ছারপোকা তাড়াব কীভাবে?

ছারপোকার যন্ত্রণা এমনকি বিলাত–আমেরিকার মতো দেশেও আছে। আমাদের দেশে তো বটেই, এমনকি উন্নত দেশগুলোর হোটেলের বিছানায়ও ছারপোকা থাকে। সোফায় বসবেন, কুট কুট করে কামড়াবে। এই সর্বব্যাপী সমস্যা নিয়ে মাঝেমধ্যে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেখা যায়। কিন্তু কেউ উল্লেখযোগ্য সমাধান দিতে পারে না। ছারপোকা কেন দমন করা যায় না? এর অন্যতম একটি কারণ হলো, এরা খুব সহজেই কীটনাশক–সহনীয় হয়ে উঠতে পারে। বাসে, ট্রেনে এমনকি অ্যারোপ্লেনের আসনগুলোতে ছারপোকা থাকতে পারে। দীর্ঘ পথে ভ্রমণের পর বাসায় যখন যাবেন, ছারপোকাও যাবে। এরা বালিশের কোনায় বা বিছানার নিচে ঘাপটি মেরে থাকে। ঘুমিয়ে পড়লে বেরিয়ে এসে আমাদের রক্ত চোষা শুরু করে। ডিডিটির মতো বিষাক্ত পাউডারে হয়তো এরা মারা পড়ে। কিন্তু সারা বিশ্বে এই কীটনাশকের ব্যবহার নিষেধ। কারণ ডিডিটি থেকে ক্যানসার হতে পারে। কম শক্তির কীটনাশকে কাজ হয় না। ছারপোকা মারার অব্যর্থ ওষুধ বলে বাজারে যা বিক্রি করা হয়, ওগুলো ব্যবহার করা বিপজ্জনক। কারণ এতই বিষাক্ত যে শুধু ছারপোকাই না, ব্যবহারকারী মানুষের জীবনও বিপন্ন হতে পারে। ছারপোকা কীভাবে কীটনাশক–সহনীয় হয়ে উঠতে পারল, সে সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা বলেন, ওদের গায়ের ছাল ক্রমেই এত পুরু হয়ে উঠেছে যে সহজে পোকা মারার ওষুধ শরীরের ভেতর ঢুকতে পারে না। আর দ্বিতীয়ত, ওদের বিপাক প্রক্রিয়ার প্রতিরোধদক্ষতা। ওদের পেটে বিষ নিষ্ক্রিয় করার দক্ষতাসম্পন্ন একধরনের জৈবরাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হয়। ফলে এখন আর প্রচলিত ওষুধে কাজ হয় না। এ বিষয়ে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, সায়েন্স টাইমস–এ (১ জুলাই ২০১৯) বিস্তৃতভাবে লেখা হয়েছে। গবেষকেরা নতুন ধরনের ওষুধ বের করার চেষ্টা করছেন। বিশেষভাবে প্রাকৃতিক কীটনাশকে কাজ হয় কি না, সে রকম কিছু আবিষ্কারের চেষ্টা চলছে। দেখা গেছে, বিউভেরিয়া ব্যাসিয়ানা (Beauveria bassiana) নামের একধরনের ফাঙ্গাসে কাজ হয়। এ রকম একটি ওষুধ বাজারে আসছে।