মানুষের আচার–আচরণ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মানসিক বৈশিষ্ট্য। এটি মানুষের ব্যক্তিত্বের পরিচয় তুলে ধরে। এর মধ্য দিয়ে একজন মানুষের মন ও মননশীলতার খবর বেশ খানিকটা আঁচ করা সম্ভব। পারিবারিক ও সামাজিকভাবে একজন মানুষের গ্রহণযোগ্যতাও বহুলাংশে মানুষের আচার–আচরণের ওপরই নির্ভরশীল। একজন মানুষকে সামগ্রিকভাবে মূল্যায়ন করতে গেলে আবশ্যিকভাবে যেসব বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোকপাত করা যায়। এর অন্যতম একটি হলো তার আচার–আচরণ। মানুষে মানুষে আচরণগত পার্থক্য যেমন রয়েছে, আবার আচরণগত দিক থেকে মানুষে মানুষে মিলও রয়েছে। চাইলে মানুষের আচরণের ধরনকে নানা শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায় বটে। সেটি মনোরোগবিদেরা কিংবা দর্শনতত্ত্বে মশগুল পণ্ডিতদের কাজ। আচরণগত বৈশিষ্ট্য দিয়ে মানুষকে নানা কারণে মূল্যায়ন করা হয়। মানুষ যে অন্য মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা অর্জন করে, সেটি নির্ভর করে মূলত তার আচরণগত বৈশিষ্ট্যের ওপরই। অনেকের আচরণে মানুষ ভয় পায় বটে, তবে মন থেকে শ্রদ্ধা পেতে হলে আচরণ মার্জিত হতে হয়, আচরণের মধ্য দিয়ে তার উত্তম ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটাতে হয়।
আচরণ জিন–নিয়ন্ত্রিত কি না, এ পরীক্ষা-নিরীক্ষা নানা রকম জীবে পরিচালনা করা বেশ সহজ। মানুষের ক্ষেত্রে এ রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা একেবারেই অসম্ভব। ফলে সরাসরি মানুষের আচরণের জন্য জিন দায়ী কি না বা কোন কোন জিন দায়ী, তা যথেষ্ট জোর দিয়ে বলা খুব সহজ কাজ নয়। বংশগত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য কোনো মানুষই রাজি হওয়ার কথা নয়, সেটি সংগতও নয়। সে কারণেই মানুষ এসব পরীক্ষার জন্য আদর্শ জীব নয়। অন্যদিকে মানুষের আচরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো কোনো বিষয় সম্পর্কে মানুষের অনুভূতিজাত সাড়া, যা নিয়ে গবেষণা করা খুব সহজ নয়। তা ছাড়া মানুষের বুদ্ধিমত্তা, ভাষা, ব্যক্তিত্ব ও অনুভূতি এসবও পরিমাপ করা বেশ কঠিন। তবু মানুষের আচার-আচরণ নিয়ে গবেষকদের নানা রকম পর্যবেক্ষণ রয়েছে। যদিও মানুষের আচরণ নিয়ে গভীর পর্যবেক্ষণের দুটি সমস্যাও রয়েছে। প্রথমত, সব আচরণকে বস্তুনিষ্ঠভাবে সংজ্ঞায়িত করা এবং এদের পরিমাণাত্মক দিক থেকে পরিমাপ করা। দ্বিতীয়ত, সব আচরণগত বৈশিষ্ট্য পরিবেশগত বিভিন্ন ফ্যাক্টর দিয়ে প্রভাবিত হয়। প্রতিটি বৈশিষ্ট্যের চূড়ান্ত বাহ্যরূপ প্রকাশের ওপর পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আচরণের ওপর তো বটেই। সেসব ফ্যাক্টরকে চিহ্নিত করা এবং এদের প্রভাবের মাত্রা নির্ণয় প্রায় অসম্ভব।
