কিন্তু নাকের দুই ছিদ্রের বায়ুপ্রবাহ দুরকম হয়। একটির চেয়ে অন্যটি দিয়ে একটু কম বাতাস আসা-যাওয়া করে। সবসময়ই এমনটা হয়, সুস্থ থাকা অবস্থাতেও
ঠান্ডা লাগলে বা সর্দি হলে নাকের একটা ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায়। বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বিষয়টা টের পাওয়া যায় ভালো ভাবে। মনে হয় যেন ওই ছিদ্র দিয়ে আর শ্বাস (আসলে প্রশ্বাস) নেওয়া যাচ্ছে না। তবে অনেক সময় অন্য ছিদ্রটি কার্যকর থাকে। শ্বাস নিতে তেমন অসুবিধা হয় না। কখনো ভেবে দেখেছেন, কেন এমন হয়?
আমাদের নাকের ছিদ্র দুটো সমান। তবে দেহ দুটোকে একই সময়ে সমান গুরুত্ব দেয় না। আমরা বিষয়টা সেভাবে বুঝতে পারি না যদিও। কিন্তু নাকের দুই ছিদ্রের বায়ুপ্রবাহ দুরকম হয়। একটির চেয়ে অন্যটি দিয়ে একটু কম বাতাস আসা-যাওয়া করে। সবসময়ই এমনটা হয়, সুস্থ থাকা অবস্থাতেও। আর কয়েকঘন্টা পরপর এই কম-বেশি বাতাস প্রবাহের পালাবদল ঘটে। মানে কিছু সময় ডান ছিদ্র দিয়ে বেশি বাতাস আসা-যাওয়া করে, তো কিছু সময় বাঁ পাশেরটা দিয়ে। ক্রমাগত বায়ুপ্রবাহের কারণে নাকের একটি ছিদ্রপথের ভেতরে থাকা আবরণ শুকিয়ে যায়। তখন ওই ছিদ্রপথটির ক্ষতি এড়াতে অন্য ছিদ্র দিয়ে বেশি বায়ুপ্রবাহ শুরু হয়।
ঠান্ডা বা সর্দি হলে নাকের ভেতরে থাকা রক্তনালীগুলো প্রসারিত হয়। বেশি বেশি মিউকাস বা শ্লেষ্মা তৈরি করে। এটা দেহের প্রতিরক্ষা প্রতিক্রিয়ার (ইমিউন রেসপন্স) একটি অংশ। নাকের যে ছিদ্রে বায়ুপ্রবাহের গতি তুলনামূলক বেশি থাকে, সেখানে এই অতিরিক্ত শ্লেষ্মা জমতে পারে না। অন্যদিকে নাকের অন্য ছিদ্রটিতে সে সময় বায়ুপ্রবাহ কম থাকে। তাই সহজেই শ্লেষ্মা জমতে পারে। ফলাফল, ওই ছিদ্রের বায়ুপ্রবাহ আরও কমে যায়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বন্ধ নাকের বায়ুপ্রবাহ একেবারে থেমে যায় না। অল্প হলেও চলে। এজন্য দেখা যায়, কিছু সময় পর আপনাতেই খুলে যায় বন্ধ নাকের দুয়ার।
লেখক: শিক্ষার্থী, তেজগাঁও কলেজ, ঢাকা
সূত্র: সায়েন্স ফোকাস