সিলেটে শুরু হলো ফিজিক্স অলিম্পিয়াড

বেলুন উড়িয়ে সিলেট ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের উদ্বোধন

বিশ্বজয়ের স্বপ্ন নিয়ে সিলেটে শুরু হলো ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের আঞ্চলিক পর্ব। আজ শনিবার সকালে কয়েক শ শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে জাতীয় সংগীত গেয়ে, বেলুন উড়িয়ে শহরের সরকারি মহিলা কলেজে এ উৎসব উদ্বোধন করা হয়। 

এ সময় সেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. জামাল উদ্দিন ভূঞা, সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ নাজমীন ইসলাম চৌধুরী, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের সিলেট শাখা ব্যবস্থাপক মো. নজমুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গোলাম দস্তগীর আল কাদেরী ও সহযোগী অধ্যাপক মো. তানভীর হানিফ, প্রথম আলোর সিলেটের নিজস্ব প্রতিবেদক সুমনকুমার দাশ এবং বিজ্ঞানচিন্তার নির্বাহী সম্পাদক আবুল বাসার।

শুভেচ্ছা বক্তৃতায় সুমনকুমার দাশ বলেন, ‘প্রথম আলো শুধু সংবাদপত্র প্রকাশ ছাড়াও নানা সামাজিক দায়িত্ব পালন করে। ফিজিক্স অলিম্পিয়াড আয়োজনও তেমনই একটি দায়িত্ব। এর মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিজ্ঞানমনস্ক হয়ে উঠবে, ভবিষ্যৎ বিজ্ঞানী জন্ম নেবে এবং সারা বিশ্বে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।’

পতাকা উত্তোলন করছেন অতিথিরা
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখছেন প্রথম আলোর সিলেটের নিজস্ব প্রতিবেদক সুমনকুমার দাশ

মো. নজমুল হক বলেন, ‘সুন্দর ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ফিজিক্স ও গণিত শিখতে হবে। চর্চা বাড়াতে হবে। মেধাবীদের পৃষ্ঠপোষকতায় ডাচ্-বাংলা ব্যাংক তোমাদের পাশে আছে।’

অধ্যক্ষ নাজমীন ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘অলস মস্তিষ্ক মানুষ ও সমাজের জন্য ক্ষতিকর। তাই মস্তিষ্ককে অলস না রেখে ফিজিক্স ও গণিতের চর্চা বাড়াও। তাতেই দেশের মঙ্গল।’

অধ্যাপক গোলাম দস্তগীর আল কাদেরী বলেন, ‘দুশ্চিন্তা না করে ফিজিক্স ও গণিতের চর্চা বাড়াও। তাহলে একদিন তোমাদের মধ্য থেকেই বেরিয়ে আসতে পারে ভবিষ্যতের সত্যেন বোস বা আইনস্টাইন।’

উপাচার্য মো. জামাল উদ্দিন ভূঞা বলেন, ‘তোমরাই দেশের ভবিষ্যতের নাগরিক, ভবিষ্যৎ নেতা। তাই তোমাদের স্মার্ট হতে হবে। সেজন্য ফিজিক্স তথা বিজ্ঞানের চর্চা করকে হবে। তবেই গড়ে উঠবে সুন্দর ও স্মার্ট বাংলাদেশ।’ 

উদ্বোধনের পর শুরু হয় পরীক্ষা। পরীক্ষার পর শিক্ষার্থীদের জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণীর মধ্যে দিয়ে শেষ হবে আজকের উৎসব।

সিলেট ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে পরীক্ষার্থীদের একাংশ

১৩তম ফিজিক্স অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হচ্ছে চারটি ক্যাটাগরিতে। ৫ম-৬ষ্ঠ শ্রেণি বা সমমানের শিক্ষার্থীরা এ ক্যাটাগরি, ৭ম-৮ম শ্রেণি বা সমমানের শিক্ষার্থীরা বি ক্যাটাগরি, ৯ম-১০ম শ্রেণি বা সমমানের শিক্ষার্থীরা সি ক্যাটাগরি এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি বা সমমানের শিক্ষার্থীরা ডি ক্যাটাগরি।

২০২৩ সালে জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত হবে ৫৩তম ফিজিক্স অলিম্পিয়াড। এ লক্ষ্যে প্রতিবারের মতো এবারও দেশব্যাপী ১৩তম ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো ফিজিক্স অলিম্পিয়াড ২০২৩ আয়োজন করা হচ্ছে। বাছাইপর্বের নির্বাচিতদের নিয়ে আয়োজিত হচ্ছে আঞ্চলিক ফিজিক্স অলিম্পিয়াড। ইতিমধ্যেই অনুষ্ঠিত হয়েছে ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের ঢাকা, যশোর, বরিশাল, দিনাজপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ আঞ্চলিক পর্ব। আজ সিলেটের পাশাপাশি ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পর্বও অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে শেষ হবে ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের আঞ্চলিক উৎসব। এরপর আঞ্চলিক পর্বের বিজয়ীদের নিয়ে আয়োজিত হবে জাতীয় উৎসব। পরে জাতীয় উৎসবের বিজয়ীদের নিয়ে ক্যাম্প আয়োজন করা হবে। ক্যাম্প শেষে বাছাইকৃতদের নিয়ে গঠিত হবে বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পিয়াড দল। ওই দলটিই জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠেয় ৫৩তম ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে।

সমস্যা সমাধানে ব্যস্ত পরীক্ষার্থীদের একাংশ

এ অলিম্পিয়াডের আয়োজন করছে বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পিয়াড কমিটি। আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতা করছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক। ব্যবস্থাপনায় রয়েছে প্রথম আলো। এ ছাড়া ম্যাগাজিন পার্টনার হিসাবে থাকছে কিশোর আলো ও বিজ্ঞানবিষয়ক মাসিক ম্যাগাজিন বিজ্ঞানচিন্তা। টেকনিক্যাল পার্টনার হিসাবে আছে বিডিকম।

দেশের শিক্ষার্থীদের পদার্থবিজ্ঞানে দক্ষ করে তুলতে ২০১১ সাল থেকেই আয়োজিত হচ্ছে ফিজিক্স অলিম্পিয়াড। এবারেও একই উদ্দেশ্য নিয়ে শুরু হচ্ছে ফিজিক্স অলিম্পিয়াড ২০২৩।

ফিজিক্স অলিম্পিয়াড ও আঞ্চলিক পর্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে bdpho.org ওয়েবসাইটে।