পেট্রোলিয়াম: মানবসভ্যতার প্রধান রাসায়নিক

কোন রাসায়নিক পদার্থ বর্তমান সভ্যতাকে সচল রাখতে সবচেয়ে বেশি জরুরি? একটু ঘাঁটাঘাঁটি করলে উত্তরটা পাওয়া কঠিন হবে না। পেট্রোলিয়াম সবচেয়ে জরুরি, আক্ষরিক অর্থেই আমাদের সভ্যতাকে সচল রাখে পেট্রোলিয়াম। গাড়ি চলে, প্লেন চলে, জাহাজ চলে, কলকারখানার চাকা চলে, এমনকি আমাদের বাসার পাখাও চলে এই পেট্রোলিয়ামের গুণেই। যদিও বেশ কিছু বিকল্প আছে, কিন্তু পেট্রোলিয়ামই সবচেয়ে সহজলভ্য, সবচেয়ে সাশ্রয়ী, সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য। নির্ভরযোগ্য পড়েই হয়তো আপনার মনে একটু খচখচানি শুরু হয়েছে, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পেট্রোলিয়ামকে নির্দ্বিধায় নির্ভরযোগ্য বলা একটু কঠিন। তবে অন্য কোনো উৎস আসলে এই নির্ভরতা দিতে পারে না। কেন পারে না, আমরা একটু পরই বুঝতে চেষ্টা করব। তার আগে অন্য আরেকটা রাসায়নিক পদার্থের কথা জানা যাক।

পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ওষুধের একটা অ্যাসপিরিন। বছরে প্রায় ১০ হাজার কোটি পিস ব্যবহৃত হয় বিশ্বজুড়ে। গড়ে একজন মানুষ খায় ১৪টা করে। এই অ্যাসপিরিনের উৎস কী? আপনি যদি অ্যাসপিরিন আবিষ্কারের গল্প পড়েন, তাহলে দেখবেন, প্রথম অ্যাসপিরিন বানানো হয় উইলোগাছের বাকল থেকে। প্রতিবছর অ্যাসপিরিন দরকার ৪০ কোটি কেজির বেশি। এত অ্যাসপিরিনের জন্য কত উইলোগাছ দরকার? সে হিসাব না করলেও বুঝতে নিশ্চয় অসুবিধা হচ্ছে না, উইলোগাছের যথেষ্ট অ্যাসপিরিন জোগান দিতে পারার কথা নয়। রসায়নবিদেরা তাই অন্য উপায় খুঁজে বের করেছেন অ্যাসপিরিনের।

অ্যাসপিরিনের গালভরা এক রাসায়নিক নাম আছে। অ্যাসিটাইল স্যালিসাইলিক অ্যাসিড। হ্যাঁ, এটা একটা অ্যাসিড বটে। অ্যাসিটাইল স্যালিসাইলিক অ্যাসিড বানানো সম্ভব স্যালিসাইলিক অ্যাসিড থেকে। স্যালিসাইলিক অ্যাসিড বানানো যায় আবার ফেনল থেকে। ফেনল বানানো যায় ক্লোরোবেনজিন থেকে। আর ক্লোরোবেনজিন বানানো যায় বেনজিন থেকে। এতগুলো রাসায়নিকের নাম নিশ্চয় মনে রাখতে কষ্ট হচ্ছে, সহজে মনে রাখুন, বেনজিন থেকে বেশ কয়েক ধাপ পেরিয়ে আমরা বানাতে পারি অ্যাসপিরিন। তাই হাতের কাছে বেনজিন থাকলে কিছু রাসায়নিক বিক্রিয়া করে অ্যাসপিরিন বানানো কঠিন নয়। উইলোগাছের চেয়ে যদি সহজ হয় বেনজিন পাওয়া, তাহলেই আমাদের অ্যাসপিরিন বানানোর সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। এখন বেনজিন পাব কোথায় আমরা?

