ঘুমিয়ে কেন স্বপ্ন দেখে মানুষ?

সব মানুষই স্বপ্ন দেখে। বলছি ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখার কথা। ছোটবেলায় মানুষ এক রকম স্বপ্ন দেখে তো বড় হতে হতে বদলে যায় স্বপ্নের ধরন। কখনো স্বপ্নের বিষয় বড় আজগুবি হয়। কখনো ভাবেনি জীবনে, তেমন সব বিষয় নিয়েও স্বপ্ন দেখে মানুষ। আবার কোনো বিষয়, যা নিয়ে মানুষ ভাবছে বেশি, তা নিয়েও সে স্বপ্ন দেখে। কখনো স্বপ্ন ভয়ংকর, কখনো আনন্দদায়ক, আবার কখনো তা বেশ আশঙ্কারও কারণ হয়। কোনো কোনো মানুষ স্বপ্ন দেখে বটে, তবে তার মনে এর প্রতিক্রিয়া বড় অল্প সময়। অন্য কারও কারও মনে স্বপ্ন আবার দীর্ঘ প্রক্রিয়া সৃষ্টি করে। কোনো কোনো মানুষ আবার স্বপ্ন নিয়ে অনেক বেশি ভাবনা–চিন্তা করে। স্বপ্নের মানে খুঁজে বেড়ায়। স্বপ্নের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কিংবা কোনো কিছু অর্জন করার সম্পর্ক আছে কি না, তা হাতড়ে বেড়ায়। রাতের কোন ভাগের দেখা স্বপ্ন বেশি ফলে, সে ভাবনাও তাড়িত করে কাউকে কাউকে। মোটকথা, মানুষ স্বপ্ন দেখে এবং অধিকাংশ মানুষ স্বপ্নের বিষয়বস্তু নিয়ে ভাবে।

প্রশ্ন আসে, কেন মানুষ স্বপ্ন দেখে? এই নিয়ে শত শত বছর ধরে মানুষ ভাবে আর নানা রকম ব্যাখ্যা দাঁড় করায়। প্রাচীন গ্রিক ও রোমান সভ্যতার লোকেরা স্বপ্নের কোনো ঐশ্বরিক ক্ষমতা আছে বলে মনে করত। এসব ছাড়াও স্বপ্ন দেখা নিয়ে নানা সময়ে নানা ব্যাখ্যা দিতে চেয়েছে মানুষ। তবে স্বপ্নের খানিকটা আধুনিক সংজ্ঞা পাওয়া যায় ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে এসে—সিগমুন্ড ফ্রয়েড ও কার্ল জাংগের মাধ্যমে। ফ্রয়েডের তত্ত্বের মূল কথা ছিল এই, মানুষের মনের অমীমাংসিত ও অবদমিত ইচ্ছাগুলো মীমাংসার একটি সুযোগ সৃষ্টি করে স্বপ্ন। কার্ল জাংগ অবশ্য মনে করতেন যে স্বপ্নের একটি মনস্তাত্ত্বিক গুরুত্ব রয়েছে এবং স্বপ্নের অর্থ নিয়ে তাঁর ভিন্ন রকম তত্ত্ব ছিল। প্রযুক্তিগত উত্কর্ষের কারণে পরে আরও অন্য তত্ত্বও উপস্থাপিত হয়। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো স্নায়বিক তত্ত্বটি। স্বপ্ন হলো স্রেফ মগজের বৈদ্যুতিক প্রণোদনা, যা আমাদের স্মৃতি থেকে নির্বিচারভাবে আমাদের ভাবনা এবং কল্পনার বিষয়গুলোকে তুলে আনে। মানুষ যখন ঘুম থেকে জাগে, তখন স্বপ্নের একটি কল্পরূপ নেয় মনে। প্রকৃত অর্থে এটি হলো স্বপ্নের একটি জ্ঞানেন্দ্রিয় ধারণা দাঁড় করানোর স্বতঃস্ফূর্ত উদ্যোগ। মনোবিজ্ঞানীরা অবশ্য স্বপ্ন দেখার সত্যিই একটি অভীষ্ট লক্ষ্য আছে বলে মনে করেন।

