ইলেকট্রন একই সঙ্গে কণা ও তরঙ্গ। ইলেকট্রনের এই দ্বৈত চরিত্র নিয়ে কোনো কোনো বিজ্ঞানী আবার সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন সে সময়। বেশ লেখালেখিও হয় বিভিন্ন জার্নালে। তখন একটা কৌতুক বেশ চালু ছিল সন্দেহবাদী বিজ্ঞানীদের মধ্যে। সেটা ছিল এ রকম—
সোম, বুধ আর শুক্রবার—এই তিন দিন ইলেকট্রন হলো কণা। শনি, মঙ্গল আর বৃহস্পতিবার—এই তিন দিন ইলেকট্রন হলো তরঙ্গ। বাদ রইল এক দিন রোববার। রোববার ইলেকট্রনের ছুটি। কৌতুকটা এ পর্যন্তই। কিন্তু ওই যে, মানব মস্তিষ্ক নাকি স্মৃতির ফাঁকফোকরে গল্প তৈরি করে, যাকে বলে ফিল আপ দ্য ব্ল্যাঙ্কস আরকি। তো রোববারের ইলেকট্রন নিয়ে সে রকম একটা গল্প—
যেহেতু রোববার ইলেকট্রনের ছুটি, সে গেল একটা বারে। সেই বারের বারটেন্ডার আবার প্রোটন। সে ইলেকট্রনকে দেখে বেশ বিরক্ত হলো। বলেই ফেলল—
ওহ তুমি আবার এসেছ?
কেন, আমি এলেই তোমার মুখটা বেজার হয় কেন?
কারণ তোমার অ্যাটিচিউড।
আমার অ্যাটিচিউডে সমস্যা কী?
আমি তোমার ‘নেগেটিভ’ অ্যাটিচিউডের কথা বলছিলাম।
রোববারে ইলেকট্রনের যেমন ছুটি, সে রকম বিজ্ঞানীদেরও ছুটি হতে বাধা কোথায়? তো এক বিজ্ঞানী ‘পদার্থের গ্যাসীয় অবস্থানের তাপগত প্রসারণ’ নিয়ে গবেষণা করছিলেন। সেদিন তিনি পড়ছিলেন হিলিয়াম গ্যাসের ওপর একটি বই। পড়তে পড়তে একসময় টেবিলের ওপর বইটি রেখে বেরোলেন বাগানে একটু হেঁটে আসবেন বলে, একটু ধূমপানও করা যেতে পারে। মিনিট বিশেক পর ফিরে এসে দেখেন টেবিলের ওপর বইটি নেই, বেমালুম উধাও! তিনি চিত্কার করে স্ত্রীকে ডাকলেন।
কী হলো?
টেবিলের ওপর বইটা রেখে গেলাম, সেটা গেল কোথায়?
কী বই পড়ছিলে?
হিলিয়াম গ্যাসের ওপর একটা বই পড়ছিলাম।
ওহ, বুঝতে পেরেছি।
চিকিৎসকদের স্ত্রীরা যেমন হাফ চিকিৎসক হন, বিজ্ঞানীদের স্ত্রীদেরও হাফ বিজ্ঞানী হতে দোষ কোথায়? বিজ্ঞানীর স্ত্রী ওপরের দিকে আঙুল দেখালেন। বিজ্ঞানী হতভম্ব হয়ে দেখেন, আরে তাই তো, সিলিংয়ে আটকে আছে হিলিয়াম গ্যাসের বই। এমনটাই তো হওয়ার কথা—ভাবলেন পদার্থের গ্যাসীয় অবস্থানের তাপগত প্রসারণের গবেষক!
বলাই বাহুল্য, হিলিয়াম (He) গ্যাস হচ্ছে নোবেল গ্যাস, যার কোনো ফর্মুলা নেই। মনে হচ্ছে, এই লেখাও বোধ হয় ‘বিজ্ঞান রম্যের’ কোনো ফর্মুলার মধ্যে পড়ল না!
লেখক: কার্টুনিস্ট, সম্পাদক, উন্মাদ