থায়ামিন শব্দটি কীভাবে পেলাম

কথায় বলে, নামে কীই-বা আসে যায়। তারপরও দৈনন্দিন জীবনে নামের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। নতুন কিছু আলাদাভাবে চিহ্নিত করাসহ নানা কারণেই নাম দিতে হয়। বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও কথাটি সত্য। এসব নামের পেছনেও লুকিয়ে থাকে মজার ইতিহাস বা গল্প। বিজ্ঞানের অতিপরিচিত তেমন একটি শব্দের কথা থাকছে এবার।

বেরিবেরি রোগ নিয়ে গবেষণা করে ডাচ্ চিকিত্সক ক্রিস্টিয়ান আইকম্যান আর তাঁর সহকারী ফ্রেডরিক হপকিন্স প্রথম ভিটামিন আবিষ্কার করেছিলেন। শুরুতে ভিটামিনটির নাম ছিল এনিউরিন (aneurin) বা অ্যান্টি-নিউরিটিক ভিটামিন। আরও পরে ভিটামিনটির নাম দেওয়া হলো ভিটামিন বি১। এর প্রায় ৪০ বছর পর, ওই ভিটামিনটির পারমাণবিক গঠন জানা সম্ভব হয়েছিল। খুবই ধীরে ধীরে রসায়নবিদেরা ভিটামিন বি১-এর রাসায়নিক সজ্জা বুঝতে লাগলেন। ১৯৩২ সালে দেখা গেল, ভিটামিন বি১-এর অণুতে ৩৪টি পরমাণুর সঙ্গে একটি সালফার পরমাণু থাকে। শেষ পর্যন্ত ১৯৩৪ সালে মার্কিন রসায়নবিদ রবার্ট আর উইলিয়ামস ভিটামিন বি১-এর অণুর গঠন আবিষ্কার করেন। এরপরই কেবল ভিটামিন বি১-এর আনুষ্ঠানিকভাবে একটি নাম দেওয়া হলো। এ ভিটামিনটির পারমাণবিক গঠনে অ্যামাইন (amine) গ্রুপ এবং একটি সালফার পরমাণু থাকে। সালফারকে গ্রিক ভাষায় বলে থিওন (theion)। তাই থিওন আর অ্যামাইন মিলিয়ে (theion + amine) সেকেলে নাম ভিটামিন বি১-এর বদলে দেওয়া হলো থিয়ামিন (thiamine)। অর্থাৎ সালফারযুক্ত ভিটামিন।

*লেখাটি ২০১৬ সালে বিজ্ঞানচিন্তার ডিসেম্বর সংখ্যায় প্রকাশিত