ডাইনোসরের পৃথিবী

বেশির ভাগ মানুষের ধারণা, ডাইনোসর হলো বেশ বড়, হিংস্র ও বিলুপ্ত সরীসৃপ-জাতীয় প্রাণী। বড় পরিসরে এমন ধারণা সত্যও বটে। কিন্তু কিছু ভুল ধারণাও আছে। সব ধরনের গড়নের, আকারের ডাইনোসর পৃথিবীতে এসেছিল। এরা এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে আসা স্থলভাগের সবচেয়ে বৃহৎ প্রাণী। কিন্তু এদের একটা বড় অংশের আকৃতি পাখির চেয়েও ছোট ছিল, অনেকটা কবুতর কিংবা মুরগির মতো।

২৩১ থেকে ২৪৩ মিলিয়ন (২৩.১-২৪.৩ কোটি) বছরের মধ্যে ডাইনোসরের প্রথম আবির্ভাব। ১৭.৭ কোটি বছর ধরে পৃথিবীতে এদের বিচরণ ছিল। পাখিসদৃশ ডাইনোসর ছাড়া ৬ কোটি ৫৫ লাখ বছর আগে এদের বিলুপ্তি ঘটে। সে সময় ঠিক কী ঘটেছিল, বিজ্ঞানীরা সে বিষয়ে পুরো একমত নন। কিন্তু এই বিলুপ্তির পেছনে উল্কাপাত বা গ্রহাণুর আঘাতকে বেশ বড় করে দেখা হয়। এ ছাড়া অগ্ন্যুত্পাত থেকে রাসায়নিক নিঃসরণ, জলবায়ু পরিবর্তনসহ অন্য কারণগুলোও বিবেচনা করা হয়।

ধারণা করা হয়, ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে গ্রহাণুর আঘাতের পৃথিবী থেকে ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়ে যায়
ছবি: সংগৃহীত

বিলুপ্তির প্রক্রিয়া গ্রহাণু আঘাতের আগেই?

ধারণা করা হয়, ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে অন্তত ১০ -১৫ কিলোমিটার প্রশস্ত গ্রহাণুর আঘাতের পৃথিবী থেকে ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়ে যায়। কিন্তু গত বছর যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব রিডিং ও ব্রিস্টলের বিজ্ঞানীরা ডাইনোসরের ফসিলের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন, ওই উল্কাপাত বা গ্রহাণুর আঘাতের অন্তত ৫ কোটি বছর আগেই ডাইনোসরদের বিলুপ্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। গ্রহাণুর আঘাতে সেটি শেষ হয় মাত্র। পরিবর্তিত পৃথিবীর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে না পারার কারণেই ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছিল বলে তাঁরা মনে করেন।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, ডাইনোসরের জন্মের সময় পৃথিবী ছিল উষ্ণ। কিন্তু দিনে দিনে পৃথিবী শীতল হয়ে আসতে শুরু করে। সমুদ্রের পানির উচ্চতাও নেমে যেতে শুরু করে। এর ফলেই ডাইনোসর বিলুপ্ত হতে শুরু করে। ডাইনোসরের সঙ্গে স্তন্যপায়ী প্রাণীর জন্ম অনেকটা একই সময়ে হলেও স্তন্যপায়ী প্রাণীরা শীতল পৃথিবীর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়।

ডাইনোসর কি উড়তে পারত?

শুধু বৃহৎ আকারের ডাইনোসরগুলোই বিলুপ্ত হয়েছে। বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ এমনটিই মনে করেন। এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত ফসিলে দেখা যাচ্ছে, অতি উচ্চতর কিছু ডাইনোসরের দেহ পালক অথবা পালকসদৃশ কিছু দিয়ে আবৃত ছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকেই উড়তে পারত না এবং সম্ভবত এগুলো পিছলে পিছলে চলতেও পারত না। অবশ্য গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের উটাহর সল্ট লেক সিটিতে অনুষ্ঠিত মেরুদণ্ডী প্রাণীর জীবাশ্মবিজ্ঞানীদের বৈঠকে উপস্থাপিত গবেষণায় (অপ্রকাশিত) বলা হয়, আর্কিওপটেরিক্স আকৃতিগতভাবে পাখির মতো। দীর্ঘদিন পর্যন্ত এটিই ভূমি থেকে উড়ন্ত প্রথম পাখি হিসেবে বিবেচনা করা হতো (যদিও এমন ভাষ্য এখন পর্যন্ত নিশ্চিত নয়)। যদিও এটা বেশি দূর পর্যন্ত উড়তে পারতো না। এর পরিবর্তে পালকগুলো সম্ভবত বাচ্চাগুলোকে উষ্ণ রাখতে কিংবা সংকেত পাঠাতে সাহায্য করত।

