নিউট্রন কেন চার্জশূন্য

১৯৩২ সালে ব্রিটিশ পদার্থবিদ জেমস চ্যাডউইক নিউট্রন আবিষ্কার করেন। নিউট্রন থাকে পরমাণুর নিউক্লিয়াসে। সেখানে তার সঙ্গী প্রোটন। নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ঘোরে ইলেকট্রন নামের ক্ষুদ্র এক কণা। তখন মনে করা হতো নিউট্রন, প্রোটন আর ইলেকট্রনই প্রকৃতির তিন মূল কণিকা। এই তিন কণিকা দিয়েই প্রকৃতির সব বস্তু তৈরি।

কিন্তু ১৯৬৪ সালে আমেরিকান পদার্থবিদ মারে গেলম্যান শোনালেন কোয়ার্ক নামের আরেক ক্ষুদ্র কণার গল্প। কোয়ার্ক প্রোটন কিংবা নিউট্রনের চেয়েও ছোট। সত্যি বলতে কি, কোয়ার্ক দিয়েই তৈরি প্রোটন আর নিউট্রন। মোট ছয় রকম কোয়ার্ক আছে প্রকৃতিতে। এদের মধ্যে দুটি হলো আপ আর ডাউন কোয়ার্ক।

আরও পড়ুন

দুটি আপ কোয়ার্ক আর একটি ডাউন কোয়ার্ক মিলে তৈরি করে প্রোটন। অন্যদিকে দুটি ডাউন কোয়ার্ক আর একটি আপ কোয়ার্ক দিয়ে নিউট্রন তৈরি হয়।

মূল কণিকাদের চার্জ থাকে। কোয়ার্কেরও আছে। ইলেকট্রনের চার্জ -১। ঋণাত্মক কিন্তু পূর্ণ সংখ্যা। কোয়ার্কদের চার্জ পূর্ণ সংখ্যা নয়। আপ কোয়ার্কের চার্জ +২/৩ আর ডাউন কোয়ার্কে চার্জ -১/৩। নিউট্রনে দুটি ডাউন কোয়ার্কের ঋণাত্মক ও একটি আপ কোয়ার্কের ধনাত্মক চার্জের যোগফল শূন্য (-১/৩-১/৩+২/৩ = ০)। অর্থাত্ নিউট্রনের ভেতর আপ আর ডাউন কোয়ার্কের ধনাত্মক চার্জ পরস্পরকে কাটাকাটি করে দেয়। এ কারণে নিউট্রন চার্জশূন্য। তাই নিউট্রন কোনো বৈদ্যুতিক আকর্ষণ ও বিকর্ষণ ক্রিয়ায় অংশ নেয় না।

*লেখাটি ২০১৭ সালে বিজ্ঞানচিন্তার মার্চ সংখ্যায় প্রকাশিত