ঐতিহাসিক দিক থেকে বিবেচনা করলে দেখা যায়, মানুষের আচরণের বংশগতিক চর্চাটি অন্যান্য আরও ফ্যাক্টর দিয়ে ব্যাহত হয়েছে। আগে এ–বিষয়ক বহু পর্যবেক্ষণ আর চর্চা হয়েছে কেবল মনোবিজ্ঞানীদের দিয়ে। এ ক্ষেত্রে বংশগতিবিদদের কাছ থেকে কোনো পরামর্শ নেওয়া হয়নি বা তাঁদের সঙ্গে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা করা হয়নি। অধিকন্তু যেসব বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে বুদ্ধিমত্তা, ব্যক্তিত্ব ও অনুভূতির সম্পর্ক রয়েছে, এদের সামাজিক ও রাজনৈতিক তাত্পর্যও কম নয়। তা সত্ত্বেও আচরণ নিয়ে বেশ খানিক গবেষণা ও অধ্যয়ন যে করা হয়নি, তা কিন্তু নয়। একদিকে এসব অধ্যয়নের ক্ষেত্রে মানুষের নিরুপদ্রবে থাকার অধিকার লঙ্ঘিত হয়। অন্যদিকে এক ব্যক্তির আচরণে অন্য ব্যক্তির আচরণের থেকে যে বিস্তর ফারাক লক্ষ করা যায়, তা থেকে কোনো উপসংহারে পৌঁছানো খুব কঠিন হয়। কখনো কখনো আবার এ রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা নানা মতানৈক্যেরও সৃষ্টি করে।
বোঝাই যাচ্ছে, অনেক দিন মনোবিজ্ঞানী আর বংশগতিবিদদের মধ্যে আচরণগত বৈশিষ্ট্য পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে একলা চলা নীতির কারণে এ বিষয়ে খুব একটা অগ্রগতি ঘটেনি। বিজ্ঞানী সি সি ডার্লিংটন এসব দেখে বলেছিলেন, মানুষের আচরণ নিয়ে কথাবার্তা বলা যেন শৌখিন সাহিত্যের এক মধুর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁর মতে, এর কারণ এই যে মনোবিজ্ঞানী এবং বংশগতিবিদ, যাঁদের কাজ হলো আচরণের বিষয় বর্ণনা করা, তাঁরা একত্রে কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দ পর থেকে এই দূরত্ব কমিয়ে আনার জন্য কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু তবু মানুষের আচরণের বংশগতিক ব্যাখ্যা বিতর্কিতই থেকে যায়। গত দুই দশকের গবেষণা থেকে এখন এটা স্পষ্ট যে আচার-আচরণ মানুষের দৃশ্যমান নানা বৈশিষ্ট্যের মতোই মূলত জিন দিয়ে নিয়ন্ত্রিত। পারিবারিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশের সঙ্গে জিনের নানা ক্রিয়া–আন্তক্রিয়ার মধ্য দিয়ে মানুষের আচার-আচরণ একটি রূপ লাভ করে।
সাধারণভাবে কোনো বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ উদ্দীপনায় সাড়া দিতে গিয়ে মানুষ যে ক্রিয়া–প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন বা প্রকাশ করে, তা–ই হলো তার আচরণ। যদিও স্থান-কাল-পাত্রভেদে মানুষের আচার–আচরণগত পার্থক্য দেখা যায়। তবু সক্ষমভাবে মানুষের আচরণের মূল ধারাটি খেয়াল করলে মোটাদাগে একটি মানুষের আচরণগত বৈশিষ্ট্য আঁচ করা যায়। মানুষের আবেগ–অনুভূতি, তাঁর মেধা ও মনন, তাঁর রুচি ও সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার আচরণের ওপর অবশ্যই প্রভাব ফেলে। মানুষ যখন কোনো কারণে আনন্দিত বা ব্যথিত হয়, তখন মানুষ যে আচরণগত সাড়া দেয়, প্রায় সব মানুষে এর একটি সাধারণ প্রতিক্রিয়াজনিত রূপ প্রকাশ পায়। তা সত্ত্বেও মানুষে মানুষেও প্রতিক্রিয়ার মাত্রা ও এর বহিঃপ্রকাশে বেশ পার্থক্য দেখা যায়।
একটি জিনের কারণে মানুষের আচরণগত কী পরিবর্তন ঘটে, তা একটি উদাহরণের মাধ্যমে স্পষ্ট করা খুব সহজ নয়। তবে মানুষের কিছু একক জিন দিয়ে নিয়ন্ত্রিত বংশগত অস্বাভাবিকতা কীভাবে মানুষের মগজ এবং স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ, গঠন বা কার্যাবলিতে প্রভাব ফেলে, তা আলোচনা করলে এ বিষয়ে কিছুটা আভাস মিলতে পারে। মানুষের হান্টিংটন রোগ নিয়ে পরিচালিত গবেষণার ফলাফল পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে ধারণা পাওয়া যায়। এই রোগের মূল প্রভাবটি পড়ে মানুষের মগজের ওপর। সাধারণত জীবনের পঞ্চম দশকে এসে ধীরে ধীরে স্নায়ুর কার্যাবলি এবং এদের সমন্বয়ক্ষমতা লুপ্ত হতে থাকে। মগজের গঠনগত ক্ষয় যত ত্বরান্বিত হয়, মানুষের ব্যক্তিত্বের তত পরিবর্তন ঘটে। মগজের কিছু নির্দিষ্ট স্থানের কোষের মৃত্যু ঘটে বলে এ রকম লক্ষণ দেখা দেয়। অধিকাংশ রোগীই রোগটি শুরু হওয়ার ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে মারা যায়।