বিজ্ঞানীরা মনে করেন, বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া টের‍্যাসর নামের উড়ন্ত সরীসৃপেরা ছিল ডাইনোসর
ছবি: সংগৃহীত

বেশির ভাগ বিজ্ঞানী মনে করে, বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া টের‍্যাসর (Pterosaur) নামের উড়ন্ত সরীসৃপেরা ছিল ডাইনোসর। তারা ডাইনোসরের নিকটাত্মীয়ও বটে। কিন্তু টেকনিক্যালি তারা ডাইনোসর নয়। টের্যাসরদের হাড় ছিল ফাঁপা। মস্তিষ্ক ও চোখও ছিল তুলনামূলকভাবে বড়। ভাঁজ করা চামড়া হাত বরাবর প্রসারিত ছিল। ৬.৬ কোটি বছর আগে গণহারে বিলুপ্তির আগ পর্যন্ত এদের অস্তিত্ব ছিল। ডোডো পাখির মতোই তাদের পরিণতি হয়েছিল।

গ্রহাণুর আঘাতে একসময় বৃহদাকার ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়ে গেলও আজকের দিনে আমরা বড় আকারের যেসব পাখি দেখি, সেগুলো টিকে থাকার কারণ কী? বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর জন্য পাখিরা তাদের ঠোঁটওয়ালা পূর্বপুরুষদের কাছে ঋণী। আসলে পাখিসদৃশ ডাইনোসরের ছিল দন্তহীন ঠোঁট। এগুলো গ্রহাণুর আঘাতের পর প্রচণ্ড ঠান্ডার ভেতরেও বেঁচে থাকতে সক্ষম হয়েছিল। আর এদের বেঁচে যাওয়ার মূল কারণ খাদ্যাভ্যাস। ধারণা করা হয়, গ্রহাণুর আঘাতের কারণে আমূল বদলে গিয়েছিল পৃথিবীর জলবায়ু। মরে গিয়েছিল সব গাছপালা। কোনো ফসলও হতো না। ঘন ধুলোর জালে সূর্যরশ্মি পৃথিবীতে পৌঁছাতে পারেনি। তখন তৃণভোজী ডাইনোসরগুলো খাদ্যের অভাবে একেক করে মরে যেতে শুরু করল। প্রাণ হারাতে শুরু করে মাংসাশী ডাইনোসরও। কিন্তু মাটিতে পড়ে থাকা বিভিন্ন ফলমূল আর শস্যের বীজের কারণেই পৃথিবী স্বাভাবিক হয়ে উঠতে শুরু করার আগ পর্যন্ত টিকে গিয়েছিল পাখির মতো দেখতে দন্তহীন এসব ছোট ছোট ডাইনোসর। পৃথিবীতে প্রাণের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করছেন ডেরেক লারসন। কানাডায় ডাইনোসর-সংক্রান্ত একটি জাদুঘরের গবেষক তিনি। তিনি বলেন, ডাইনোসরদের একটি অংশ হচ্ছে পাখি জাতীয়। ডাইনোসর আসলে অনেক বড় গোষ্ঠী। পৃথিবী থেকে বেশির ভাগ ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়ে গেলেও আজকের দিনে যেসব পাখি, সেগুলোর যারা পূর্বপুরুষ, তারা বিলুপ্ত হয়নি। সারা পৃথিবী থেকে বহু প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদ বিলুপ্ত হলেও যেসব ডাইনোসর বেঁচে থাকতে সক্ষম হয়েছিল, সেগুলোই বিভিন্ন প্রজাতির পাখিতে পরিণত হয়। কিন্তু আজকের দিনে আমরা যেসব পাখি দেখি, সেগুলোর সঙ্গে ডাইনোসরের কোনো মিল নেই। বিলুপ্ত ওই প্রাণীর যেসব হাড়গোড় পাওয়া গেছে, তার চেয়েও বহুগুণে ছোট এসব পাখি। অন্যান্য তফাত তো আছেই। বিজ্ঞানী লারসন বলেন, কিছু কিছু ডাইনোসরের সঙ্গে আজকের দিনের পাখির বেশ ভালো রকমের সাদৃশ্য আছে। যেমন এরা দুপায়ে হাঁটে। তাদের শরীরে পালক ছিল। এগুলোর শরীরের আকৃতি ছিল তুলনামূলকভাবে ছোট। একটি পার্থক্য হচ্ছে দাঁত থাকা না থাকা। পাখির মতো দেখতে এসব ডাইনোসরের অনেকেরই তীক্ষ ধারালো দাঁত ছিল। মূলত খাবার হিসেবে পশুপাখি খেতেই তারা এই দাঁত ব্যবহার করত। কিন্তু এগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কিন্তু ওই সব পাখি টিকে গেছে, যেগুলোর লম্বা লম্বা ঠোঁট ছিল। পাখির মতো দেখতে ডাইনোসরের জীবাশ্ম নিয়েই গবেষণা করেছেন এই বিজ্ঞানী। তিন হাজারের বেশি দাঁত তিনি অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করে দেখেছেন। সেগুলোর মাপ নিয়েছেন। বোঝার চেষ্টা করেছেন কোটি কোটি বছর ধরে এসব ডাইনোসরের দাঁতের আকার ও আকৃতিতে ঠিক কী ধরনের পরিবর্তন ঘটেছে।

