বর্ণান্ধকে ইংরেজিতে বলে কালার ব্লাইন্ড। কেউ যদি এক বা একাধিক রং দেখতে না পায়, তাহলে তাকে বর্ণান্ধ বলে। অর্থাৎ এরা বর্ণ বিষয়ে অন্ধ। লাল, হলুদ, নীল, সবুজ প্রভৃতি রঙের মধ্যে কোনো পার্থক্য করতে পারে না, কোনো পার্থক্য বুঝতে পারে না। তাদের দৃষ্টিতে সব বস্তুই কালচে বলে মনে হয়। পৃথিবীর নামকরা অনেক ব্যক্তি ছিলেন বর্ণান্ধ বা আংশিক বর্ণান্ধ। শোনা যায়, আমাদের কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন আংশিক বর্ণান্ধ। গবেষণায় দেখা গেছে, মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা বেশি বর্ণান্ধ হয়।
মানুষ ছাড়া প্রাণিজগতের অধিকাংশই বর্ণান্ধ। যদিও বলা হয়, ষাঁড় লাল রঙ দেখলে খেপে যায়। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, ষাঁড় লাল রংকে অন্যান্য রং থেকে আলাদাভাবে চিনতেই পারে না। একইভাবে গরু, ঘোড়া, ইঁদুর, বেড়াল, কুকুর, বাঘ ইত্যাদি স্তন্যপায়ীদের কোনো বর্ণানুভূতি নেই। তারা বিশ্বকে দেখে সাদা-কালো। আবার অন্যদিকে মৌমাছি মানুষের চেয়ে বেশি রং দেখতে পায়।
রং তথা আলোর গ্রাহক যন্ত্র, অর্থাৎ আমাদের চোখের রেটিনায় রয়েছে প্রায় ৪০ লাখ কোণ কোষ (Cone Cell)। তবে এ ক্ষেত্রে মানুষের চেয়ে ডলফিনকেই ভাগ্যবান বলা যায়। কারণ গভীর সমুদ্রের অন্ধকারে দেখার সুবিধার জন্য ডলফিনের রেটিনায় মানুষের চেয়ে ৭ হাজার গুণ বেশি রড কোষ থাকে। যাহোক, চোখের এই কোণ কোষের কারণেই আমরা বিভিন্ন বর্ণ বা রঙ আলাদা করে দেখতে পারি। কারণ, এ কোণ কোষের মধ্যে বিশেষ ধরনের এক রঞ্জক পদার্থ থাকে। কোনো কারণে চোখের কোণ কোষের পরিমাণ কম হলে স্বাভাবিকভাবেই বিশেষ ধরনের ওই রঞ্জক পদার্থও প্রয়োজনের তুলনায় কমে যায়। ফলে অনেকেই আংশিক বা পুরোপুরি বর্ণান্ধ হয়ে যায়।