নোবেল পুরস্কারের প্রবর্তক আলফ্রেড নোবেলের আবিষ্কার করা বিস্ফোরক ডিনামাইট। ডিনামাইটের গুরুত্বপূর্ণ অংশ নাইট্রোগ্লিসারিন, যা আসে গ্লিসারিন থেকে। গ্লিসারিনের উৎস আবার তিমির তেল।

বেনজিন পাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় পেট্রোকেমিক্যাল। খনি থেকে যখন পেট্রোকেমিক্যাল উত্তোলন করা হয়, তা খুব একটা বিশুদ্ধ থাকে না। অপরিশোধিত তেল বলি আমরা অনেক সময়, অন্য নাম ক্রুড অয়েল। এই তেল পরিশোধনের জন্য বিশাল বিশাল ইন্ডাস্ট্রি আছে, বাংলাদেশে যেমন আছে ইস্টার্ন রিফাইনারি। অপরিশোধিত তেলের নানা রকমফের হয় খনিভেদে। কমবেশি ৪৫ শতাংশ পাওয়া যায় গ্যাসোলিন, ২৯ শতাংশ ডিজেল। বাকিটা নানারকম রাসায়নিক পদার্থ। অন্য রাসায়নিক পদার্থের মধ্যে মোটামুটি ২ দশমিক ১ শতাংশ থাকে সবশেষে, যাকে বলে পেট্রোকেমিক্যাল ফিডস্টক। তার বড় একটা অংশ বেনজিন। ২ দশমিক ১ শতাংশ শুনতে একটু কম মনে হতে পারে। কিন্তু একবার চিন্তা করেন, বিশ্বজুড়ে প্রতিদিন পেট্রোকেমিক্যাল ব্যবহৃত হয় প্রায় দেড় হাজার কোটি লিটার। হ্যাঁ, দেড় হাজার কোটি লিটার। একটু বেশি মনে হলেও খুব একটা বেশি নয় কিন্তু, যদি হিসাব করেন। পৃথিবীর প্রত্যেক মানুষ গড়ে দুই লিটার পেট্রোকেমিক্যাল ব্যবহার করছে।

অ্যাসপিরিন সমস্যার কথা যখন হলোই, আরও নানা বিজ্ঞানের গল্পের মতো এই গল্পেও বিশ্বযুদ্ধ আসবে। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে টিএনটি ছিল অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিস্ফোরক। টিএনটি বানাতে লাগে টলুইন। টলুইনের আগের উৎস ছিল কোল টার। কোল টার আসে কয়লা থেকে। কয়লা পোড়ালে শেষে ঝাঁজালো গন্ধের একটা রাসায়নিক পড়ে থাকে, সেটাই কোল টার। কোল টারের সাপ্লাই আসলে খুব বেশি নয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কোল টারের সরবরাহ ছিল কম, তাই টিএনটির যথেষ্ট সরবরাহ ছিল না। ভাগ্যিস ছিল না। প্রায় দুই কোটি মানুষ মারা গেছে এই যুদ্ধে, আরও বেশি কোল টার পাওয়া গেলে আরও বেশি মানুষ মারা যেত হয়তো। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এই সমস্যা আর থাকল না, বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেলেন টলুইনের বিকল্প উৎস, পেট্রোলিয়ামের সেই ফিডস্টক, ওই ফিডস্টক থেকেই পাওয়া গেল টলুইন, টলুইন থেকে সহজেই টিএনটি।

