রিবোফ্লাভিন শব্দটি যেভাবে পেলাম

নতুন কিছু আলাদাভাবে চিহ্নিত করাসহ নানা কারণেই নাম দিতে হয়। বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও কথাটি সত্য। এসব নামের পেছনেও লুকিয়ে থাকে মজার ইতিহাস। আজ দেখা যাক, রিবোফ্লাভিন শব্দটি কী করে আমাদের হলো?

বিংশ শতাব্দীর দিকে বিজ্ঞানীরা ভিটামিন বি-এর একটি নমুনা তৈরি করেছিলেন, যা বেরিবেরি রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। কিন্তু সাধারণ ভিটামিন বি-এর মতো ইঁদুরের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে এটি কোনো সহায়তা করে না। পরে ভিটামিন বি-এর আরেকটি নমুনা পাওয়া গিয়েছিল। এটি ইঁদুরের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, কিন্তু বেরিবেরি প্রতিরোধ করতে পারে না। একে আলাদা ভিটামিন মনে করে শুরুতে বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছিলেন ভিটামিন জি (G)। কিন্তু অন্য বিজ্ঞানীদের কাছে নামটি যথার্থ বলে মনে হয়নি। কারণ পুরোনো ভিটামিন বি-এর সাথে নতুনটির কিছু অমিল থাকলেও দুটোর মধ্যে মিলই বেশি। তাই দুটি ভিটামিনের নামের মধ্যেও মিল থাকা উচিত বলে মনে হলো তাঁদের কাছে। সে কারণে বেরিবেরি প্রতিরোধী ভিটামিন বি-এর নাম দেওয়া হল ভিটামিন বি১ (Vitamin B1)। আর ইঁদুরের বৃদ্ধিতে সহায়তাকারী নতুন ভিটামিনটির নাম দেওয়া হল ভিটামিন বি২ (Vitamin B2)। আরও পরে ভিটামিন বি২-এর আণবিক গঠনে একটি অংশে চিনির একটি অণু দেখা গেল, যা রাইবোজ (ribose) নামে পরিচিত। ভিটামিন বি২ দেখতে হলুদ রঙের। ল্যাটিন ভাষায় হলুদ রংকে বলে ফ্লাভাস (Flavus)। তাই এই দুটি শব্দ মিলিয়ে ভিটামিন বি২-এর মান হয়ে গেল রিবোফ্লাভিন (Riboflavin)।

*লেখাটি ২০১৭ সালে বিজ্ঞানচিন্তার জানুয়ারি সংখ্যায় প্রকাশিত