ভয়ংকর সরীসৃপ

গত শতকে প্রথম ডাইনোসরের ফসিল শনাক্ত করা হয়। ১৮৪২ সালে জীবাশ্মবিদ রিচার্ড ওয়েন প্রথম ডাইনোসরিয়া ট্যাক্সনটির নামকরণ করেন। গ্রিক শব্দ ‘ডিনোস’ ও ‘সরাস’ থেকে ডাইনোসর শব্দের উত্পত্তি। ডিনোস শব্দের অর্থ ভয়ংকর এবং সরাস শব্দের অর্থ টিকটিকি বা সরীসৃপ, যদিও ডাইনোসরেরা আসলে টিকটিকি নয়। এরা আলাদা ধরনের সরীসৃপ, যাদের শারীরিক গঠন ও কার্যকলাপ আধুনিক সরীসৃপদের থেকে আলাদা। বিজ্ঞানীরা ডাইনোসরকে দুই বর্গে ভাগ করেছেন: সরিস্কিয়া ও অরনিথিস্কিকিয়া। নিতম্বের হাড়ের গঠনের ওপর ভিত্তি করে এই বিভাজন।

টিরানোসরাস রেক্স, ডাইনোনিকাস ও ভেলোসির‍্যাপটরের মতো সবচেয়ে পরিচিত ডাইনোসরগুলো সরিস্কিয়া বর্গের অন্তর্ভুক্ত। লম্বা গলার এসব ডাইনোসরের বেশ বড় ও তীক্ষ দাঁত, লম্বা নখ ছিল। সরিস্কিয়ান ডাইনোসরেরা দুই ভাগে বিভক্ত। চার পা-ওয়ালা তৃণভোজীকে বলা হয় সরোপড (Sauropod) ও দুই পা-ওয়ালা মাংসাশী হলো থেরোপড (Theropod)। বর্তমানে জীবিত পাখিরা থেরোপডের বংশধর। থেরোপডরা দুই পায়ে চলত। এরা মাংসাশী, তবে বেশ কিছু প্রজাতির থেরোপড গাছ, মাছ, পোকামাকড়সহ বিভিন্ন ধরনের খাবার গ্রহণের উপযোগী হয়ে পরে অভিযোজিত হয়েছে। তাদের মধ্যে টি. রেক্স ও অ্যালোসরাসের মতো বেশ ভয়ংকর ও পরিচিত ডাইনোসর রয়েছে। জাইগানোটোসরাস ও স্পাইনোসরাসের মতো বড় আকারের থেরোপড শিকার ধরত নাকি সাধারণভাবে মৃতদেহ থেকে খাবার সংগ্রহ করত—তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে। তথ্যপ্রমাণ বলছে, সুবিধাবাদী শিকারি হিসেবে তাদের পরিচিতি ছিল। তারা শিকার ধরে আনত, আবার তাদের চারপাশের প্রাণীও খাবার হিসেবে ভক্ষণ করত। তৃণভোজী সরোপডদের লম্বা মাথা, লম্বা গলা ও লম্বা লেজ ছিল। এখন পর্যন্ত এরাই হলো মাটিতে চলা সবচেয়ে বড় প্রাণী। কিন্তু তাদের মস্তিষ্ক ছিল বেশ ছোট। গাছের লতাপাতাভোজী এসব ভদ্র বিশালাকার প্রাণীর মধ্যে রয়েছে অ্যাপাটোসরাস, ব্রাকিওসরাস ও ডিপ্লোডোকাস।

টি রেক্সকেই সবচেয়ে ভয়ংকর ডাইনোসর হিসেবে মানেন বিজ্ঞানীরা
ছবি: সংগৃহীত

অরনিথিস্কিয়ান ডাইনোসরের মধ্যে রয়েছে কোঁচকানো শিংযুক্ত ট্রাইসেরাটপস, কাঁটাযুক্ত স্টেগোরাস ও বর্মযুক্ত অ্যানকিলোসরাস। ধীর-শান্ত স্বভাবের এসব ডাইনোসর গাছপালা খেত। তৃণভোজী এসব ডাইনোসর সরোপডদের চেয়ে কিছুটা ছোট। মজার বিষয় হলো, পুরো ভূতাত্ত্বিক কালজুড়ে অরনিথিস্কিয়ানরা দুই পা থেকে চার পায়ে পরিবর্তিত হয়েছে কমপক্ষে তিনবার। এরা একত্রে দলবদ্ধ হয়ে বসবাস ও ঘোরাফেরা করত।

