বিশ্বের প্রাচীন সাতটি আশ্চর্যের মধ্যে এখন শুধু টিকে আছে পিরামিড। মিশরের মরুভূমিতে দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল পিরামিডগুলো শুধু রাজাদের সমাধি নয়, প্রাচীন মানুষের জ্ঞানের এক অদ্ভুত নিদর্শন। এই পিরামিডকে ঘিরেই রয়েছে নানা রহস্য। যেমন প্রাচীনকালে এই বিশাল পিরামিড মানুষ কীভাবে বানাল? এত বড় বড় পাথর তখন কাঁটল কীভাবে। গড়ে ২.৫ টনের প্রায় ২৩ লাখ পাথরের ব্লক ব্যবহার করা হয়েছে পিরামিডে। কোনো ক্রেন বা আধুনিক যন্ত্রপাতি ছাড়া সেগুলো কীভাবে ওরকম উঁচুতে ওঠানো হলো? এগুলো কি মানুষই তৈরি করেছিলেন নাকি কোনো এলিয়েনের কাজ? পাশাপাশি ২০১৭ সালে বিজ্ঞানীরা পিরামিডের মধ্যে একটা বিশাল ফাঁপা কক্ষ আবিষ্কার করেছেন। সেই কক্ষে আসলে কী আছে?
এলিয়েনের কথা উঠল যখন, তাহলে ওদের নভোযানের রহস্যও আর বাদ থাকবে কেন। সসার বা এউএফও মানে অজানা উড়ন্ত বস্তু। এককথায় এলিয়েনের নভোযান। ১৯৪৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কেনেথ আর্নল্ড নামে এক ব্যক্তি দাবি করেন, তিনি আকাশে কিছু চাকতির মতো বস্তু চলতে দেখেছেন। তারপর থেকে ফ্লাইং সসার নিয়ে মানুষের জল্পনা কল্পনা শুরু হয়। একই বছর নিউ মেক্সিকোতে একটা অজানা বস্তুর ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। সে দেশের সেনাবাহিনী জানায়, ওটা কোনো সসারের ধ্বংসাবশেষ। এ কথায় যেন আগুনে ঘি ঢালা হলো। চারদিকে সসার জিনিসটা ছড়িয়ে পড়ল। অনেকেই বিশ্বাস করেন, পৃথিবীতে একাধিকবার এলিয়েনরা এসেছে। কিন্তু এলিয়েন বা সসারের কোনো প্রমাণ আজও কেউ দিতে পারেনি। এরকম কয়েকশ রহস্য নিয়ে এ বই।
১৯৪৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কেনেথ আর্নল্ড নামে এক ব্যক্তি দাবি করেন, তিনি আকাশে কিছু চাকতির মতো বস্তু চলতে দেখেছেন। তারপর থেকে ফ্লাইং সসার নিয়ে মানুষের জল্পনা কল্পনা শুরু হয়।
বইটি খুললেই প্রথমে চোখে পড়বে ‘হারানো আটলান্টিস রহস্য’। প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক প্লেটোর লেখায় প্রথম আটলান্টিসের কথা জানা যায়। খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে প্লেটো টাইমাস ও ক্রিটিয়াস নামে দুটি বই লেখেন। এই বই দুটিতে আটলান্টিসের কথা পাওয়া যায়। এটি ছিল সমুদ্রের মাঝে এক সমৃদ্ধ ও উন্নত সভ্যতা। এই সভ্যতা জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সামরিক শক্তি ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে তখনকার পৃথিবীর বেশির ভাগ সভ্যতার চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিল। প্রায় ১১ হাজার ৬০০ বছর আগে এই সভ্যতার অস্তিত্ব ছিল। তারপর কীভাবে হারিয়ে গেল সেই রহস্যময় ও কিংবদন্তি সভ্যতা? তারচেয়েও বড় প্রশ্ন, আসলেই কি আটলান্টিস নামে পৃথিবীতে কোনো সভ্যতা ছিল, নাকি সবটাই প্লেটোর নৈতিক উপকথা, যা তিনি আদর্শ রাষ্ট্রব্যবস্থা ও তার পতনের গল্প বলতে গিয়ে রচনা করেছিলেন? এটাও আজও রহস্যই রয়ে গেছে।
একনজরে
বিশ্বভরা রহস্যসমগ্র
লেখক: সৌমেন সাহা
প্রকাশক: অনুপম প্রকাশনী
প্রচ্ছদ: ধ্রুব এষ
প্রথম প্রকাশ: ২০২৫
পৃষ্ঠা: ৪৬৪
দাম: ৮০০ টাকা
৪৬৪ পৃষ্ঠার ঢাউস বইটিতে ব্ল্যাকহোল রহস্য, আলেকজান্ডার গ্রেটের সমাধি রহস্য, এরিয়া ৫১, ইয়েতি রহস্য, বাংলার বর্গি রহস্য, আমাজনের হারিয়ে যাওয়া দৈত্যপুরী, অভিশপ্ত পিরামিড, টেলিপোর্টেশন, নাগরাজ রহস্যসহ কয়েক শ রহস্যের সন্ধান পাওয়া যাবে।
বইটি খুললেই প্রথমে চোখে পড়বে ‘হারানো আটলান্টিস রহস্য’। প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক প্লেটোর লেখায় প্রথম আটলান্টিসের কথা জানা যায়। খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে প্লেটো টাইমাস ও ক্রিটিয়াস নামে দুটি বই লেখেন।
তবে কিছু কিছু রহস্য পড়ার পরে মনে হতে পারে, একটু কমতি আছে। কী যেন নেই। যেমন কিং আর্থারের কথাই ধরা যাক। তাঁর সমাধি সম্ভবত সবচেয়ে বড় রহস্য। কিন্তু সে ব্যাপারে এখানে কিছু লেখা নেই। তরবারি এক্সক্যালিবারের ব্যাপারেও লেখা সামান্য। ‘রহস্যময় ও ভূতুড়ে ছবি, যেগুলো আজও অমীমাংসিত’ রহস্যে দাবি করা হয়েছে, কুপার ফ্যামিলির ছবিতে একটা ভূত দেখা যাচ্ছে। কিন্তু ছবির অবস্থা এত করুণ যে কোনোভাবে ছবিতে ভূত বোঝা যাচ্ছে না। আবার কিছু রহস্য এমন যে সেগুলোকে আসলে রহস্য বলা যায় কি না, তা নিয়েও সন্দেহ থেকে যায়।
কয়েক শ রহস্যের মধ্যে কয়েকটা বাদ দিলে বাকিগুলো কিন্তু দারুণ। আর যাদের বিশ্বের বিভিন্ন রহস্য সম্পর্কে জানাশোনা তুলনামূলক কম, তাদের ক্ষেত্রে বইয়ের কোনো রহস্যই কমতি লাগবে না। সাধারণ ধারণা পাওয়া বা রহস্যের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার জন্য বইটি দারুণ।
বইটি প্রকাশ করেছে অনুপম প্রকাশনী। আগ্রহীরা বইটি পাবেন রকমারি, প্রথমাসহ বিভিন্ন অনলাইন-অফলাইন বুকশপে।