ভৌগলিক অবস্থানের দিক থেকে বাংলাদেশ ছোট হলেও বন্যপ্রাণীতে খুব সমৃদ্ধ। দেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এসব প্রাণী খুব গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রয়েছে পাহাড়ি চির সবুজ বন, দক্ষিণ-পশ্চিমে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন, দক্ষিণজুড়ে বঙ্গোপসাগর আর মধ্যাঞ্চল থেকে উত্তর-পশ্চিম পর্যন্ত শালবন ও জালের মতো ছড়ানো নদ-নদী। সব মিলে গড়ে উঠেছে জীববৈচিত্র্যের এক অপূর্ব সমাহার।
এ কারণে হাজারো জীববৈচিত্র্যের আশ্রয়স্থল হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বে সুপরিচিত। ওরিয়েন্টাল নামে প্রাণিভৌগলিক অঞ্চলের ইন্দো-বার্মা ও ইন্দো-চায়না অংশের সংযোগস্থলে থাকায় এ দেশের প্রাণিবৈচিত্র্যে যুক্ত হয়েছে এক অনন্য মাত্রা। এখানকার বন্যপ্রাণীদের একটি অংশ উভচর শ্রেণির সদস্য। এই উভচর শ্রেণিবিন্যাসের মধ্যে অ্যানুরা (Anura) এবং জিমনোফিনা (Gymnophiona) পরিবারের উভচরদের দেখা মেলে।
বিশ্বে এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত উভচর প্রাণীর সংখ্যা ৮ হাজার ৩১৮টি। এর মধ্যে অ্যানুরা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ৭ হাজার ৩৩৮টি। তবে বর্তমানে নতুন গবেষণায় আবিষ্কৃত হচ্ছে আরও নতুন নতুন প্রজাতি। বিগত বছরের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও গবেষণায় বাংলাদেশেও বেড়েছে উভচর প্রাণীর সংখ্যা। আর এই উভচর প্রাণীগুলোর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ। এ দেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশসহ কৃষি অর্থনীতিতে ব্যাঙ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
আমরা সম্প্রতি বাংলাদেশে ব্যাঙ নিয়ে হওয়া গবেষণাগুলো পর্যালোচনা করেছি। দেশে গত ৫০ বছরে ব্যাঙের ওপর প্রকাশিত ১৫৬টি গবেষণাপত্র বিশ্লেষণ এবং আমাদের মাঠপর্যায়ের অনুসন্ধাননির্ভর গবেষণা অনুযায়ী বাংলাদেশে ব্যাঙের প্রজাতির সংখ্যা ৬৩টি। কিন্তু আমাদের বন্যপ্রাণিবিজ্ঞানীরা মনে করেন, সংখ্যাটি ১০০-এর বেশি। গবেষণাপত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত ১২ বছরে বাংলাদেশে মোট ২৪টি নতুন ব্যাঙের সন্ধান মিলেছে, যার মধ্যে ৯টি শুধু যে বাংলাদেশের জন্য নতুন, তা নয়; গোটা পৃথিবীতেই নতুন। ২০১৫ সালে আইইউসিএন (ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনসারভেশন অব নেচার) বাংলাদেশের মূল্যায়িত তথ্য অনুযায়ী, ৪৯ প্রজাতির উভচরের মধ্যে ৯ প্রজাতির ব্যাঙকে বিলুপ্তি-ঝুঁকির লাল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
একটি কোলাব্যাঙ পুরো জীবনে প্রায় ৪ লাখ টাকার ফসল রক্ষা করে। তাই ফসলের ক্ষেতের আশপাশে পর্যাপ্ত ব্যাঙ থাকলে সেখানে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস পায়।
