কিছু প্রচলিত জিনগত রোগ আমাদের পরিচিত। যেমন থ্যালাসেমিয়া, হিমোফিলিয়া, ডাউন সিনড্রোম ও আলঝেইমার। এমনকি স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও ক্যানসারের মতো রোগের পেছনেও থাকতে পারে জেনেটিক কারণ
মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ মস্তিষ্ক। আর সব অঙ্গের মতোই মস্তিষ্কেরও রোগ হয়। তখন মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা করাতে হয়। মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসায় কাউন্সেলিং বা কাউন্সিলরদের কথা আমরা প্রায় সবাই শুনেছি। কিন্তু জেনেটিকসেরও যে কাউন্সেলিং আছে, তা কি আমরা জানি? নিজের, পরিবারের সদস্যদের ও উত্তরসূরীদের সুস্বাস্থ্যের জন্য জেনেটিক কাউন্সেলিং কেন ও কীভাবে ভূমিকা রাখে, সেটাই এখানে সংক্ষেপে বলছি।
মানবদেহের মৌলিক একক কোষ। প্রতিটি কোষের ভিতরে রয়েছে ৪৬টি ক্রোমোজাম। প্রতিটি ক্রোমোজোমে আবার একটি ডিএনএ ও হিস্টোন নামে একটি প্রোটিন আছে। ডিএনএ-র কোনো নির্দিষ্ট অংশকে বলা হয় জিন। এই জিন শারীরিক বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী। এটিই প্রতিটি প্রাণকে অনন্য করে তোলে।
জিনের মধ্যে যখন কোনো নেতিবাচক পরিবর্তন (মিউটেশন) ঘটে বা স্বাভাবিক জিনসংখ্যায় পরিবর্তন আসে, তখন বিভিন্ন ধরনের জিনগত রোগ দেখা দেয়। এসব রোগের অনেক প্রকারভেদ আছে। কিছু প্রচলিত জিনগত রোগ আমাদের পরিচিত। যেমন থ্যালাসেমিয়া, হিমোফিলিয়া, ডাউন সিনড্রোম ও আলঝেইমার। এমনকি স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও ক্যানসারের মতো রোগের পেছনেও থাকতে পারে জেনেটিক কারণ।
জেনেটিক কাউন্সেলিংয়ে একজন মানুষের নিজস্ব জিনগত বিবরণী ও পারিবারিক জিনগত রোগের ইতিহাস যাচাই করা হয়। তারপর তাকে সম্ভাব্য জিনগত রোগ ও শারীরিক জটিলতা, যা পরিবারের বাকি সদস্যদের বা ভবিষ্যত উত্তরসূরীদের আক্রান্ত করতে পারে, সে বিষয়ে সবিস্তারে জানানো হয়। পাশাপাশি এসব তথ্যের ভিত্তিতে একজন জেনেটিক কাউন্সিলর যদি রোগীর কোনো পরীক্ষা করা প্রয়োজন বলে মনে করেন, সে বিষয়েও পরামর্শ দেন। জেনেটিক টেস্ট বা জিনগত পরীক্ষায় কোনো রোগ পাওয়া গেলে যথাযথ চিকিৎসাবিষয়ক সিদ্ধান্ত নিতেও সহায়তা করেন জেনেটিক কাউন্সিলর।
যাঁরা মা-বাবা হওয়ার পরিকল্পনা করছেন, তাঁরা সন্তান নেওয়ার আগে জেনেটিক কাউন্সিলরের পরামর্শ নিতে পারেন। গর্ভাবস্থায় ও সন্তান প্রসবের পরেও মা ও শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্য জেনেটিক কাউন্সলিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
লেখক: শিক্ষার্থী, চতুর্থ বর্ষ, জীবপ্রযুক্তি বিভাগ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়
সূত্র: উইকিপিডিয়া, সিডিসি ডট গভ, যুক্তরাষ্ট্র