মহাকাশের গল্পকথা

 পৃথিবীর প্রাচীনতম বিজ্ঞান জ্যোতির্বিজ্ঞান। পাথরে পাথর ঘষে আগুন জ্বালানোরও আগে মানুষ আকাশের দিকে চোখ তুলে তাকিয়েছে, ভেবেছে গুটি গুটি তারার দল বুকের ভেতরে কেমন করে বয়ে বেড়াচ্ছে মহাজাগতিক আলো। মহাকাশ বার্তার এবারের সংখ্যাটির বড় অংশ জুড়ে আছে সেই নক্ষত্র, কৃষ্ণগহ্বর আর তাকে বোঝার প্রচেষ্টায় সাধারণ আপেক্ষিকতার মহাকাব্যিক ব্যাখ্যা।

বাঙালি বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার সাহা আয়নন সমীকরণ কেমন করে নক্ষত্রের উপাদানগুলোর ব্যাখ্যা দেয়, মানুষ কীভাবে এর হাত ধরে পর্যায় সারণীর বিভিন্ন মৌলের জন্মকথা জানতে পারল ইত্যাদি জানা যাবে সৌমেন সাহার লেখায়।

২০১৯ সালে প্রথম যে কৃষ্ণগহ্বরের ছবি তোলা হয়, তার নানাদিক, কৃষ্ণগহ্বর গবেষণার ইতিহাস ও সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের ভূমিকা নিয়ে লিখেছেন ড. দীপেন ভট্টাচার্য। সেই সঙ্গে কৃষ্ণগহ্বরের আয়ু নিয়ে জামাল নজরুল ইসলামের একটি লেখার অনুবাদও রয়েছে। আছে আবুল বাসারের লেখায় আইনস্টাইন, লাইগো আর মহাকর্ষ তরঙ্গের ইতিকথা।

ড্রেক সমীকরণ বলে, মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে মানুষ ছাড়াও উন্নত সভ্যতাদের থাকার কথা। কোথায় তারা? এ নিয়ে লিখেছেন বিজ্ঞানবক্তা আসিফ। বিগ ব্যাংয়ের ১০-৮ সেকেন্ড পর মহাবিশ্ব যে প্রচণ্ড দশা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গেছে, যার মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে হিগস ক্ষেত্র, যে কারণে কণাদের ভর আছে, তা নিয়ে সবিস্তারে জানা যাবে হিমাংশু করের লেখায়।

১৯৯৪ সালে পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ে ধূমকেতু ‘শুমেকার লেভি’। আর তুঙ্গুসকা বিস্ফোরণ তো বিজ্ঞানীদের কাছে প্রায় এক যুগ ধরে ছিল রহস্যের আবর্তে ঘেরা। এসব রহস্যের সাতকাহন উঠে এসেছে মার্টিন রিজের লেখায়, যোয়েল কর্মকারের অনুবাদে। ওদিকে আরেক রহস্য মেগালিথিক স্থাপত্য স্টোনহেঞ্জ। এই রহস্যের নানাদিক, মহাবিশ্বের প্রাচীনতম প্রতিচ্ছবি ইত্যাদি নিয়ে লিখেছেন শাহনাজ পারভীন পান্না।

আমাদের মহাবিশ্বে কি অন্য মহাবিশ্বের আলো এসে পৌঁছায়? নিঃসঙ্গ গ্রহে কেমন করে প্রাণের সন্ধান করেন বিজ্ঞানীরা? গত প্রায় ৩০ বছর ধরে হাবল টেলিস্কোপ কীভাবে বদলে দিচ্ছে জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান গবেষণার রূপরেখা? জানা যাবে এসব কৌতুহলোদ্দীপক প্রশ্নের জবাব।

সেই সঙ্গে থাকছে মানুষের চন্দ্রজয়ের অন্যতম নেপথ্য কারিগর, মাইকেল কলিন্সের গল্প। অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফি, অ্যাস্ট্রোকমিকস, জ্যোতির্কবিতা, হালের জেমস ওয়েব থেকে শুরু করে দেশের মাটিতে নানারকম বিজ্ঞান আয়োজনসহ রয়েছে আরও অনেক কিছু।

মহাকাশ বার্তা বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞান প্রকাশনাগুলোর একটি। প্রায় তিন দশক ধরে প্রকাশিত হচ্ছে এ পত্রিকাটি। হাঁটি হাঁটি পা পা করে এর ৫৯তম সংখ্যাটি প্রকাশিত হলো মশহুরুল আমিনের সম্পাদনায়। চমৎকার ছবি ও ইলাস্ট্রেশন এবং ৮০ গ্রাম অফসেট কাগজে ছাপা এই বিজ্ঞানবিষয়ক পত্রিকাটির দাম ১০০ টাকা। পাওয়া যাবে দেশের বিভিন্ন অনলাইন ও অফলাইন বইয়ের দোকানে।