সূর্যের আলো সমুদ্রের শুধু প্রায় ২০০ ফিট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। এর পরের সমুদ্রের সবটা জুড়ে অন্ধকারের রাজত্ব। প্রশ্ন হলো, এই অন্ধকারে মাছেরা দেখে কীভাবে? আদৌ কি মাছ অন্ধকারে দেখতে পায়?
গভীর সমুদ্রের অতলে অনেক সামুদ্রিক মাছের বাস। এই মাছগুলো স্বাভাবিকভাবেই জীবন যাপন করে। ঘুরে ফিরে বেড়ায়, সাঁতার কাটে, খাওয়াদাওয়া করে। কিন্তু সূর্যের আলো সমুদ্রের শুধু প্রায় ২০০ ফিট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। এর পরের সমুদ্রের সবটা জুড়ে অন্ধকারের রাজত্ব। প্রশ্ন হলো, এই অন্ধকারে মাছেরা দেখে কীভাবে? আদৌ কি মাছ অন্ধকারে দেখতে পায়?
সত্যি বলতে, দেখা মানে আমরা যেরকম ‘চোখ দিয়ে দেখা’ বুঝাই, মাছ অন্ধকারে সেভাবে দেখতে পায় না। তবে মাছের দেহের দুপাশে কিছু চাপ-সংবেদনশীল অঙ্গ আছে। ইংরেজিতে এগুলোকে বলে ‘ল্যাটেরাল লাইন’। এই অঙ্গের মাধ্যমে পানিতে চাপের পরিবর্তন টের পায় মাছ। অন্য কোনো মাছ বা কোনো সামুদ্রিক প্রাণী কাছাকাছি আসলে সমুদ্রের পানিতে চাপের পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তন মাছ টের পায় চাপ-সংবেদনশীল অঙ্গের মাধ্যমে। এভাবে তারা বুঝতে পারে, কোনো প্রাণী তাদের কাছাকাছি এসেছে।
হাঙর ও সামুদ্রিক ইলের মতো কিছু প্রাণীর দেহে কিছু বিশেষ অঙ্গ আছে। এসব অঙ্গের মাধ্যমে তারা কোনো প্রাণী কাছাকাছি এলে তাদের সৃষ্ট অতিক্ষুদ্র তড়িৎচৌম্বক ক্ষেত্রও টের পায়। এ ছাড়াও হাঙর অনেক দূর থেকে রক্তের গন্ধ টের পায়। অর্থাৎ আমরা দেখা বলতে যা বুঝাই, সেভাবে না দেখলেও আশপাশে কী হচ্ছে, তা ঠিকই টের পায় মাছ।
লেখক: সহসম্পাদক, বিজ্ঞানচিন্তা