প্রশ্নে প্রশ্নে বিজ্ঞান শেখা

মাথায় কত প্রশ্ন আসে, দিচ্ছে না কেউ জবাব তার—

সবাই বলে, “মিথ্যে বাজে বকিস্‌নে আর খবরদার !”

অমন ধারা ধমক দিলে কেমন করে শিখব সব?

বলবে সবাই, “মুখ্যু ছেলে”, বলবে আমায় “গো গর্ধভ !”

প্রশ্ন করতে গিয়ে বরাবরই সমস্যায় পড়ে নতুন প্রজন্ম। কিন্তু প্রশ্ন না করলে সে জানবে কীভাবে! সমস্যাটি দারুণভাবে উঠে এসেছে সুকুমার রায়ের বিষম চিন্তা ছড়ায়। প্রশ্ন করার বিষয়টি স্বাভাবিক তো বটেই, একে বরং আরও উৎসাহিত করা প্রয়োজন। কারণ, কৌতুহল ও প্রশ্নের জবাব খুঁজেই এগিয়ে যায় বিজ্ঞান। নতুন প্রজন্মকে কৌতুহলী করে তোলার পথে আরেকধাপ এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যেই প্রকাশিত হয়েছে প্রশ্নোত্তরে বিজ্ঞানের কী ও কেন। লেখক আব্দুল কাইয়ুম।

বইটিতে ৭টি অধ্যায় আছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, তাপবিজ্ঞান, গণিত, পৃথিবী ও মহাবিশ্ব, মানুষ ও প্রাণিজগৎ, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি এবং সাধারণ জ্ঞান—অধ্যায় হলেও এগুলো মূলত বিষয়ের নাম। সংশ্লিষ্ট বিষয়ের মজার সব প্রশ্ন জায়গা পেয়েছে প্রতিটি অধ্যায়ে। কিছু উদাহরণ দিলে বিষয়টা ভালো বোঝা যাবে।

‘শরীরের ত্বক কি স্মার্টফোনের টাচস্ক্রিনের মতো কাজ করে?’ ‘ছায়া কালো কেন?’ ‘চোখের পানি লবনাক্ত কেন?’ ‘আগুন পদার্থ নাকি শক্তি?’—প্রথম অধ্যায়ের কয়েকটি প্রশ্ন। ‘সূর্য, নক্ষত্র এবং মহাবিশ্বে যা কিছু আছে, সবই ঘুরছে কেন?’ ‘শুক্র গ্রহ কেন উল্টো দিকে ঘোরে?’—এসব প্রশ্ন আছে ‘পৃথিবী ও মহাবিশ্ব’ অধ্যায়ে।

ভূমিকায় লেখক আব্দুল কাইয়ুম ব্যাখ্যা করেছেন, এ ধরনের প্রশ্নের জবাব জানার গুরুত্ব। আমরা যখন কোনো কথা বলি, বেশিরভাগ মানুষ ডান কান এগিয়ে দেয়। কেন, সে ব্যাখ্যা আছে ভূমিকায়। অথচ এ ব্যাখ্যা না জানলে কেউ হয়তো বলতে পারেন, মানুষটি বাঁ কানে কম শোনেন। বিষয়টি কিন্তু আসলে তা নয়। এর পেছনে আছে বিজ্ঞান। ব্যাখ্যাটি আর দিলাম না, আগ্রহী পাঠক বই হাতে নিলেই পেয়ে যাবেন উত্তর।

প্রতিদিনের জীবনের এরকম ছোট ছোট, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলো নিয়ে এ বই। জবাব দেওয়া হয়েছে একদম সহজ ভাষায়, সবার বোঝার মতো করে। এসব জবাব মেটাবে অনেক কৌতুহল। আবার উস্কেও দেবে, শেখাবে ভাবতে।

'প্রশ্নোত্তরে বিজ্ঞানের কী ও কেন'-এর প্রচ্ছদ
কাজী আকাশ

আব্দুল কাইয়ুম বিজ্ঞানবিষয়ক মাসিক ম্যাগাজিন বিজ্ঞানচিন্তার সম্পাদক। বরাবরই তাঁর লেখায় সবার বোঝার মতো ব্যাখ্যা দেওয়ার বিষয়টি প্রাধান্য পায়। এ বইটিও তার ব্যতিক্রম নয়। প্রতিটি ব্যাখ্যা ছোট করে, অল্প কথায় দেওয়া। চট করে পড়ে ফেলা যায়। আবার কেউ চাইলে সংগ্রহেও রাখতে পারবেন। যেকোনো প্রশ্ন মাথায় এলেই খুঁজে দেখতে পারবেন মলাট উল্টে।

শিশু-কিশোর ও নতুন প্রজন্মের জন্য বেশ দারুণ একটি বই। প্রকাশিত হয়েছে প্রথমা থেকে। পাওয়া যাবে বইমেলায় প্রথমার প্যাভিলিয়নে এবং অনলাইন-অফলাইন বিভিন্ন বুকশপে।

লেখক: সহসম্পাদক, বিজ্ঞানচিন্তা