দেশব্যাপী প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুল শিক্ষার্থীদের জ্যোতির্বিজ্ঞানে আগ্রহী করে তুলতে আয়োজিত হচ্ছে কসম্যানিয়া। ২৫ মে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের চাঁনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়োজিত হয় ‘অ্যাপোলো ১১’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠান।
স্কুল শিক্ষার্থীদের আনন্দের সঙ্গে বিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিজ্ঞান শেখানো হয় কসম্যানিয়ায়। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ক সংগঠন কোপার্নিকাস অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল মেমোরিয়াল অব সাস্ট (ক্যাম-সাস্ট) এ আয়োজন বাস্তবায়ন করছে। এ আয়োজনে শিক্ষার্থী সংখ্যা ছিল প্রায় ৪৫০ জন।
কসম্যানিয়ায় শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল বিভিন্ন অ্যাস্ট্রো-প্রেজেন্টেশন। এই প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা জ্যোতির্বিজ্ঞানের নানা বিষয় যেমন সৌরজগৎ, বিভিন্ন গ্যালাক্সি, এক্সোপ্ল্যানেটসহ বিচিত্র বিষয়ে জানতে পারে। যেমন ‘তারাদের কথা’, ‘সূর্য ও আমাদের সৌরজগৎ’, ‘রকেট কীভাবে ওড়ে’, ‘চাঁদের ফালি কেন হয়’, ‘নক্ষত্রমন্ডলীদের কথা’—এসব বিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের নানা বিষয় সম্পর্কে মজার তথ্য, চিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে বিষয়গুলো সহজবোধ্য ও আকর্ষণীয় করে তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজন ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব। পেপার প্লেইন প্রতিযোগিতায় মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ধারণা দেওয়া হয় অ্যারোডাইনামিক্স সম্পর্কে। আরও ছিল ওয়াটার রকেট প্রদর্শনী। এতে শিক্ষার্থীরা রকেটে ওড়ার কলাকৌশল ও তার পেছনে বিজ্ঞান জানতে পারে।
স্কুল শিক্ষার্থীদের আনন্দের সঙ্গে বিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিজ্ঞান শেখানো হয় কসম্যানিয়ায়। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ক সংগঠন কোপার্নিকাস অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল মেমোরিয়াল অব সাস্ট (ক্যাম-সাস্ট) এ আয়োজন বাস্তবায়ন করছে।
শিক্ষার্থীরা কতটা শিখতে পারলো, তা মূল্যায়নের জন্য ছিল কুইজ প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতায় জুনিয়র ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিফাত আহমেদ। আর সিনিয়র ক্যাটাগরিতে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আলী নূর হয়েছে প্রথম। কাগজের তৈরি প্লেন উড়িয়ে সোজাসুজি কে কতটা দূরে পাঠাতে পারে, ছিল এমন প্রতিযোগিতাও। এতে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. তারেক ৭৪ ফিট ১১ ইঞ্চি দূরে কাগজের বিমান পাঠিয়ে প্রথম হয়।
দূরের তারাগুলো দেখতে কেমন, তা বোঝাতে টেলিস্কোপের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের। সন্ধ্যার এ আয়োজনের নাম স্টারগেজিং। টেলিস্কোপের চোখে আকাশ দেখার পাশাপাশি হাতে-কলমে নক্ষত্রমণ্ডলীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় এ সময়।
এর শিক্ষার্থীদের মহাকাশে ভ্রমণের ব্যবস্থা আয়োজকরা। না, বাস্তবে নয়; ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটির সাহায্যে। ২০১৮ সালে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ‘স্পেস অ্যাপ চ্যালেঞ্জ’ বিজয়ী দল অলিকের লুনার ভিআর প্রজেক্টের সাহায্যে সরাসরি চাঁদের পৃষ্ঠের ছবি, চাঁদের অ্যাপোলো ১১ মিশন ও চাঁদের বুকে সূর্যগ্রহণও দেখতে পায় শিক্ষার্থীরা। স্থানীয় ছেলে-বুড়ো অনেকেই এই স্বাদ উপভোগ করেন।
দেশের মূলধারার স্কুল কলেজে বিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিজ্ঞান শিক্ষার পর্যাপ্ত সুযোগ থাকলেও পিছিয়ে রয়েছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের মাঝে বিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতেই ক্যাম-সাস্টের এই আয়োজন। মূলত পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দিতে, তাদের স্বপ্ন দেখা শেখাতে ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের সম্ভাবনাকে জাগিয়ে তুলতেই আয়োজিত হচ্ছে কসম্যানিয়া।