বিস্ফোরক নিয়ে যেহেতু কথা হচ্ছেই, সবচেয়ে বিখ্যাত বিস্ফোরকের কথা আর বাদ যাবে কেন। নোবেল পুরস্কারের প্রবর্তক আলফ্রেড নোবেলের আবিষ্কার করা বিস্ফোরক ডিনামাইট। ডিনামাইটের গুরুত্বপূর্ণ অংশ নাইট্রোগ্লিসারিন, যা আসে গ্লিসারিন থেকে। গ্লিসারিনের উৎস আবার তিমির তেল। তিমির তেলের চাহিদা বিশ্বজুড়ে ঊনবিংশ শতাব্দীতে কোথায় পৌঁছেছিল, বুঝতে মবি ডিক পড়া যেতে পারে। গত শতাব্দীর ত্রিশের দশকে চাহিদা পূরণ করতে প্রতিবছর প্রায় ৫০ হাজার তিমি মারা পড়ত বিশ্বজুড়ে। একসময় সাগর দাপিয়ে বেড়ানো তিমি গত শতাব্দীর শেষ দিকে এসে বিলুপ্তপ্রায়। তিমি থেকে আসত মোম, আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক এবং গ্লিসারিন।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নাইট্রোগ্লিসারিন দিয়ে ডিনামাইট বানিয়ে মানুষ মারার সঙ্গে তিমির তেল লাগত আরও একটা কাজে। এই বিশ্বযুদ্ধে সৈন্যদের লম্বা সময় ট্রেঞ্চ কেটে তার মধ্যে কাটাতে হতো, এ সময় পায়ের পাতা ভিজে থাকত। লম্বা সময় ধরে ভেজা পা থাকলে ট্রেঞ্চ ফুট নামে এক ভয়াবহ উপসর্গ দেখা দেয়। পা চুলকায়, মনে হয় কেউ পায়ের পাতায় পিন ফোটাচ্ছে, তীব্র ব্যথা হয়, এমনকি অবশ হয়ে যেতে পারে। খুব খারাপ হলে পা কেটে ফেলাও লাগতে পারে। ট্রেঞ্চ ফুট থেকে বাঁচার জন্য সৈন্যরা তিমির তেল মাখত পায়ে। এক ব্যাটালিয়ন সৈন্যের দিনে ৪০ লিটার পর্যন্ত তিমির তেল দরকার হতো। নাইট্রোগ্লিসারিনের সঙ্গে দরকার তিমির তেল। বুঝতেই পারছেন, এমন এক–দুটো যুদ্ধই যথেষ্ট, সাগর থেকে তিমি নিশ্চিহ্ন করে দিতে। তেল-মোম-গ্লিসারিন—সবকিছুই পাওয়া যায় পেট্রোলিয়াম থেকে। বিলুপ্তপ্রায় তিমি রক্ষা পেল শেষ পর্যন্ত এই পেট্রোলিয়ামের কারণেই। এখন কেউ এসব রাসায়নিকের জন্য তিমি শিকার করে না। করলে পৃথিবীর ৭০০ কোটি মানুষের জন্য রাসায়নিকের জোগান দিতে এক বছরেই হয়তো তিমি বিলুপ্ত হয়ে যেত পৃথিবী থেকে।

পেট্রোলিয়াম নিয়ে যখন কথা বলছি, অনেকের মনেই নিশ্চয় উঁকি দিচ্ছে পলিমারের কথা। পলিমারের মূল উৎস এই পেট্রোলিয়ামই, আরেকটু শুদ্ধ করে বললে পেট্রোলিয়াম ফিডস্টক। এই মুহূর্তে আপনি চারপাশে তাকালে দেখবেন, সবকিছুতে পলিমারের ছড়াছড়ি। আপনার পানির বোতল থেকে শুরু করে টয়লেটের দরজা, ল্যাপটপ বা মোবাইলের বডি, জুতার সোল, চেয়ার, ওষুধের প্যাকেট, কোথায় নেই পলিমার? যাকে অন্য নামে আমরা ডাকি প্লাস্টিক বলে। এই সিনথেটিক পলিমারের ইতিহাস কিন্তু খুব বেশি নয়, মাত্র শ খানেক বছর। তার মানে ১০০ বছর পেছনে ফিরে গেলে বর্তমান সময়ের মতো তেমন কোনো কিছুই আপনি দেখবেন না। দেখবেন সবকিছু বানানো হয় কাঠ, ধাতু, কংক্রিট দিয়ে। আর এখন সবকিছু তৈরি হয় প্লাস্টিক দিয়ে, আক্ষরিক অর্থেই কথাটা সত্য। তার মানে আমাদের প্রতিদিনকার ব্যবহৃত প্রতিটি জিনিস বানাতে ঘুরেফিরে ওই পেট্রোলিয়ামই লাগছে।

