাযুক্ত বা গভীর পানিতে থাকার কারণে ক্যাটফিশ চোখে খুব একটা দেখতে পায় না। খাবার বাছাইয়ে তাদের খুবই সমস্যা হওয়ার কথা। কিন্তু এই সমস্যার সমাধান করে দিয়েছে শরীরজুড়ে থাকা প্রায় আড়াই লাখ টেস্ট বাড! আশপাশে কোন খাবার উপস্থিত আছে, পানির পরিবেশ থেকে টেস্ট বাডের মাধ্যমে ক্যাটফিশ তা ধারণা করতে পারে। ক্যাটফিশের সামনে যে লম্বা লম্বা শিংয়ের মতো থাকে, সেখানে টেস্ট বাডের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। শিংগুলোকে বার্বেল বলে। বার্বেল এতটাই সংবেদনশীল যে পানিতে থাকা নির্দিষ্ট ধরনের প্রোটিন তা যত অল্প পরিমাণেই থাকুক না কেন (এমনকি প্রতি লিটারে মাত্র ১০০ মাইক্রোগ্রাম থাকলেও), সেটা চিনতে পারে। বার্বেল শুধু স্বাদ গ্রহণের জন্যই কাজে লাগে না, বরং পথ চলতে ক্যাটফিশকে দিকনির্দেশনা দেয় এই বার্বেল।

কানে বেশি শোনা প্রাণীর মধ্যে প্যাঁচা অন্যতম।

শ্রবণ

কানে বেশি শোনা প্রাণীর মধ্যে প্যাঁচা অন্যতম। প্রবল শ্রবণশক্তির কারণে নিশাচর এ প্রাণীর রাতের ঘুটঘুটে অন্ধকারেও খাবার খুঁজে পেতে সমস্যা হয় না। প্যাঁচার কানের বিশেষ গঠন তাকে ভালোভাবে শুনতে সাহায্য করে। কানের ছিদ্রের পাশের পালকগুলো এমনভাবে একটার পর একটা সাজানো থাকে যে বিভিন্ন কোণ থেকে শব্দ প্যাঁচার কানে পৌঁছায়। এতে প্যাঁচা তার শিকারের অবস্থান খুব ভালোভাবে বুঝতে পারে। এমনকি মনে মনে শব্দ দিয়ে সে একটা কাল্পনিক মানচিত্র তৈরি করে ফেলে, যাতে শিকারের কাছাকাছি সে নির্বিঘ্নে পৌঁছে যেতে পারে। প্যাঁচার প্রিয় খাদ্য ইঁদুর–জাতীয় প্রাণী। প্যাঁচা এতটাই সূক্ষ্ম শব্দ শুনতে পারে যে কখনো কখনো ইঁদুরের হৃৎকম্পনও শুনতে পারে। প্যাঁচা কিন্তু শব্দদূষণ একেবারেই পছন্দ করে না। নিজে ডানা ঝাপটে চলার সময় একেবারে শব্দ করে না বললেই চলে। তার এই নিঃশব্দ ওড়ার পেছনে রয়েছে বিশেষায়িত ডানার পালক। নিজে চুপচাপ থাকে বলেই আশপাশের শব্দগুলো একটু বেশি ভালোভাবে শুনতে পায় প্যাঁচা। শিকারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার আগ পর্যন্ত শব্দহীনভাবে উড়ে শিকারের কাছাকাছি চলে যায়।

বেশি শ্রবণশক্তির সঙ্গে কিন্তু বড় কানের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা যদি সবচেয়ে বড় কানওয়ালা প্রাণীর কথা চিন্তা করি, তাহলে হাতির কথাই প্রথমে মাথায় আসে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্তন্যপায়ী প্রাণীর কান সবচেয়ে বড় হবে, এটাই স্বাভাবিক। এত বড় কান যার, সে নিশ্চয়ই সবার থেকে বেশি শুনতে পায়! এমন ধারণা আসলে ভুল। হ্যাঁ, হাতি বেশি শুনতে পায়, তবে উচ্চ কম্পাঙ্কের শব্দ নয়, নিম্ন কম্পাঙ্কের শব্দ, যা আমরা শুনতে পাই না। আশ্চর্যের বিষয়, এই অতিরিক্ত শোনার পেছনে তার বিরাট দুটি কান কোনো কাজেই আসে না। সে শোনে পা দিয়ে! প্রকৃতির পরিবর্তনের জন্য মাটির নিচে ইনফ্রাসাউন্ড তৈরি হয়, যার কম্পাঙ্ক থাকে মাত্র ১ থেকে ২০ হার্টজ। হাতির পা এই ইনফ্রাসাউন্ড এবং আরও অন্য কম্পন অনুভব করতে পারে। পা দিয়ে এই কম্পন অনুভবের মাধ্যমে অনেক দূরে থাকা হাতির পালের সঙ্গে তারা যোগাযোগ রক্ষা করে চলে। হাতিরা প্রায়ই কোনো কারণ ছাড়া বিশাল পাল নিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলে যায়। প্রথমে এর কারণ অজানা ছিল। এখন জানা গেছে, পায়ের মাধ্যমে কম্পনের তারতাম্য দেখে হাতিরা বুঝতে পারে, দূরবর্তী কোনো এলাকায় হয়তো বৃষ্টি হচ্ছে, যা তাদের এলাকাতেও আঘাত হানতে পারে, তাই নিরাপদ দূরত্বে দলেবলে পাড়ি জমায় তারা। এর প্রত্যক্ষ প্রমাণ মেলে ২০০৪ সালের ভারত মহাসাগরে সুনামির সময়। শ্রীলঙ্কা আর থাইল্যান্ডের হাতিরা সুনামির আগাম বার্তা পেয়ে নিরাপদ স্থানে সরে গিয়েছিল। তাই তাদের বড় কোনো ক্ষতি হয়নি।

