করোনার আদ্যোপান্ত

করোনা অতিমারি একসময় মানুষের জীবনকে অতিষ্ট করে তুলেছিল। সারা বিশ্বে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে এর প্রকোপে। তবে এখন সে সমস্যা নেই। কমেছে করোনার দৌরাত্ম্য। তবে এখনো একে সমূলে উৎপাটন করা যায়নি। পাঁচ বছর হয়ে গেলেও এ ভাইরাসের সব রহস্য উন্মোচন করতে পারেনি বিজ্ঞানীরা। করোনার ভয়াবহতা কমলেও নতুন করে আবার সংক্রমিত হতে দেখা যাচ্ছে। কারণ করোনা ভাইরাস কিছুদিন পর পর নিজের রূপ বদলাতে পারে। যেমন জেন-জেড (যাদের বয়স এখন ৭-২৪ বছর) তরুণদের করোনা আক্রমণের হার কম ছিল। বলতে গেলে তাঁদের করোনা আক্রমণ করতে পারত না। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, এই জেনারেশনকেও করোনা আক্রান্ত করছে।

আসলে করোনা সাধারণ জ্বরের মতো একটা ভাইরাস বাহিত রোগ। আগে মানুষের জ্বর হলে আর রেহাই ছিল না। অনেকেই কয়েক দিনের মধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ত। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কারণে জ্বরের দৌরাত্ম্য কমেছে। আবিষ্কৃত হয়েছে জ্বরের ওষুধ। এখন আর মানুষ জ্বরকে পাত্তাই দেয় না। এক দুইটা প্যারাসিটামল খেয়েই জ্বরকে কাবু করতে পারে। করোনাও একইরকম। শুরুতে টিকা ছিল না বলে লাখে লাখে মানুষ মরেছে। এখন টিকা আবিষ্কার হওয়ায় আগের মতো ভয় আর নেই। মানুষ আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে। তবে পৃথিবী থেকে করোনা পুরোপুরি চলে যায়নি। যাবেও না কোনোদিন। ওই জ্বরের মতো থেকে যাবে পৃথিবীতে। হয়তো ভবিষ্যতে সাধারণ নাপার মতো একটা ট্যাবলেট খেলেই করোনাও সেরে যাবে। 

বইয়ে কিছু ইন্টারেস্টিং প্রশ্নের উত্তর আছে। যেমন করোনাকালে অনেক মানুষের ভুলে যাওয়া রোগ হয়েছে। অর্থাৎ হয়ত একসঙ্গে কয়েক বন্ধু মিলে আড্ডা দিচ্ছেন। একজন বন্ধু সেখানে উপস্থিত নেই। কিন্তু কে যে উপস্থিত নেই, তার নামটা কিছুতেই মনে করতে পারছেন না।

করোনার এসব বিষয় নিয়েই এবারের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞানচিন্তার সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুমের লেখা বই করোনা: এ টু জেড। এ বইতে আপনি করোনা সম্পর্কিত সব তথ্য পাবেন। করোনা কীভাবে, কোথা থেকে এলো, মানুষ কীভাবে করোনা কালে সংগ্রাম করেছে, করোনার টিকা কীভাবে আবিষ্কার হলো, এখন করোনা পরিস্থিতি কি, ভবিষ্যতে কী করোনা আবার আক্রমণ করতে পারে, পারলেও তা কি ২০১৯ সালের মতো ভয়াবহ হবে—এসব প্রশ্নের উত্তর পাবেন এ বইয়ে।

পাশাপাশি বইয়ে কিছু ইন্টারেস্টিং প্রশ্নের উত্তর আছে। যেমন করোনাকালে অনেক মানুষের ভুলে যাওয়া রোগ হয়েছে। অর্থাৎ হয়ত একসঙ্গে কয়েক বন্ধু মিলে আড্ডা দিচ্ছেন। একজন বন্ধু সেখানে উপস্থিত নেই। কিন্তু কে যে উপস্থিত নেই, তার নামটা কিছুতেই মনে করতে পারছেন না। আবার হয়ত শ্রেণিকক্ষে আছেন, শিক্ষকের চেহারা মাথায় থাকলেও নামটা কিছুতেই মনে পড়ছে না। এরকম সমস্যায় অনেকে পড়েছেন, বিশেষ করে বয়স্করা। কেন এমনটা হয়, সে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন লেখক।

আবার করোনার শুরুতে বাংলাদেশে একটা ভুল তথ্য ভাইরাল হয়েছিল। শীতপ্রধান দেশে করোনার প্রকোপ বেশি। কিন্তু বাংলাদেশে তো আর শীতপ্রধান দেশ নয়। এখানে করোনা এসে টিকতে পারবে না। গরমে মারা যাবে। শুনলে হাস্যকর মনে হলেও অনেককে এ কথা বলতে শুনেছি। আসলেই কি গরমে করোনা মারা যায় বা শীতপ্রধান দেশে করোনার প্রকোপ বেশি? উত্তর আছে বইয়ে।

একনজরে

করোনা: এ টু জেড

লেখক: আব্দুল কাইয়ুম

মূল্য: ৪০০ টাকা

পৃষ্ঠা: ১৯২

প্রকাশক: দ্যু প্রকাশন

প্রথম প্রকাশ: বইমেলা, ২০২৪

বইটি মোট দুটি ভাগে সাজানো হয়েছে। কোভিড মহামারী সম্পর্কিত পরিস্থিতি ও চলতি কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটা পর্ব। অন্য পর্বে আছে কোভিড মহামারীর শুরুর কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা।

বইটি মোট দুটি ভাগে সাজানো হয়েছে। কোভিড মহামারী সম্পর্কিত পরিস্থিতি ও চলতি কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটা পর্ব। অন্য পর্বে আছে কোভিড মহামারীর শুরুর কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে ২০১৮ সাল ও এর আগে-পরের কোভিড পরিস্থিতি।

লেখক আব্দুল কাইয়ুম প্রাই দুই যুগ ধরে মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করতে কাজ করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সাল থেকে নিয়মিত প্রকাশ করছেন মাসিক ম্যাগাজিন বিজ্ঞানচিন্তা। ২০-এর অধিক বিজ্ঞানবিষয়ক বই লিখেছেন। করোনাকালে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত লিখেছেন দৈনিক প্রথম আলো ও বিজ্ঞানচিন্তায়। সেই লেখাগুলো এবং তার সঙ্গে আরও নতুন তথ্য যুক্ত করে দুই মলাটে এই বই প্রকাশ করেছে দ্যু প্রকাশন। করোনার এ টু জেড জানতে বইটি সংগ্রহে রাখতে পারেন।

বইটি দেশের বিভিন্ন অনলাইন ও অফলাইন বুকশপে পাওয়া যাচ্ছে।