ফুটবল গোল কেন?

মূলত দুটি কারণে ফুটবল গোল। একটি বায়ুগতিবিদ্যা বা অ্যারোডাইনামিকস এবং দ্বিতীয়টি খেলার গতি ও ফুটবল শটের লক্ষ্য নিশ্চিত করা। গোলাকার হওয়ায় সজোরে শট মারার পর ফুটবলের ওপর বায়ুর বাধা সবচেয়ে কম হয়। তা ছাড়া বাতাসের গতিবেগ ও দিক হিসাবে নিয়ে কায়দা করে কিক মেরে ফুটবলে এমন একটি ঘূর্ণন সৃষ্টি করা যায়, যার ফলে বলটি প্রায় উপবৃত্তাকার পথে ঘুরে হঠাৎ গোলপোস্টে ঢুকে পড়ে। গোলকিপার হতভম্ব হয়ে যান। গোলই তো ফুটবলের প্রাণ। অ্যারোডাইনামিকসের সুফল এটা। দ্বিতীয়ত, গতিই হলো ফুটবলের মূল আকর্ষণ। এক গোলপোস্ট থেকে গোলকিপার শট মারলেন, সেটা প্রায় অপর প্রান্তের গোলপোস্টের কাছে চলে গেল। মাঠের সব খেলোয়াড় ছুটছেন তার পেছনে। প্রতিপক্ষের গোলপোস্টের সামনে ড্রপ খাওয়ার পরই চৌকস স্ট্রাইকার সেটা পায়ে পায়ে ক্যারি করে নিয়ে গেলেন একেবারে গোলপোস্টের সামনে।

গ্যালারিতে প্রবল উত্তেজনা। এই বুঝি গোল হলো! এখন ফুটবলটি যদি গোলাকার না হয়ে ত্রিভুজাকার বা চৌকোনা হয়। তাহলে কি মাটিতে ড্রপ খাওয়ার পর সেই ফুটবল আর সামনে এগিয়ে যেত পারবে? নাকি শট মারার পর ফুটবল কোন দিকে ছুটবে, সেটা কেউ বলতে পারবে? তিনি হয়তো মারলেন গোলপোস্ট লক্ষ্য করে, আর ফুটবল চলে গেল বাঁ পাশের কর্নার পয়েন্টে! এর চেয়ে হতাশাজনক অবস্থা আর কী হতে পারে! ফুটবল গোলাকার বলেই এমন উদ্ভট পরিস্থিতিতে পড়তে হয় না। খেলোয়াড় ফুটবল অনায়াসে মাঠে গড়িয়ে নিয়ে যান। ড্রিবল করেন। প্রতিপক্ষকে ঘোল খাওয়ান। তারপর গোল! দর্শকেরাও এই গতির সঙ্গে প্রবল উত্তেজনা অনুভব করেন। প্রায় একই ধরনের কারণে শুধু ফুটবল নয়, ক্রিকেট, হকি, টেনিস, বাস্কেটবল, পিংপং সব খেলার বলই গোলাকার। তবে রাগবি বল একটু লম্বাটে গোল। এর মূল কারণ, এই খেলায় বলটি প্রধানত হাতে ধরে দৌড়ে মাঠ পার হতে হয়। এ জন্য নারকেলের আকারের গোল বল উপযুক্ত।