প্রথমে আমরা আলাপ করছিলাম ওষুধ নিয়ে, অ্যাসপিরিন নিয়ে। অ্যাসপিরিন পাওয়া যায় পেট্রোলিয়াম থেকে। অন্য ওষুধ? প্রধান প্রধান সব ওষুধের উৎস পেট্রোলিয়াম। প্যারাসিটামল, পেনিসিলিন, অ্যান্টিহিস্টামিন…নাম লিখে শেষ করা যাবে না। অনেকের হিসাবে ৯৯ শতাংশ ওষুধের উৎস পেট্রোলিয়াম। ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হয়, এমন ওষুধগুলোই আসে পেট্রোলিয়াম থেকে। বাকি যে ওষুধ গাছ বা বিভিন্ন প্রাণী থেকে আসে, সেগুলো মূলত খুব কম লাগে বিশ্বজুড়ে।

এতক্ষণে নিশ্চয় বুঝতে পারছেন, আধুনিক দুনিয়ায় আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক উৎস আসলে পেট্রোলিয়াম। দৈনন্দিন জীবনের প্রায় সব রাসায়নিকেই কোনো না কোনোভাবে পেট্রোলিয়াম লাগছে। এখন প্রশ্ন হলো, পেট্রোলিয়াম এল কোথা থেকে?

পেট্রোলিয়ামের অন্য নাম খনিজ তেল। খনিজ তেল তৈরি হয়েছে কোটি কোটি বছর ধরে। ৫০ কোটি বছর ধরে পৃথিবীর ভূগর্ভে খনিজ তেল তৈরি হচ্ছে নানা সময়ে মাটি-পাথরের নিচে গাছ, এলজি, ব্যাকটেরিয়া চাপা পড়ে। অল্প কয়েক বছরে এই পরিবর্তন ঘটে না, লাখ লাখ বছর উপযুক্ত তাপ ও চাপে থেকে তৈরি হয় খনিজ তেল। উপযুক্ত চাপ, তাপ না পেলে এই পরিবর্তন হয় না। সে জন্যই নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে, যেমন মধ্যপ্রাচ্যে বেশি পেট্রোলিয়াম পাওয়া যায়। এর মানে হলো আমাদের সভ্যতাকে চালিত করতে পৃথিবীর ভূগর্ভ প্রস্তুতি নিয়েছে ৫০ কোটি বছর। আমরা এখন ভূগর্ভ থেকে প্রতিদিন দেড় হাজার কোটি লিটার অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম তুলছি আর নানা কাজে ব্যবহার করছি। যার বড় একটা অংশ পোড়াচ্ছি, পুড়িয়ে পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি করছি। প্লাস্টিক বানিয়ে অফেরতযোগ্য ক্ষতি করছি পুরো বিশ্বের জল-স্থলের।

কিন্তু যদি পেট্রোলিয়াম না থাকত? আসলে আমাদের দেখা বর্তমান সভ্যতাই গড়ে উঠত না। এক অ্যাসপিরিনের কথাই ধরা যাক না। অ্যাসপিরিন কীভাবে কাজ করে, এটা নিয়ে কাজ করে ১৯৮২ সালে নোবেল পুরস্কার পান গবেষকেরা। একদল গবেষক হিসাব করে দেখিয়েছেন, এখন পর্যন্ত অন্তত ২৩ হাজার গবেষণাপত্র বেরিয়েছে শুধু অ্যাসপিরিনের ওপরে। এত দরকারি একটা ওষুধ যদি উইলোগাছ থেকেই পেতে হতো, পৃথিবীর ১ শতাংশ ধনীই হয়তো শুধু এটার নাগাল পেত। ওদিকে পেট্রোলিয়াম থেকে যে শক্তি পাওয়া যায়, সে কথা নাহয় না-ই বললাম, প্রতিদিন জীবাশ্ম জ্বালানি নিয়ে তো কত কথাই হচ্ছে।