১৯৭৮ সালে প্রকাশিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ব্যাঙ তালিকা। এই তালিকা প্রণয়ন করেছিলেন বাংলাদেশে বন্যপ্রাণিবিদ্যার পথিকৃৎ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের এমিরেটস অধ্যাপক কাজী জাকের হোসেন। ১৯৮২ সালে প্রকাশিত প্রাণিবিদ আলী রেজা খানের ওয়াইল্ডলাইফ অব বাংলাদেশ: এ চেকলিস্ট বইয়ে দেশে ১৯ প্রজাতির ব্যাঙ আছে বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু পরে নতুন গবেষণা, শ্রেণিবিন্যাস ও জিনগত গবেষণায় পাওয়া তথ্যানুসারে বেড়েছে এ দেশে ব্যাঙের প্রজাতিবৈচিত্র্য। পরবর্তীতে প্রকাশিত গবেষণাপত্রগুলোর তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে ব্যাঙের সংখ্যা ৬৪। উল্লেখ্য, এই গবেষণামূলক তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণের কাজে সংশ্লিষ্ট ছিল আমার ছাত্র, বন্যপ্রাণী-পরিবেশবিদ আশিকুর রহমান; ওই বিভাগের শিক্ষক মো. মাহাবুব আলম এবং মো. ফজলে রাব্বি। আশা করি খুব দ্রুত আন্তর্জাতিক জার্নালে আমাদের এই গবেষণা প্রকাশিত হবে। দেশে ব্যাঙ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যভাণ্ডার হিসাবে কাজ করবে এটা, এমনটাই আমাদের বিশ্বাস। এ ছাড়াও আরও বিভিন্ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। এগুলোতে আমাদের গবেষণা দলে কর্মরত শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন মোখলেছুর রহমান, মো. মাহাবুব আলম, মো. ফজলে রাব্বি, রয়েছেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী গবেষক ও আমার ছাত্র মো. আব্দুর রাজ্জাক, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নাসরিন আক্তার, সিইজিআইএসের বন্যপ্রাণী-পরিবেশবিদ ও গবেষক আশিকুর রহমান, বন বিভাগের গবেষক উম্মে হাবিবা, প্রাক্তন শিক্ষার্থী অর্ণব সাহা, সিরাজুম মুনিরা, সাজিয়া আফরিন, মো. তানভীর হাসানসহ অনেকে।
নগরায়ন ও জলাশয়ে ব্যাঙ
বর্তমানে পৃথিবীর ৫৫ শতাংশ মানুষ শহরে বসবাস করে। ফলে কমছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। ব্যাঙ টিকে থাকার জন্য জল ও স্থল—দুটোই প্রয়োজন। কিন্তু শহরের জলজ পরিবেশ দিন দিন দূষিত হচ্ছে। বাংলাদেশের বড় শহরগুলো, বিশেষ করে ঢাকার কথা যদি চিন্তা করি, বর্ষাকালে ব্যাঙের জন্য প্রয়োজনীয় জলাশয় একেবারে কম। আর অস্থায়ী যেসব জলাশয় দেখা যায়, সেখানেও পানি সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিঘ্নিত হয় ব্যাঙের প্রজনন। এ কারণে শহরের প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে বিলুপ্ত হচ্ছে ব্যাঙ। এতে বেড়ে যাচ্ছে ব্যাঙের প্রধান খাদ্য মশাসহ ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ। সম্প্রতি মশা দমনে ঢাকা শহরের জলাশয়ে ব্যাঙ অবমুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু কতটুকু ভেবে দেখা হয়েছে যে ব্যাঙগুলো টিকে থাকার জন্য পর্যাপ্ত পরিবেশ আছে কি না? এ জন্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে মাঠপর্যায়ে আরও গবেষণা জরুরি।
ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়াসহ বিভিন্ন মশাবাহিত রোগের বাহক মশার লার্ভা খায় ব্যাঙাচিরা, অর্থাৎ শিশু ব্যাঙ। এটা মশা দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রতিদিন একটি ব্যাঙ নিজ দেহের ওজনের দ্বিগুণ কীটপতঙ্গ খেতে পারে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান শিল্পায়ন ও নগরায়নের ফলে তাদের আবাসস্থল যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি তাদের প্রজননক্ষেত্রও নষ্ট হচ্ছে। ফলে কমছে ব্যাঙের সংখ্যা, আর বাড়ছে পতঙ্গের সংখ্যা। প্রকৃতি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানবজাতি।
