লজিক ও বুদ্ধির খেলা সুডোকু

বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সাবেক সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক প্রয়াত জামিলুর রেজা চৌধুরী প্রতিদিন সকালে প্রথম আলোয় প্রকাশিত সুডোকু মেলাতেন। কোনো সুডোকুতে ভুল হলে প্রথম আলো অফিসে ফোন করে জানাতেন, আজকের সুডোকুতে ভুল আছে!

সুডোকু বুদ্ধির খেলা। মস্তিস্কে শান দিতে এই খেলার জুড়ি নেই। তবে এটি খুব প্রাচীন খেলা নয়। এই খেলার ধারণা বেশ পুরোনো হলেও আধুনিক সুডোকু এসেছে ১৯৭৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা থেকে। তবে সুডোকু জনপ্রিয় করার বেশির ভাগ কৃতিত্ব জাপানের মাকি কাজির। মজার ব্যাপার হলো, বুদ্ধির খেলা সুডোকু বইয়ের সংকলক ও সম্পাদকের নামও কাজী—কাজী আকাশ।

আপনি যদি সুডোকু মেলাতে পছন্দ করেন, তবে বইটি আপনার জন্য। কেউ যদি সুডোকু শিখতে চান, তবে বইটি প্রাথমিক গাইড হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। সব ধরনের পাঠকের জন্য এই বইয়ে কিছু সুডোকু আছে।

সুডোকুর ইতিহাস আছে শুরুতে। এরপর আছে কীভাবে জাপানে, পরে পুরো বিশ্বে জনপ্রিয় হয়ে উঠল এই খেলা। আগেই বলেছি, জাপানের মাকি কাজির হাত আছে সুডোকুকে জনপ্রিয় করে তোলার পেছনে। তিনি দুটি নিয়ম চালু করার পর সুডোকু ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। প্রথম নিয়মটি বলছি না। বুদ্ধির খেলা সুডোকু বই থেকে আপনি নিয়মটি জানতে পারবেন। দ্বিতীয় নিয়মটি হলো, সুডোকুতে কিছু সংখ্যা দিয়ে দেওয়া হয়। ৯ বাই ৯ বর্গাকার ঘরে মোট ৮১টি সংখ্যা থাকে। এর মধ্যে কাউকে সুডোকু করতে দিলে আপনি সর্বোচ্চ ৩২টি সংখ্যা দিয়ে দিতে পারবেন। এর বেশি দিতে পারবেন না। ৩২ থেকে যত কম সংখ্যা দেওয়া হবে, সুডোকু তত কঠিন হবে।

একনজরে

বুদ্ধির খেলা সুডোকু

লেখক: কাজী আকাশ

প্রকাশক: অনুপম প্রকাশনী

প্রচ্ছদ: আব্দুল্লাহ আল মাকসুদ

প্রথম প্রকাশ: ২০২৪

পৃষ্ঠা: ১৭৬

মূল্য: ২০০ টাকা

বাংলা ভাষায় সুডোকু নিয়ে খুব বেশি বই নেই। প্রথম দেখায় জটিল মনে হলেও সুডোকু সমাধান করা বেশ সহজ। এ জন্য দরকার কিছুটা ধৈর্য্য ও চিন্তাশক্তি।

সুডোকু জনপ্রিয় হওয়ার পদ্ধতি নিয়ে আলোচনার পরে আছে মেলানোর নিয়ম। নতুন করে সুডোকু মেলাতে শিখলে নিয়মটুকু পড়ে সরাসরি সুডোকু মেলাতে নেমে পড়তে পারবেন। সে জন্য দেওয়া আছে সুডোকুর ২০০ সমস্যা। সমস্যার ধরন আলাদা করা আছে। সহজ, মধ্যম ও কঠিন—তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে সমস্যাগুলো। বইয়ের শেষ অংশে সমাধানও দেওয়া আছে। মগজে শান দিতে চাইলে বইটি নিয়ে বসে যেতে পারেন কলম বা পেন্সিল নিয়ে। ব্যাস!

বাংলা ভাষায় সুডোকু নিয়ে খুব বেশি বই নেই। প্রথম দেখায় জটিল মনে হলেও সুডোকু সমাধান করা বেশ সহজ। এ জন্য দরকার কিছুটা ধৈর্য্য ও চিন্তাশক্তি। সকালে ঘুম থেকে উঠে শুয়ে শুয়ে কিংবা সকালের নাস্তা খেতে খেতেও সুডোকুর সমাধান করা সম্ভব। রাস্তার জ্যামে বসে বিরক্ত না হয়ে বসে বসে সুডোকু মেলানো যায়। সুডোকু মিলিয়ে বাড়বে আপনার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ও দক্ষতা।

বইতে চোখে পড়ার মতো একটাই ত্রুটি আছে। সুডোকুগুলো বর্গাকার না হয়ে একটু আয়তাকার হয়ে গেছে। তবে এতে সুডোকু মেলানোর আনন্দ কমবে না মোটেও।