বলা বাহুল্য, হান্টিংটন রোগ একটি জিন–নিয়ন্ত্রিত সমস্যা। এই রোগে আক্রান্ত মানুষ বিয়েথা করে সংসারী জীবন যাপন করতে পারে। তবে উন্নত দেশের সচেতন পরিবারে সন্তানেরা এ কথা জানে যে তাদের মধ্যে এ রকম অস্বাভাবিকতা দেখা দেওয়ার শতকরা ৫০ ভাগ সম্ভাবনা রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এই রোগের জিনটির অবস্থানও শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। মানুষের ৪ নম্বর ক্রোমোজোমের খর্বাকৃতির বাহুতে এর অবস্থান। এই জিন তৈরি করে একটি বৃহদাকৃতির (৩৫০ কিলোডাল্টন) প্রোটিন। একে হান্টিংটিন বলা হয়, যা পরিণত মানুষের মগজের কিছু নিউরনের বেঁচে থাকার জন্য একান্ত আবশ্যক। অর্থাৎ একটি জিনের কারণেই মানুষের এই আচরণগত অস্বাভাবিকতা সৃষ্টি হয়ে থাকে। আণবিক মার্কার দিয়ে পরবর্তী সময়ে জিনটির পূর্ণাঙ্গ গঠনসহ নানা রকম তথ্যই জানা সম্ভব হয়েছে। একটি জিনের ক্রিয়ার পরিবর্তন রোগটি ঘটায় এবং এর ফলে আচরণের অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়। এটি মানুষের আচরণের জিনগত ভিত্তিরও একটি প্রমাণ বটে।
মানুষের আচার-আচরণের জন্য পরিবেশ কতটা দায়ী, সেটিও বিবেচনায় নিতে হবে। মানুষের সব আচার–আচরণগত বৈশিষ্ট্য যে জিন–নিয়ন্ত্রিত কোনো বৈশিষ্ট্য নয়, তা বলাই বাহুল্য। আর একাধিক জিন–নিয়ন্ত্রিত বৈশিষ্ট্য কখনো পরিবেশের প্রভাবমুক্ত থাকে না। বরং জিন ও পরিবেশের আন্তক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আচার–আচরণ নিয়ন্ত্রিত হয়। এমন দৃষ্টান্তের কোনো অভাব নেই যে বহু অশিক্ষিত ব্যক্তির আচার-আচরণ আশ্চর্য রকম মার্জিত, আবার অনেক শিক্ষিত মানুষের আচার–আচরণ বেশ অগ্রহণযোগ্য। এর উল্টোটাও যে নেই, তা–ও কিন্তু নয়। বহু অশিক্ষিত ব্যক্তির আচরণ অমার্জিত আর শিক্ষিত লোকের আচার–আচরণ বেশ মার্জিত। ফলে শিক্ষাটাই আচার-আচরণের একমাত্র নিয়ামক পরিবেশ নয়। আবার উন্নত পরিবেশে শিক্ষা লাভ করা মানুষের আচরণ অমার্জিত যেমন হতে পারে, তেমনি সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় বেড়ে ওঠা মানুষের আচার–আচরণও মার্জিত হতে পারে। এর উল্টোটাও সত্যি বলে প্রমাণিত বহু ক্ষেত্রেই। ফলে নির্দ্বিধায় বলা যায় যে উন্নত পরিবেশই মার্জিত আচরণের একমাত্র নিয়ামক নয়। তাহলে পরিবেশের প্রভাবটা আসে কোত্থেকে, সেটিও ভাবতে হবে যুক্তির নিরিখে।
