বার্কেলিয়াম শব্দটি যেভাবে পেলাম

নতুন কিছু আলাদাভাবে চিহ্নিত করাসহ নানা কারণেই নাম দিতে হয়। বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও কথাটি সত্য। এসব নামের পেছনেও লুকিয়ে থাকে মজার ইতিহাস

১৯৪০ সালের দিকে মার্কিন পরমাণু গবেষণা কর্মসূচিতে কাজ করেছিলেন একদল বিজ্ঞানী। সে কর্মসূচিতে অর্থ বরাদ্দ ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ফলে জন্ম নেয় ম্যানহাটন প্রজেক্ট। এই প্রজেক্টেই পরমাণু বোমা বানানো হয়েছিল। এসব গবেষণা ও প্রজেক্টের কারণে বেশ কিছু ভারী মৌল সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারেন বিজ্ঞানীরা। এসব মৌল সাধারণত প্রকৃতিতে পাওয়া যায় না। বরং তা তৈরি হয় পারমাণবিক চুল্লির ভেতর। পর্যায় সারণিতে অন্তর্ভুক্ত এসব মৌলকে বলা হয় ট্রান্সইউরেনিয়াম এলিমেন্ট। অর্থাৎ পর্যায় সারণিতে ইউরেনিয়ামের পরের মৌলগুলোকে এ নামে ডাকা হয়। এ মৌলগুলো ইউরেনিয়ামের চেয়ে ভারী। এদের পারমাণবিক সংখ্যা ৯২-এর বেশি। এ পর্যন্ত ২৬টি ট্রান্সইউরেনিয়াম মৌল আবিষ্কৃত হয়েছে।

১৯৪৯ সালের ডিসেম্বরে এ ধরনের পঞ্চম মৌলটি আবিষ্কৃত হয় যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলিতে। পদার্থবিদ গ্লেন সিবর্গের নেতৃত্বে ৬০ ইঞ্চির সাইক্লোট্রন ব্যবহার করে আমেরিসিয়াম-২৪৯ মৌল লক্ষ্য করে নিউট্রন কণা ছোড়া হয়েছিল। বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে এই প্রক্রিয়া। এভাবে যে মৌল পাওয়া গেল, তার পরিমাণ ছিল খুবই সামান্য। প্রায় অদৃশ্য বলা চলে। এই মৌলের নাম দেওয়া হলো বার্কলির নামানুসারে—বার্কেলিয়াম।

এটা একটা তেজস্ক্রিয় মৌল। এর প্রতীক Bk। পারমাণবিক সংখ্যা ৯৭। বার্কেলিয়ামের ২০টি আইসোটপের কথা জানা গেছে। মৌলটির পর্যাপ্ত নমুনা না থাকায় এর সম্পর্কে জানা গেছে খুব কম। ১৯৬৭ সালে প্রায় ১ গ্রাম বার্কেলিয়াম তৈরি করা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ওক রিজ ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে। তার দাম ধরা হয়েছিল প্রতি মাইক্রোগ্রাম ১৮৫ মার্কিন ডলার। বৈজ্ঞানিক গবেষণা ছাড়া বার্কেলিয়ামের অন্য কোনো ব্যবহারের কথা জানা যায়নি।