হরেক রকম ব্যাকটেরিয়া

ব্যাকটেরিয়া প্রাণিজগতের সবচেয়ে ছোট এককোষী অণুজীব। এরা সহজ জীবন যাপন করতে পারে। পৃথিবীতে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ব্যাকটেরিয়া বাস করে। মরুভূমি থেকে প্যাচপেচে কাদায়, প্রাণীর অন্ত্রে, গাছের শিকড়ে এবং সমুদ্রের তলদেশ—পৃথিবীর প্রায় সব জায়গায় এদের বাস। মানুষ বা প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য ব্যাকটেরিয়া অপরিহার্য। কিন্তু এরা যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তাহলে মারাত্মক রোগ হতে পারে।

১. Clostridium Botulinum (ক্লোস্ট্রিডিয়াম বটুলিয়াম): সাধারণত মাটিতে বাস করে। কিন্তু এরা ভয়ংকর বিষ উৎপাদন করতে পারে। সেই বিষে মানুষ বা প্রাণী পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। আর সব ব্যাকটেরিরার মতো এরাও জ্যামিতিক হারে বিভাজিত হয় এবং দ্রুত সংখ্যা বাড়িয়ে ফেলে।

২. Nitrobacter (নাইট্রোব্যাকটার): মাটি ও পানিকে উর্বর করে, গাছপালা এবং প্রাণীদের বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। এরা লম্বা চুল বা চাবুকের মতো লেজ নাড়িয়ে সামনের দিকে এগোতে পারে। প্রতি সেকেন্ডে এরা ৫০ বার চুল আর লেজ নাড়াতে পারে।

৩. Staphylococcus epidermidis (স্ট্যাফিলোকক্কাস এপিডারমিডিস): মানুষের ত্বকে বসবাস করে এই ব্যাকটেরিয়া। সচরাচর এরা তেমন ক্ষতি করে না। যদি এরা শরীরের ভেতরে ঢুকে পড়ে, তাহলে প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।

৪. Psychrobacter urativorans (সাইক্রোব্যাকটার আর্টিভোরানস): এরা অত্যন্ত ঠান্ডা জায়গায়ও বাঁচতে পারে। অতি ঠান্ডায় যাতে জমে যেতে না পারে, সে জন্য এদের শরীরে রয়েছে বিশেষ একধরনের পদার্থ।

৫. Lactobacillus acidophilus (ল্যাকটোব্যাকিলাস অ্যাসিডোফিলিস): গরম দুধে এরা খুব ভালো বংশ বৃদ্ধি করতে পারে। দই তৈরিতে এই ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করা হয়।

৬. Deinococcus radiodurans (ডেইনোকক্কাস রেডিওডুরানস): পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তপ্রাণ ব্যাকটেরিয়া। এরা তীব্র শীতে, শক্তিশালী অ্যাসিডে ও শক্তিশালী তেজস্ক্রিয় বিকিরণ সহ্য করেও বেঁচে থাকতে পারে।

৭. Escherichia coli (এসকেরিকা কলি): মানুষের অন্ত্রে বসবাসকারী সবচেয়ে পরিচিত ব্যাকটেরিয়া। এরা সাধারণত ক্ষতিকর নয়। কিন্তু এদের কিছু প্রজাতি খাদ্যে বিষক্রিয়া তৈরি করে।

৮. Acetobacter aceti (অ্যাকেটোব্যাকটার অ্যাকেটি): ভিনেগার তৈরিতে ব্যবহার করা হয় এই ব্যাকটেরিয়া।

৯. Vibrio cholerae (ডেইনোকক্কাস রেডিওডুরানস): দূষিত পানি ও খাদ্যে বসবাসকারী এই ব্যাকটেরিয়া কলেরা রোগের কারণ।

১০. Nostoc (নোস্টক): স্যাঁতসেঁতে জায়গায় এদের বাস। এরা সূর্যালোকের সাহায্যে শক্তি সংগ্রহ করে এং লম্বা শিকলের মতো বেড়ে ওঠে, ঠিক উদ্ভিদ যেভাবে সূর্যালোকের সাহায্যে বেঁচে থাকে।

সূত্র: দ্য অ্যানিমেল বুক অব আ ভিজ্যুয়াল এনোসাইক্লোপিডিয়া