ফ্যামিলি ট্রি

এ বছর ডাইনোসরের ফ্যামিলি ট্রি নিয়ে জীবাশ্মবিজ্ঞান জগতে বেশ জোরেশোরে আলোচনা ওঠে। বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার-এ প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, নিতম্বের ভিত্তিতে ডাইনোসরের শ্রেণিবিভাজন সঠিক ছিল না। গবেষকেরা বলছেন, বরং থেরোপড-জাতীয় ডাইনোসররা অরনিথিস্কিয়ান ডাইনোসরের নিকটাত্মীয়। এই দুই গোষ্ঠীর ডাইনোসর (থেরোপড ও অরনিথিস্কিয়ান) মিলে তৈরি করেছে নতুন একটি গোষ্ঠী, যা অরনিথোসেলিডা নামে পরিচিত।

গবেষকদের এমন সিদ্ধান্তের কারণ ছিল থেরোপড ও অরনিথিস্কিয়ানের অনেক অভিন্ন বৈশিষ্ট্য ছিল, যা অন্যান্য ডাইনোসরের ছিল না। তবে যা-ই হোক, গবেষকদের এমন অনুমান আগামী কয়েক বছর ধরে বারবার পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাবে, যতক্ষণ পর্যন্ত জীবাশ্মবিজ্ঞান জগৎ পুরোপুরি স্বীকৃতি না দেয়।

কল্পিত সামদ্রিক ডাইনোসর
ছবি: সংগৃহীত

সামুদ্রিক সরীসৃপ

ডাইনোসরদের যুগে বিশ্বজুড়ে সমুদ্রপৃষ্ঠে অনেক কিছুই ঘটছিল। টুনা ও ডলফিনের আকৃতির ‘ফিশ ফ্লিপার্স’ বা ইকসিপটেরিজিয়াসহ ইখথিওসরাস শিকারিরাও ছিল একই পথে। জুরাসিক যুগের শেষ দিকে এসে সামুদ্রিক সরীসৃপদের এই পরিবারটি অনেকাংশেই বিলুপ্ত হয়ে যায়।

ডাইনোসর ক্লোনিং

জুরাসিক পার্ক ফ্র্যাঞ্চাইজের জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও অসম্ভব না হলেও ডাইনোসরের ক্লোনিং করা একদমই দুরূহ কাজ। ডাইনোসরের ক্লোন করতে গবেষকদের বিলুপ্ত এই প্রাণীর ডিএনএ প্রয়োজন। কিন্তু ডাইনোসরের জীবিত কোনো ডিএনএ কারও সংগ্রহে আছে বলে জানা যায়নি (এখন পর্যন্ত সবচেয়ে পুরোনো এবং প্রমাণিত যে প্রাণীর ডিএনএটি উদ্ধার সম্ভব হয়েছে, তা প্রায় সাত লাখ বছর আগের প্রাচীন কানাডার একটি ঘোড়ার)।

তবে ডাইনোসরের দেহের কিছু কিছু নমুনা সময় পরীক্ষার বিষয়টির বিরুদ্ধেই গেছে। মেসোজোয়িক যুগের বেশ কিছু কোমল টিস্যুসহ আট কোটি বছর আগের একটি ব্রাকিলোফোসরাস ডাইনোসরের রক্তনালি এবং ১৩ কোটি বছর আগের পাখির জীবাশ্ম থেকে প্রোটিন নমুনা সংগ্রহ করতে সমর্থ হয়েছেন গবেষকেরা। তবে এই রক্তনালি ও প্রোটিন প্রাণী ক্লোনিংয়ে কোনো কাজে আসবে না। তবে জীবাশ্ম বিশেষজ্ঞরা প্রাচীন বিলুপ্ত ডিএনএকে সংযোজন করে জীবনে ফিরিয়ে আনা যায় কিনা তা নিয়ে চেষ্টা করছেন।

মুরগির ছানাকে ডাইনোসরে রূপান্তর করার একটি বিপরীতমুখী সমন্বিত প্রচেষ্টা চলছে (মনে রাখতে হবে, পাখিরা থেরোপড ডাইনোসরের উত্তরসূরি), কিন্তু এই গবেষক দলের এখনো অনেক পথ অগ্রসর হওয়া বাকি। তা হলেও বিজ্ঞানের জগতে আজ যা অসম্ভব বলে মনে হয় তা একদিন বাস্তবে রূপ পায়।

লেখক: সাংবাদিক

সূত্র: স্মিথসোনিয়ান ডাইনোসর/ডিকে

বিশেষ দ্রষ্টব্য : লেখাটি বিজ্ঞানচিন্তার আগস্ট ২০১৭ সংখ্যায় প্রথম প্রকাশিত হয়