সব আচরণগত বৈশিষ্ট্য আসলে একটি করে জিন দিয়ে নিয়ন্ত্রিত নয়। বেশ কিছু আচরণগত বৈশিষ্ট্য বহু জিন–নিয়ন্ত্রিত এবং পরিবেশের সঙ্গে এদের আন্তক্রিয়ার ফসল। সিজোফ্রেনিয়া মগজের জটিল একটি অস্বাভাবিকতা। এটি একধরনের মানসিক সমস্যা, যা সামাজিক যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা, অদ্ভুত এবং মতিবিভ্রম বা বঞ্চনাজনিত আচরণ প্রদর্শন করে। এ রোগে আক্রান্ত মানুষ স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে ব্যর্থ হয় এবং নির্দিষ্ট সময় বিরতিতে এ রকম অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়। এটি বেশ পরিচিত একটি অস্বাভাবিকতা, যা সাধারণ মানুষের তুলনায় সিজোফ্রেনিয়া আক্রান্ত পরিবারে অনেক বেশি দেখা দেয়। আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা যত বেশি হয়, এই অস্বাভাবিকতা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা তত বাড়ে। এক জাইগোটীয়, অর্থাৎ সমরূপ যমজ এবং দ্বিজাইগোটীয়, অর্থাৎ ভিন্নরূপ যমজের ক্ষেত্রে সিজোফ্রেনিয়া নিয়ে বেশ কিছু গবেষণা হয়েছে। প্রায় সব পরীক্ষার–নিরীক্ষার ক্ষেত্রে এক জাইগোটীয় যমজের ক্ষেত্রে রোগের উপস্থিতি সর্বাধিক (শতকরা ৫০ ভাগ) পাওয়া গেছে। দ্বিজাইগোটীয় যমজের ক্ষেত্রে এই শতকরা ১৭ ভাগের মতো পাওয়া গেছে। এসব গবেষণা থেকে সিজোফ্রেনিয়ার জিনগত ভিত্তি সম্পর্কে খানিকটা জানা সম্ভব হয়েছে। অন্যান্য গবেষণা থেকে পরিবেশগত ঝুঁকি এ রোগের জন্য দায়ী বলে জানা গেছে। ফলে ইদানীং সিজোফ্রেনিয়া সম্পর্কে বলা হচ্ছে, রোগটি বংশগতভাবে ঘটে, কিন্তু বংশগতভাবে নির্ধারিত নয়। রোগটির জন্য জিনের অবদান সুনির্দিষ্ট করে জানা সম্ভব হয়নি। তবে বিভিন্ন সময়ে রোগটি এক জিনীয়, দ্বিজিনীয় বা বহু জিনীয় নিয়ন্ত্রিত হয় বলে প্রস্তাব করা হয়।
সিজোফ্রেনিয়া রোগটির সঙ্গে কত জিন আসলে জড়িত, সেটি জানার জন্য বিজ্ঞানীরা ডিএনএ মাইক্রোঅ্যারে ব্যবহার করে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন। এর মাধ্যমে সম্পূর্ণ জেনোমজুড়ে স্ক্যানিং করা হয়েছে সংযুক্ত জিন শনাক্ত করার জন্য। এসব জিনের প্রকাশ পরিবর্তিত হয়েছে রোগটির কারণে। গবেষকেরা রোগাক্রান্ত ও স্বাভাবিক মানুষের মগজের যে অঞ্চলে রোগটি প্রভাব ফেলে, সেখান থেকে আরএনএ আলাদা করে এদের মাইক্রোঅ্যারে সম্পন্ন করেন। এতে দেখা যায়, পরীক্ষিত জিনগুলো গুচ্ছাকারে সজ্জিত, যাদের একই রকম জীবীয় কার্যাবলি রয়েছে। জিনগুচ্ছের সিজোফ্রেনিয়ার জন্য নিম্নমাত্রার প্রকাশ ঘটে তো অন্যদের ঘটে উচ্চমাত্রার প্রকাশ। এই বিশ্লেষণ থেকে রোগটির জন্য ৮৯টি জিনের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয়।
বিভিন্ন গবেষক দল সিজোফ্রেনিয়ার জিনের প্রকাশ সম্পর্কে জানার জন্য দুই ডজনের অধিক জেনোমজুড়ে মাইক্রোঅ্যারে স্ক্যান করেছে। তারা এর মাধ্যমে কয়েক সেট দায়ী জিন শনাক্ত করেছে, যাদের প্রকাশ সিজোফ্রেনিয়া আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে পরিবর্তিত হয়। এই রোগ নিয়ে পরিচালিত মাইক্রোঅ্যারে স্ক্যান থেকে সব গবেষক দল একই ফলাফল পেয়েছে তা কিন্তু নয়, তবে সিজোফ্রেনিয়া রোগীর মধ্যে ছয়টি মাইয়েলিন সংশ্লিষ্ট জিনের প্রকাশ অনেক হ্রাস পেয়েছিল। মোটকথা, এসব পরীক্ষা–নিরীক্ষা আর গবেষণা থেকে মানুষের আচরণের জিনগত ভিত্তির কথা স্পষ্টতই প্রমাণিত হয়েছে। তবে কেবল জিন একা নয়, বরং জিন এবং পরিবেশের জটিল আন্তক্রিয়ার মধ্য দিয়ে মানুষের এসব আচরণগত বৈশিষ্ট্য পরিস্ফুটিত হয়ে উঠেছে।
লেখক: অধ্যাপক ও গবেষক, জেনেটিক ও প্ল্যান্ট ব্রিডিং বিভাগ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়