মাছির চোখ দেখে অনেকের হিংসে হতে পারে। কারণ, তার রয়েছে কয়েক হাজার চোখ। কিন্তু মানুষের চোখ মাত্র দুটি। দুইয়ের বদলে মানুষের চার-পাঁচটি বা হাজারো চোখ থাকার সুবিধা-অসুবিধা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে এটা নিশ্চিত, দুটি চোখের কারণে আমাদের কোনো অসুবিধা হয় না। আসলে মানুষের দুটি কান, দুটি নাকের ফুটোর মতো দুটো চোখই যথেষ্ট।
অন্ধদের পুরো বিশ্ব অন্ধকার। শব্দই তাদের একমাত্র অবলম্বন। কিন্তু দুটো চোখের বদলে আমাদের শুধু একটি চোখ থাকলে কী হতো? এর উত্তর হলো, আমাদের দেহে দুটো চোখের বদলে একটি চোখ থাকলে তা কেবল সমস্যাই সৃষ্টি করত। কী ধরনের সমস্যা হতো, সেটা বলা যাক।
কোনো বস্তু থেকে আলো প্রতিফলিত হয়ে চোখের রেটিনায় তার প্রতিবিম্ব তৈরি হয়। চোখের অপটিক নার্ভের মধ্য দিয়ে এ প্রতিবিম্ব মস্তিকে গিয়ে পৌঁছায় সংকেত হিসেবে। তারপর বস্তুটিকে দেখার অনুভূতি জন্মে। এ ক্ষেত্রে দুটি চোখ দিয়ে আমরা একই বস্তু দেখি। দুটি চোখে বস্তুটির দুটি উল্টো প্রতিবিম্ব গঠিত হয়। কিন্তু বিশেষ প্রক্রিয়ায় মস্তিকে তা থেকে তৈরি হয় একক প্রতিবিম্ব। মজার ব্যাপার হচ্ছে, কোনো বস্তুর প্রতিবিম্ব চোখে উল্টোভাবে সৃষ্টি হলেও আমরা তা দেখি সোজাভাবে। কেন?
উত্তর খুঁজতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা অনেক মাথা ঘামিয়েছেন। কিন্তু এর সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। যেকোনো বস্তু সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেতে দুটি চোখের প্রয়োজন। এর ফলে সেই বস্তুটির প্রকৃত অবস্থান, ত্রিমাত্রিক ধারণা, গভীরতাসহ আরও নানাকিছু বুঝতে পারা যায়।
কোনো বস্তুর দিকে সামান্য দূরত্ব রেখে এক চোখ দিয়ে তাকালে সেই বস্তুটি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যায় না। কারণ বাঁ চোখ দিয়ে বাঁ দিক এবং ডান চোখ দিয়ে আমরা ডান দিক দেখি। এই দুই পৃথক প্রতিবিম্বের মিলনের ফলে বস্তুটির গভীরতা বা তার দূরত্বের ধারণা পাওয়া যায়। এ কারণেই এক চোখ বন্ধ করে সুঁচে সুতা পরানো বেশ কঠিন। কারণ, এক চোখে সুতা ও সুঁচের পারস্পরিক দূরত্ব সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যায় না।
