আমরা কেন ব্যথা পাই

শরীরের সংবেদী কোষগুলো ব্যাথা শনাক্ত করতে পারেছবি: সংগৃহীত

হাঁটতে গিয়ে রগে টান খেলেন। কিংবা মশা বা পিঁপড়া দিল কামড়ে। কাগজ ভাঁজ করতে গিয়ে হাত কেটে যায় অনেকের। এরকম হাজারো উপায়ে আমরা ব্যথা পাই। পড়ে যাওয়া বা হাত কেটে যাওয়ার মতো বড় বিষয়গুলো না হয় বাদই দিলাম।

কিন্তু ব্যথা পাই কেন আমরা? জিনিসটা কি শুধু একটা অনুভূতি নাকি আরও বেশি কিছু?

উত্তরটা শুনুন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব লুইভিল হসপিটালের চিকিৎসক সুজিত্র টংপ্রাসার্টের (Sujittra Tongprasert) মুখে। তাঁর মতে, ব্যথার মূল কারণ একটিই। আপনাকে রক্ষা করা ও সতর্ক করা। আপনার মস্তিষ্ক ব্যথা টের পেলে সেটা তাৎক্ষণিক থামিয়ে দিতে বাধ্য হন আপনি। যেমন পেঁয়াজ কাটতে গিয়ে হাত কেটে গেল। সঙ্গে সঙ্গে কাটাকুটি থামিয়ে দেন। কারণ, সেই মুহূর্তে আপনার ‘ফাইট অর ফ্লাইট’ ইন্সটিংকট সক্রিয় হয়। স্বভাবজাত এই বিষয়টি বলে, লড়ো, না হয় পালাও। অর্থাৎ মস্তিষ্ক আপনাকে সতর্ক করে দিল। জানাল, যা করছিলেন, সেটা আপনার জন্য ক্ষতিকর।

শরীরের সংবেদী কোষগুলো ব্যাথা শনাক্ত করতে পারে
ছবি: সংগৃহীত
নিজেকে রক্ষা করতেই ব্যথার অনুভূতি হয় আমাদের। এটা শুধুই অনুভূতি নয়, সতর্কবার্তাও বটে।

কিন্তু মস্তিষ্ক এটা জানল কীভাবে? আমাদের পুরো শরীরে বেশ কিছু সংবেদী কোষ আছে। কোষগুলো ব্যথা শনাক্ত করতে পারে। ইংরেজিতে এগুলোকে বলে ‘পেইন রিসেপ্টর’। ব্যথা পেলে এসব সংবেদী কোষ উদ্দীপ্ত হয় এবং একধরনের রাসায়নিক নিঃসরণ করে। এই রাসায়নিক সংকেত পৌঁছে দেয় কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে। ফলে সেই সংকেত পৌঁছে যায় মস্তিষ্কের থ্যালামাসে। সেখান থেকে এই সংকেত আবার গিয়ে পৌঁছায় মস্তিষ্কের সেরেব্রাল কর্টেক্স অংশে। মস্তিষ্কের এই অংশটিই সেই সংকেত প্রক্রিয়াজাত করে ব্যথার অনুভূতি দেয়। সতর্ক করে দেয়, সাবধান!

অর্থাৎ নিজেকে রক্ষা করতেই ব্যথার অনুভূতি হয় আমাদের। এটা শুধুই অনুভূতি নয়, সতর্কবার্তাও বটে।

সূত্র: বিবিসি সায়েন্স ফোকাস, উইকিপিডিয়া