গত ১৫ বছর ধরে আমাদের গবেষণাদলের সহায়তায় ওয়াইল্ড লাইফ রিসার্চ ল্যাবরেটরি থেকে আমরা নগর-বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে কাজ করছি, যার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল এই ব্যাঙজাতীয় প্রাণীরা। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, ঢাকা শহরে এখনও টিকে আছে ১২ প্রজাতির ব্যাঙ। এ ছাড়া আমরা আরও বিভিন্ন শহরে ব্যাঙ ও ব্যাঙের প্রতিবেশ নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছি। সিলেট অঞ্চলের শহরগুলো এখনো ব্যাঙের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।
কৃষি অর্থনীতিতে ব্যাঙের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ব্যাঙ নিজের দেহের ওজনের দ্বিগুণ পরিমাণ পোকামাকড় খেতে পারে। এসব পোকামাকড় ফসলের ক্ষতি করে।
অভ্যন্তরীন জলাশয়গুলোতে ব্যাঙ সংরক্ষণে গুরুত্ব ও সচেতনতা প্রয়োজন। গত ৩ বছর ধরে আমরা সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাঙের পরিবেশ, প্রতিবেশ, ঝুঁকি ও সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করেছি। পাশাপাশি বাংলাদেশের বাওড়গুলোর ব্যাঙ নিয়েও গবেষণা করেছি প্রথমবারের মতো। এসব এলাকায় রয়েছে ব্যাঙের প্রজাতিগত বৈচিত্র্যতা। কিন্তু ক্রমশ জলজ পরিবেশের দূষণ, প্লাস্টিকের ব্যবহার, জলাশয়ের আবাসস্থল নষ্ট হয়ে যাওয়া—এগুলো ব্যাঙের জন্য ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলছে।
তবে জলাভূমিকেন্দ্রীক গঙ্গা প্লাবনভূমি আমাদের ব্যাঙের এক সমৃদ্ধ আবাসস্থল। এখাকার জলজ পরিবেশের বৈচিত্র্যময় আবাসস্থলের সমৃদ্ধতার কারণে প্রজাতিগতভাবে ব্যাঙের প্রাচুর্যতা রয়েছে। ৭ বছরের গবেষণায় এখান থেকে মোট ২১ প্রজাতির ব্যাঙের সন্ধান পেয়েছি আমরা। অবশ্য এখানে কোনো সংরক্ষিত এলাকা নেই। তাই গণসচেতনতা প্রয়োজন।
এসব অঞ্চলের পাশাপাশি বরিশালের উপকূলীয় অঞ্চল বা মধ্য-দক্ষিণ এলাকাতেও আমরা দীর্ঘদিন ব্যাঙের পরিবেশ ও প্রতিবেশের ওপর গবেষণা করেছি। সেখানে এখনো ১৬ প্রজাতির ব্যাঙ টিকে আছে। এ ছাড়া, সন্দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ, হাতিয়া, মহেশখালীসহ বিভিন্ন দ্বীপে বিস্তারিত গবেষণা করেছি।
আগেই বলেছি, আবারও বলি, এসব গবেষণার সূত্র ধরে আমরা দেখেছি, কৃষি অর্থনীতিতে ব্যাঙের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ব্যাঙ নিজের দেহের ওজনের দ্বিগুণ পরিমাণ পোকামাকড় খেতে পারে। এসব পোকামাকড় ফসলের ক্ষতি করে। ফলে ব্যাঙ থাকলে অতিরিক্ত কীটনাশক যেমন প্রয়োগ করতে হয় না, তেমনি ঠিক থাকে ফসলের গুণগত মান ও মাটির গুনাগুণ। পাশাপাশি প্রকৃতির ভারসাম্যও ঠিক থাকে। আবার ব্যাঙের মূত্রে ইউরিয়া জাতীয় পদার্থ থাকে, যা জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে এবং ফসলের উৎপাদন বাড়ায়। এক হিসাবে দেখা গেছে, একটি কোলাব্যাঙ পুরো জীবনে প্রায় ৪ লাখ টাকার ফসল রক্ষা করে। তাই ফসলের ক্ষেতের আশপাশে পর্যাপ্ত ব্যাঙ থাকলে সেখানে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস পায়। এতে আমরা শুধু আর্থিকভাবে লাভবান হব, তা নয়; সেই সঙ্গে পাব কীটনাশক ও বিষমুক্ত খাবারের সরবারহ। ব্যাঙ বাড়লে কীটনাশকের বিষ পরিবেশে ছড়াবে না। ফলে পরিবেশ, বিশেষ করে জলজ পরিবেশ থাকবে বিষক্রিয়া এবং দূষণমুক্ত।