কুমির সবচেয়ে সংবেদনশীল প্রাণীদের একটি!

স্পর্শ

স্পর্শের দিক থেকে সবচেয়ে সংবেদনশীল কে? শুনলে অবাক হবেন, কুমির হলো সবচেয়ে সংবেদনশীল প্রাণীদের একটি! মোটা চামড়া আর তীক্ষ্ম দাঁতের জন্য কুমিরকে অতি ভয়ংকর মনে হলেও আর যা–ই হোক, কোনো সেনসিটিভ প্রাণী মনে হবে না। কিন্তু বাস্তবে এদের স্পর্শজ্ঞান খুবই ভালো। মানুষের হাতের আঙুলের ডগাকে বলা হয় মানুষের জন্য সবচেয়ে সংবেদনশীল স্থান। মানে, আঙুলের স্পর্শে আসলে আমরা মুহূর্তেই বস্তুটি সম্পর্কে ধারণা করতে পারব, যেমন বস্তুটি কী, আকার–আকৃতি কেমন ইত্যাদি। কিন্তু মানুষের আঙুলের থেকেও বেশি সংবেদনশীল কালো করে গোল মতন একটা অংশ থাকে কুমিরের নাকের ডগায়। সারা শরীরেও এদের পাওয়া যায়। পানির মধ্যে চাপ আর কম্পন অনুভবের জন্য খুবই সংবেদনশীল এই অংশ। শিকার ধরার কাজে বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

এ ছাড়া আরও কিছু অদ্ভুত সুপার পাওয়ার আছে অনেক প্রাণীর। পৃথিবীর অনেক ধরনের প্রাণীই অতিবেগুনি রশ্মি দেখতে পায়, যা আমরা দেখতে পাই না। নানা ধরনের মাছ, পোকা, পাখি—এমনকি স্তন্যপায়ী ক্যারিবু অতিবেগুনি রশ্মি দেখতে পায়। সাপ বা বাদুরের মতো প্রাণীরা ইনফ্রারেড রশ্মি দেখতে পায়। সহজ ভাষায়, অন্য প্রাণী থেকে তাপ নির্গত হলে তারা তা দেখতে পায়। এভাবে তারা উষ্ণ রক্তবিশিষ্ট প্রাণীদের দেহ থেকে বের হওয়া তাপ বুঝতে পেরে তাদের শিকার করে। কোনো কোনো প্রাণীর দিকজ্ঞান দেখলে মনে হবে তাদের শরীরে হয়তো কম্পাস বসানো আছে! দূরদূরান্ত থেকে পথ চিনে আসা অতিথি পাখি বা চিঠিবহনকারী কবুতর অথবা গভীর সমুদ্রের তিমির পথচলা দেখলে এমনটাই মনে হয়। আসলে এসব প্রাণী তাদের সুপার ম্যাগনেটিক সেন্স ব্যবহার করে পথ চলে।

সত্যিই কী অদ্ভুত প্রাণিজগৎ! পৃথিবীর সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণীদের যেসব অনুভূতি নেই, কত তুচ্ছ প্রাণীর মধ্যেও তাদের দেখা মেলে! অতিন্দ্রীয় অনুভূতি ছাড়া এসব প্রাণীর বৈরী পৃথিবীতে লড়াই করে টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে যেত।

লেখক: পিএইচডি গবেষক, দ্য গ্রাজুয়েট ইউনিভার্সিটি ফর অ্যাডভান্স স্টাডিজ, জাপান

সূত্র: বিবিসি ওয়াইল্ড ম্যাগাজিন