কল্পনা ছাড়া কোথাও কোনো কিছু অসীম নয়, শেষ আছে একটা। ভূগর্ভের পেট্রোলিয়ামের মজুতেরও তাই একটা শেষ আছে। ৫০ কোটি বছরে ভূগর্ভে কত পেট্রোলিয়াম জমা হয়েছে? নিখুঁত হিসাব বলা কঠিন। তবে বিজ্ঞানীদের ধারণা, ভূগর্ভ থেকে তোলা যাবে—এমন পেট্রোলিয়াম আছে কমবেশি দেড় ট্রিলিয়ন ব্যারেলের মতো। এক ট্রিলিয়ন মানে এক হাজার বিলিয়ন। এক বিলিয়ন সমান ১০০ কোটি। তার মানে দেড় লাখ কোটি ব্যারেল পেট্রোলিয়াম জমা হয়েছে ৫০ কোটি বছরে। আমরা প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে এখন পেট্রোলিয়াম ব্যবহার করি প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি ব্যারেল। প্রতিবছর আবার বাড়ছে পেট্রোলিয়ামের ব্যবহার। এক হিসাবে দেখা গেছে, এই হারে চলতে থাকলে ৫৩ বছরেই সব পেট্রোলিয়াম ফুরিয়ে যাওয়ার কথা। মাত্র ৫৩ বছর! আমাদের অনেকের জীবদ্দশাতেই ফুরিয়ে যাবে!

কিন্তু কে জানে, ভূগর্ভের সব তো আমরা জানি না, হয়তো আরও অনেক বেশি পেট্রোলিয়াম মজুত আছে। প্রযুক্তি আরও উন্নত হলে সেগুলোর খোঁজ পাওয়া যাবে। যতই খোঁজ পাওয়া যাক, ৫৩ বছরে না হোক, ১০০ বছরে তো ফুরোবেই। তখন কী হবে? জ্বালানির সমাধান পাওয়া নিশ্চয় কঠিন হবে না। সৌরশক্তি, নিউক্লিয়ার শক্তি, বায়ুশক্তি, আরও কত কত পুনর্নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসই তো বিজ্ঞানীরা খুঁজে বের করছেন। এসব নিশ্চয় আরও উন্নত হবে, জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্পই আমরা ব্যবহার করব তখন। তাতে শুধু যে পেট্রোলিয়াম শেষ হলেও দুশ্চিন্তা হবে না, তা নয়, আমরা পরিবেশকেও খানিকটা রেহাই দেব।

কিন্তু অন্য সব রাসায়নিক? পেট্রোলিয়াম ফুরিয়ে গেলে আমাদের ওষুধ, আমাদের প্লাস্টিক, আরও নানা রাসায়নিক কোথায় পাব? ব্যাপারটা দুশ্চিন্তার। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এখানেই তাঁদের নৈপুণ্য দেখাবেন নিশ্চিত। পেট্রোলিয়ামের বিকল্প নিশ্চয় তাঁরা খুঁজে বের করবেন। এখন পর্যন্ত এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে আছে গাছ, আরেকটু নির্দিষ্ট করে বললে কাঠ। কাঠের মধ্যে নানা ধরনের জটিল যৌগ আছে, সেলুলোজ আছে। সেলুলোজ থেকেই হয়তো নানা কিছু বানানো যাবে। ভুট্টা থেকে তো বিকল্প জ্বালানি ইথানল এখনই তৈরি হচ্ছে। হয়তো গাছ থেকেই আমরা পাব আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বিচিত্র রাসায়নিক পদার্থের সমাহার পেট্রোলিয়ামের বিকল্প।

লেখক: পিএইচডি গবেষক, রসায়ন বিভাগ, ইউনিভার্সিটি অব ওয়াইওমিং, যুক্তরাষ্ট্র