তবে ব্যাঙেদেরও রোগ-বালাই হয়। মাঠপর্যায়ের এসব গবেষণার পাশাপাশি ওয়াইল্ড লাইফ রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে গবেষণা চলছে বন্যপ্রাণীর বিভিন্ন রোগতত্ত্বের ওপর। পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বর্তমানে বাংলাদেশের ব্যাঙ হুমকিতে রয়েছে। তাই তাদের অণুজীবঘটিত বিভিন্ন রোগ, যেমন ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকঘটিত রোগ এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেসিস্ট্যান্স নিয়ে কাজ করছি আমরা। এ ব্যাপারে আরও গবেষণা করে বিস্তারিত জানাতে পারব।
মানবজাতির স্বার্থেই দরকার ব্যাঙ সংরক্ষণ। সব প্রাণীরই পৃথিবীতে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে।
দেশে সর্বত্র চাই ব্যাঙ সংরক্ষণের উদ্যোগ
সংরক্ষিত এলাকাগুলোর বাইরে এই নতুন আবিষ্কৃত ব্যাঙ বা বিলুপ্তির হুমকিতে থাকা ব্যাঙের একটা বড় অংশ রয়েছে। আমাদের দেশে হুমকিগ্রস্ত ৯টি ব্যাঙের মধ্যে ৬টিই সংরক্ষিত এলাকার বাইরে, এমনকি নতুন আবিষ্কৃত ২৪টি ব্যাঙের ৯টি আবিষ্কৃত হয়েছে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে। আবার ঝিঁঝি ব্যাঙ পাওয়া গেছে দূষিত ঢাকা শহরে। উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে আবিষ্কৃত সব ব্যাঙই কয়েকটি সংরক্ষিত এলাকায় রয়েছে। এই তথ্য এটাই নির্দেশ করে যে ব্যাঙ নিয়ে এই অঞ্চলে আরও বিস্তৃত গবেষণা হলে নতুন নতুন আরও অনেক ব্যাঙের তথ্য বেরিয়ে আসবে।
আমাদের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বের চিরসবুজ বা মিশ্র চিরসবুজ বন বন্যপ্রাণীর জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিবেচিত হলেও আসলে সারা দেশই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন গঙ্গা অববাহিকায় তিন ধরনের বিপন্ন প্রজাতির ব্যাঙ এবং ২ প্রজাতির নতুন ব্যাঙ পাওয়া গেছে। এরকম প্রতিটি অঞ্চলই ব্যাঙের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ক্রমশ ধ্বংস হচ্ছে জলজ পরিবেশ। ফলে জলজ পরিবেশে টিকে থাকা ব্যাঙের সংখ্যাও ক্রমশ কমে যাচ্ছে। জলজ পরিবেশ দূষণ, এ পরিবেশের গুণগত মান নষ্ট হওয়া, জলজ পরিবেশের নিয়ামকগুলোর মান নষ্ট হওয়া, জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার, শহরের আয়াতন ক্রমশ বৃদ্ধি, ক্রমশ প্রাকৃতিক পরিবেশের বিলুপ্তি, রাস্তায় অতিরিক্ত যানবাহনের ফলে দুর্ঘটনায় ব্যাঙের মৃত্যু, পাহাড়ে অবৈধভাবে ব্যাঙ শিকার ইত্যাদি কারণে প্রাণীটির সংখ্যা আজ কমে যাচ্ছে। সংরক্ষিত এলাকার বাইরে আমাদের অগোচরে কত ব্যাঙ যে নেই হয়ে যাচ্ছে, তা আমরা চিন্তাও করতে পারছি না। তাই সময় এসেছে আমাদের এই সংরক্ষিত এলাকার বাইরে পরিবেশের পরম বন্ধু ব্যাঙ সংরক্ষণে গুরুত্ব দেওয়া। বড় কোনো প্রাণী যেমন সংরক্ষণে গুরুত্ব পায়, ঠিক সেভাবে গুরুত্ব না পেলেও যেন ন্যূনতম গুরুত্ব যেন ব্যাঙ পায়।
পৃথিবীর পরিবেশ ও বাস্তুসংস্থানে ব্যাঙের ভূমিকা হয়তো খানিকটা বোঝাতে পেরেছি। তাই বলব, মানবজাতির স্বার্থেই দরকার ব্যাঙ সংরক্ষণ। সব প্রাণীরই পৃথিবীতে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। তাতে তাদের যেমন ভালো, পরিবেশ যেমন ভারসাম্যে থাকে, তেমনি মানবজাতিও নানাভাবে উপকৃত হয়।