ক্ষুধা লাগলে মস্তিষ্কের ব্রেইনস্টেম বা মস্তিষ্ককাণ্ডের পোস্টারেমা অঞ্চল উদ্দীপ্ত হতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। মস্তিষ্কের এ অঞ্চলটি রক্তে ব্যাকটেরিয়াল টক্সিন বা ব্যাকটেরিয়াগত বিষক্রিয়া শনাক্ত করে।

ক্ষুধা লাগলে মনে হয় যেন পেটের ভেতর ইঁদুর-বেড়ালের ছোটাছুটি শুরু হয়ে গেছে। সাহিত্যের ভাষায় অনেকে বলেন, পেটে ছুঁচো নাচছে। সত্যি সত্যি তো আর ছুঁচো বা ইঁদুর-বেড়াল পেটের ভেতর ঢোকে না। কিন্তু ক্ষুধা লাগলে আমাদের অস্বস্তি বা অনেক সময় পেট ব্যথা হয়। প্রশ্ন হলো, কেন?

আমরা জানি, খাবার হজম হয় পাকস্থলীতে। এজন্য পাকস্থলীর ভেতরে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড নিঃসৃত হয়। এই নিঃসরণ সবসময় চলতে থাকে। পাকস্থলী খালি হলে কিছুটা সংকুচিত হয়ে যায়। এ সময় হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড পাকস্থলীর ভেতরে ওপরের দিকে উঠে আসে, আঘাত করে খাদ্যনালীর নিচের দিকে থাকা স্ফিঙ্কটারে। খাদ্যনালী ও পাকস্থলীর মধ্যকার স্ফিঙ্কটার নামের অঙ্গটি কাজ করে ভালভের মতো। ভালব মানে গেট। এর বাংলা হলো কপাটিকা। অর্থাৎ, খাদ্যনালী থেকে খাবার এই দুয়ার পেরিয়ে গিয়েই পৌঁছে পাকস্থলীতে।

মূলত স্ফিঙ্কটারে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের আঘাতের কারণে পেটে ব্যথা বা বমি বমি ভাব তৈরি হয়।

এ ছাড়াও ক্ষুধা লাগলে মস্তিষ্কের ব্রেইনস্টেম বা মস্তিষ্ককাণ্ডের পোস্টারেমা অঞ্চল উদ্দীপ্ত হতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। মস্তিষ্কের এ অঞ্চলটি রক্তে ব্যাকটেরিয়াল টক্সিন বা ব্যাকটেরিয়াগত বিষক্রিয়া শনাক্ত করে। ফলে, খাদ্য বিষক্রিয়া বা খাবার উগরে দেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। তবে অনেক সময় এসব ছাড়াও রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যেতে পারে। ফলে এ ধরনের লক্ষণ দেখা যেতে পারে। অর্থাৎ রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ কমলেও পেটের ভেতর নাচ জুড়ে দিতে পারে ছুঁচো।

এজন্য ক্ষুধা লাগলে বেশি দেরি করে খাওয়া উচিত নয়। সেই সঙ্গে সুস্থ থাকার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবারও জরুরি। তাহলে পেটের মধ্যে আর ছুঁচোর নাচের পরিবেশ তৈরি হবে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

লেখক: শিক্ষার্থী, তেজগাঁও কলেজ, ঢাকা

সূত্র: বিবিসি সায়েন্স ফোকাস, উইকিপিডিয়া