যুগে যুগে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ ভেবেছে এবং এখনো ভাবছে। অতিসাম্প্রতিক কাল ছাড়া স্বপ্নের পেছনে কী রহস্য কাজ করে, এর শক্ত বাস্তব প্রমাণ আগে মেলেনি। জার্নাল অব নিউরোসায়েন্স–এ স্বপ্ন দেখার পেছনে কী কৌশল কাজ করে, সেটা নিয়ে একটা গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। গবেষণাপত্রটির লেখক রোম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ক্রিস্টিনা মারজানো ও তাঁর একদল সহকর্মী। এক চমত্কার পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করে মানুষ কী করে তাদের স্বপ্ন মনে রাখে, এ বিষয়ে প্রথম ব্যাখ্যা দিতে সক্ষম হন। মগজের তরঙ্গের সিগনেচার প্যাটার্নের ওপর ভিত্তি করে কীভাবে স্বপ্নের বিষয় স্মরণে আসে, এর সম্ভাব্যতা যাচাই করে এই বিজ্ঞানী দল। ‌এর জন্য ৬৫ জন ছাত্রকে তাদের গবেষণা ল্যাবে পরপর দুই রাত কাটানোর অনুরোধ করে। প্রথম রাতে ছাত্রদের শব্দনিরোধক ও তাপমাত্রানিয়ন্ত্রিত কক্ষে ঘুমাতে দেওয়া হয়। গবেষক দল দ্বিতীয় রাতে ছাত্ররা যখন ঘুমিয়ে ছিল, তখন তাদের মগজের তরঙ্গ পরিমাপ করে। আমাদের মগজে চার রকমের বৈদ্যুতিক তরঙ্গ থাকে। সেগুলো ডেল্টা, থেটা, আলফা ও বিটা অনুভব করে থাকে। এদের প্রতিটাই আলাদা কম্পাঙ্কের বৈদ্যুতিক তরঙ্গ। একত্রে মিলে এরা ইলেকট্রো এনসেফালোগ্রাফি (EEG) গঠন করে। ইতালির গবেষক দল এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের ঘুমের নানা স্তরের মগজের তরঙ্গ পরিমাপ করে।

আমরা যখন ঘুমাই, শরীরের ভেতর তখন অনেক ঘটনাই ঘটে। তবে ঘুমের বিষয়টাকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। এর একটি হলো দ্রুত চোখের বিচলন (Rapid Eye Movement) অর্থাৎ, REM ঘুম। আর অন্যটি হলো এর উল্টোটা অর্থাৎ, Non REM ঘুম। REM ঘুমের সময় আমাদের চোখ দুটি বিভিন্ন দিকে দ্রুত ঘুরতে থাকে। Non REM ঘুমের সময় তা ঘটে না। ঘুমের শুরুতে অবশ্য Non REM ঘুমই আসে এবং এরপর আসে REM ঘুমের স্বল্পকালীন স্তর এবং চক্রটি পুনরায় চলতে থাকে। মানুষ স্বপ্ন দেখে মূলত REM ঘুমের স্তরে। অবশ্য REM স্তরে পৌঁছাতে মানুষকে তিনটি Non REM স্তর পেরিয়ে যেতে হয়। প্রথম স্তরে মানুষ চোখ বোজে কিন্তু ডাক দিলে দ্রুতই তার ঘুম ভেঙে যায়। এ স্তরটি ৫ থেকে ১০ মিনিটকাল স্থায়ী হয়। দ্বিতীয় স্তরটি হলো হালকা ঘুমের স্তর। তখন হৃৎপিণ্ডের চলনহার ধীর হয় এবং শরীরের তাপমাত্রা নেমে যায়। অর্থাৎ শরীর গভীর ঘুমের জন্য প্রস্তুত হয়। তৃতীয় স্তরটি হলো গভীর ঘুমের স্তর। এ অবস্থায় মানুষকে সহজে ঘুম থেকে জাগানো যায় না। এ সময় মানুষকে জাগানো হলে সে কয়েক মিনিটের জন্য হতবুদ্ধি হয়ে পড়ে এবং বিভ্রান্ত হয়। মানুষের বয়স যত বাড়ে, ঘুম তত হালকা হয় এবং গভীর ঘুমও তত কম হয়।

Non REM ঘুম পর্যায় অতিক্রম করার পর আসে REM ঘুম পর্যায়। সাধারণত REM ঘুম পর্যায় চলে ৯০ মিনিটের মতো। তবে REM-এর প্রথম পর্যায় চলে মাত্র ১০ মিনিট। পরবর্তী REM পর্যায় ক্রমেই লম্বা হয় এবং শেষেরটি এক ঘণ্টাও স্থায়ী হতে পারে। এ সময় হৃৎপিণ্ডের কম্পন এবং শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুততর হয়। REM ঘুমের মধ্যেই মানুষ স্বপ্নটা দেখে, যখন মানুষের মগজ সবচেয়ে সক্রিয় থাকে। শিশুদের ঘুমের REM পর্যায় প্রায় শতকরা ২০ ভাগ। REM ঘুম পর্যায়ে চোখজোড়া বন্ধ থাকে কিন্তু চোখের ভেতরের অংশ দ্রুত এক পাশ থেকে অন্য পাশে বিচলন করে। মনে করা হয় এ সময় মানুষ স্বপ্ন দেখতে থাকে এবং তার মগজের ক্রিয়া চলতে থাকে। REM ঘুমের পরপরই ঘুম ভেঙে গেলে একজন ব্যক্তি তার স্বপ্ন মনে রাখতে পারে। কোনো ব্যক্তি প্রতি রাতে চার থেকে ছয়টি স্বপ্নও দেখতে পারে।

