মহাবিশ্ব মহাকাশে মহাকাল মাঝে

প্রচ্ছদে এক নভোচারী। দাঁড়িয়ে আছেন লাল এক মরুগ্রহে। প্রচ্ছদ রচনার খোঁজ মিলল সেখানেই—শতাব্দী প্রাচীন এক বিতর্কের কাহিনি। বিতর্কের সৃষ্টি ইউরেনিয়াম ও থোরিয়ামের অর্ধায়ুকে ঘিরে। মৌল দুটির অর্ধায়ু কয়েক শ কোটি বছর। সূর্যের সমতুল্য। সূর্যের শক্তির পেছনে এদের কি কোনো ভূমিকা আছে? কিন্তু এসব মৌল থেকে নিঃসৃত শক্তির পরিমাণ নিতান্ত কম। এ নিয়ে যে বিতর্কের সূচনা, তার মূলে ব্রিটিশ জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানী আর্থার এডিংটন এবং জেমস জিন্স। জিন্স বলছেন, নক্ষত্রের ভেতরে যে পদ্ধতিতে শক্তি তৈরি হয়, তাই নির্ধারণ করে দেয় নক্ষত্রের গঠন কেমন হবে। আর এডিংটন বলছেন পুরো উল্টো কথা। তাঁর মতে, নক্ষত্রের গঠনই ঠিক করে দেয় তার ভেতরে কী বিক্রিয়া হবে। শতাব্দী প্রাচীন এই বিতর্কের মীমাংসা কীভাবে হলো, তার বিস্তারিত নিয়েই এবারের মহাকাশ বার্তার প্রচ্ছদ রচনা।

মহাবিশ্বের সব কিছু ঘোরে, ঘোরে চাঁদও। অথচ পৃথিবীর সঙ্গে এমনভাবে জুড়ে আছে যে ওপাশটা দেখা যায় না। চাঁদের ওই পাশে কি তবে কলঙ্ক আছে? নাকি আরও বিচিত্র কিছু? এ নিয়ে লিখেছেন ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও লেখক বিমান নাথ।

স্টিফেন হকিং বিশ্ব সৃষ্টিরহস্য উন্মোচনের অগ্রযাত্রী। তাঁর পথচলা ও অবদান নিয়ে লিখেছেন বিজ্ঞানবক্তা আসিফ।

আলবার্ট আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত্ব ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, কৃষ্ণগহ্বর বা নিউট্রন তারা কিংবা এরকম বিপুল ভারী বস্তুর সংঘর্ষে সৃষ্টি হয় মহাকর্ষ তরঙ্গ। সেই তরঙ্গ যখন মহাকাষের গহিন গভীরে সৃষ্টি হচ্ছে, তখনো পৃথিবী কেবল গড়ে উঠতে শুরু করেছে। আইনস্টাইনের ভবিষ্যদ্বাণীর প্রায় ১০০ বছর পর মানুষ নির্মাণ করেছে লাইগো। ঠিক সে সময় এই মহাজাগতিক তরঙ্গ এসে হাজির হয়েছে আমাদের শনাক্তকরণ যন্ত্রে। মহাজাগতিক এই রহস্য উন্মোচনের নানা দিক নিয়ে লিখেছেন বিজ্ঞান লেখক ও অনুবাদক আবুল বাসার।

পাতায় পাতায় বিজ্ঞানের নানা রহস্য নিয়ে দারুণ সব আলোচনা। জ্যোতির্কবিতা যেমন রয়েছে, তেমনি আছে বিজ্ঞানী গ্যালিলিও এবং গণিতবিদ সোফি জার্মেইনের জীবনী। আছে পাই নামের সুপারস্টার সংখ্যাটির কথা। আছে মঙ্গল নিয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন ও বাস্তবতার আলোচনা, কার্যকারণ কিংবা আগের দিনের সিআরটি টেলিভিশনের ঝিরঝিরিতে বিগ ব্যাংয়ের প্রমাণ; সুস্মিতা জাফরের বিজ্ঞান কল্পকাহিনি আছে, আছে চিলমারীতে বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল এসোসিয়েশন আয়োজিত সূর্য উৎসবের কাহিনি।

বিজ্ঞানের জগতে ডুব দিতে আগ্রহীদের জন্য মহাকাশ বার্তা এমনই সব চমৎকার অভিজ্ঞতা নিয়ে হাজির হয়েছে আবারও। মহাকাশ বার্তা বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞান প্রকাশনাগুলোর একটি। প্রায় তিন দশকের বেশি সময় ধরে প্রকাশিত হচ্ছে এ পত্রিকা। হাঁটি হাঁটি পা পা করে এর ৬০তম সংখ্যাটি এবার প্রকাশিত হলো মশহুরুল আমিনের সম্পাদনায়। চমৎকার ছবি ও ইলাস্ট্রেশন এবং ৮০ গ্রাম অফসেট কাগজে ছাপা এই বিজ্ঞানবিষয়ক পত্রিকাটির দাম ১০০ টাকা। পাওয়া যাবে দেশের বিভিন্ন অনলাইন ও অফলাইন বইয়ের দোকানে।