ইতালির গবেষক দল শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময়ে ডেকে তোলে। তাদের প্রত্যেককে বলে, যদি তারা স্বপ্ন দেখে, তাহলে সেসব যেন ডায়রিতে লেখে। তারা স্বপ্ন দেখেছে কি দেখেনি, কতবার স্বপ্ন দেখেছে এবং তারা স্বপ্নের ঘটনা স্মরণ রাখতে পেরেছে কি না, এসব বিষয় লিপিবদ্ধ করে। এই গবেষণা থেকে বেরিয়ে আসে, স্বপ্ন দেখার সময় মস্তকের সম্মুখভাগের থেটা কণার কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় এবং ঘুম থেকে জেগে স্বপ্নের বিষয়বস্তু স্মৃতি থেকে পুনরুদ্ধার করার সময়ও থেটা কণার কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ এটি আসলে মস্তকের সম্মুখভাগের কর্টেক্সের একই বৈদ্যুতিক চার্জের আন্দোলন, যা স্মৃতির মধ্যে ধারণ করা। স্বপ্নের ঘটনাকে পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে।

পরবর্তী আরেকটি গবেষণায় একই গবেষক MRI কৌশল ব্যবহার করে স্বপ্নের সঙ্গে মগজের গভীরতর স্থানের গঠনের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, তা যাচাই করেন। দেখা গেছে, মানুষ ঘুমের মধ্যে যেসব জীবন্ত, বিচিত্র বা উদ্ভট ও আবেগঘন স্বপ্ন দেখে, তা চোখের দুটি অংশ অ্যামিগডালা ও হিপ্পোক্যাম্পাসের সঙ্গে সম্পর্কিত। অ্যামিগডালার কাজ হলো মনের ক্রিয়া–বিক্রিয়ার স্মৃতি ধারণ করা। অন্যদিকে হিপ্পোক্যাম্পাসের কাজ হলো গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতির যেমন স্বল্পমেয়াদি থেকে দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতির তথ্য সংহত করা।

আবেগের সঙ্গে স্বপ্ন দেখার একটি গভীর যোগাযোগ আছে বলে মনে করা হয়। REM ঘুম যত হ্রাস পায়, তত তা আমাদের প্রতিদিনের জটিল অনুভূতি বোঝার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। স্বপ্ন আমাদের অনুভূতিগুলোকে স্মৃতিতে ধারণ করার প্রক্রিয়া করতে সাহায্য করে। আমরা রাতে ঘুমিয়ে যে স্বপ্ন দেখি, এটি বাস্তব জীবনের ঘটনার প্রতিফলন না–ও হতে পারে, কিন্তু এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে যে অভিজ্ঞতা আমরা পাই, এর সঙ্গে অবশ্যই অনুভূতি জড়িয়ে রয়েছে। আমাদের স্বপ্নের গল্পগুলো কোনো কোনো অভিজ্ঞতাজাত অনুভূতিকে স্মৃতির মধ্যে ধারণ করে তা উন্মোচন করতে চায়। মোদ্দাকথা, আমাদের অনুভূতি ও স্মৃতির সঙ্গে অভিজ্ঞতার যে ভঙ্গুর সেতুবন্ধ রয়েছে, স্বপ্নরা এর ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। মানুষ তার খোলা চোখে দৃশ্যমান বিশ্বের যেসব মানুষ ও বস্তুর প্রতি সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দেয়, স্বপ্নে প্রায়ই এর প্রতিফলন ঘটে। স্বপ্নের একটি বড় অংশে থাকে তার জাগ্রত পৃথিবীর পরিচিত লোকজন, পরিচিত সব স্থান এবং তার কর্মের বিষয়াদি। ঘুমের সময়, বিশেষ করে স্বপ্ন দেখার সময় মন জাগ্রত জীবনের একজন মানুষের চিন্তাভাবনা ও অনুভূতিগুলো (কারণ, তুলনা, স্মরণ রাখা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও মূল্যায়ন) ইত্যাদি নিয়োজিত করে থাকে।

কোনো কোনো গবেষক বলেন, স্বপ্নের কোনো কারণ বা অর্থ নেই। বরং স্বপ্ন হলো ঘুমন্ত মগজের অর্থহীন কর্মকাণ্ড। অন্যরা আবার ভিন্ন কথা বলছেন। তাঁদের মতে, মানুষের মানসিক, আবেগপূর্ণ ও দৈহিক স্বাস্থ্যের জন্য স্বপ্নের প্রয়োজন রয়েছে। কোনো কোনো গবেষণা থেকে আমাদের স্বাস্থ্য ও ভালো থাকার ওপর স্বপ্নের গুরুত্ব কতটুকু, তা দেখার চেষ্টা করা হয়েছে। একটি পরীক্ষায় গবেষকেরা রেম (REM) ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা লোকজনকে জাগিয়ে তোলেন। যাদের স্বপ্ন দেখতে না দিয়ে জাগিয়ে তোলা হয়, তাদের মধ্যে বাড়তি দুশ্চিন্তা, উত্তেজনা, বিষাদগ্রস্ততা, মনঃসংযোগের অভাব ইত্যাদি সমস্যা লক্ষ করা যায়। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, স্বপ্ন আমাদের জীবনের সমস্যার সমাধান দেয়, মনঃসংযোগে সাহায্য করে এবং আমাদের আবেগগুলোকে প্রক্রিয়াকরণ করে। কোনো বিষয়ে দুশ্চিন্তা নিয়ে ঘুমাতে গেলে অনেক সময় ঘুম থেকে জাগলে স্বপ্নের মাধ্যমে পাওয়া কোনো একটি সমাধান দুশ্চিন্তা তাড়াতে কাজে লাগে।

সিগমুন্ড ফ্রয়েড মনে করতেন যে স্বপ্ন হলো আমাদের অবচেতন মনের একটি জানালা। তিনি বিশ্বাস করতেন যে স্বপ্নের মাধ্যমে একজন ব্যক্তির অবচেতন আকাঙ্ক্ষা, চিন্তাভাবনা ও প্রণোদনা প্রকাশিত হয়। স্বপ্ন নিয়ে দেওয়া এসব তত্ত্বের কোনোটি একেবারে ফেলনা নয়। কোনো কোনো স্বপ্ন আমাদের মগজকে আমাদের ভাবনা এবং দিনের নানা ঘটনা প্রক্রিয়াকরণে সাহায্য করে। কোনো কোনো স্বপ্নের হয়তো আসলেই কোনো মানে থাকে না। এগুলো মগজের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডের ফলাফল এবং এদের খুব একটা ‘অর্থ’ নেই।

কোনো কোনো স্বপ্ন মানুষ মনে রাখতে পারে। আবার কোনো কোনোটা মনে রাখতে পারে না। স্বপ্ন দেখার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ঘুম ভেঙে গেলে আমরা খানিকটা পেছনে ফিরে মগজের কার্যাবলির সন্ধান লাভ করতে পারি। আমাদের শরীর মগজের যে অংশ স্মৃতি ধরে রাখতে সাহায্য করে, ঘুমের সময় যখন সেগুলোকে বন্ধ করে দেয়, তখনকার স্বপ্ন মানুষ মনে রাখতে পারে না। কারও কারও মতে, আমাদের মন থেকে স্বপ্নের ঘটনা মুছে যায় না বরং কীভাবে এসব ঘটনার ভেতর দিয়ে যেতে হয়, তার উপায় আমাদের জানা নেই। স্বপ্ন আমাদের স্মৃতিতে ধরা থাকে, যা ফিরে দেখার অপেক্ষায় থাকে। দিনের শেষ ভাগে হঠাৎ কোনো কোনো স্বপ্নের কথা মনে হওয়ার ঘটনা থেকে এর সপক্ষ প্রমাণ মেলে।

কখনো কখনো স্বপ্ন অনেকটা দুঃস্বপ্নের মতো হয়ে যায়। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা তুলনামূলক বেশি দুঃস্বপ্ন দেখে। কোনো বিষয়ে মানুষ পীড়ন, পরস্পর বিরোধ ভাবনা বা ভয়ের মধ্যে থাকলে, ঘাতজনিত স্নায়ুর সমস্যা, আবেগজনিত সমস্যা, ওষুধ সেবনের ফলে সৃষ্ট সমস্যা কিংবা অসুস্থতাজনিত কারণে মানুষ দুঃস্বপ্ন দেখতে পারে। যদি পরপর কয়েক দিন মানুষ দুঃস্বপ্ন দেখে, তবে বুঝতে হবে অবচেতন মন হয়তো তাকে কিছু একটা বলার চেষ্টা করছে। এর প্রতি তখন মনোযোগ দেওয়া উচিত। যদি দুঃস্বপ্ন দেখার কারণ উদ্‌ঘাটন করা সম্ভব না হয় এবং দুঃস্বপ্ন দেখা চলতে থাকে, সে ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। তাঁরা হয়তো এর একটা উপযুক্ত ব্যাখ্যা দিতে পারেন এবং এটা থেকে তাঁকে নিষ্কৃতি পাওয়ার পথ বাতলে দিতে পারেন।

লেখক: অধ্যাপক ও গবেষক, জেনেটিক ও প্ল্যান্ট ব্রিডিং বিভাগ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা