অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের ঢাকা দক্ষিণ আঞ্চলিক পর্ব। ১ মার্চ, শুক্রবার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েটে) এ অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় পর্বের জন্য তিন ক্যাটাগরিতে বাছাই করা হয় ২৯৯ জনকে।
এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের প্রধান কোচ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রাখহরি সরকার, যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিউট অব হেলথের রিসার্চ ফেলো এস. এম. রফিকুল ইসলাম ও মুগদা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আসিফ রাশেদ। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড ঢাকা দক্ষিণাঞ্চলের সভাপতি এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ তারিক আরাফাত।
অলিম্পিয়াডে সকাল ৭.৩০টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। সকাল ৮.৩০টায় শুরু হয় পরীক্ষা। শেষ হয় ৯.৩০টায়। পরীক্ষা শেষে সকল শিক্ষার্থীরদের নিয়ে জিমন্যাশিয়ামে উপস্থিত হয় স্বেচ্ছাসেবকরা। তারপর জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। ২৯ ফেব্রুয়ারি বেইলি রোডে মর্মান্তিক অগ্নিকান্ডে নিহতদের প্রতি শোক প্রকাশ করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
তিন ক্যাটাগরিতে মোট ২৯৯ জনকে জাতীয় পর্বের জন্য বাছাই করা হয়েছে—জুনিয়র ক্যাটাগরিতে ৯৪ জন, সেকেন্ডারি ক্যাটাগরিতে ১৫০ জন ও হায়ার সেকেন্ডারি ক্যাটাগরিতে ৫৫ জন।
এরপর শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। হৃৎপিণ্ডে প্রবাহিত রক্তের চাপ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় কি? মানুষের দেহে ক্লোরোফিল ট্রান্সফার করা হলে কি মানুষ অটোট্রোফ (নিজেই নিজের খাদ্য তৈরি করতে পারে) হবে? মানুষ আলাদা হলেও প্রত্যেকের জন্য ওষুধ কেন আলাদা নয়? শিক্ষার্থীদের এমন নানা কৌতুহলোদ্দীপক প্রশ্নের উত্তর দেন উপস্থিত শিক্ষকেরা। পর্বটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৌমিত্র চক্রবর্তী। এ পর্বে প্রশ্নকারীদের উপহার হিসেবে বই দেওয়া হয়।
১২০-এর বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি ছিল উৎসবমুখর। এর মধ্য থেকে তিন ক্যাটাগরিতে মোট ২৯৯ জনকে জাতীয় পর্বের জন্য বাছাই করা হয়েছে—জুনিয়র ক্যাটাগরিতে ৯৪ জন, সেকেন্ডারি ক্যাটাগরিতে ১৫০ জন ও হায়ার সেকেন্ডারি ক্যাটাগরিতে ৫৫ জন। জুনিয়র ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন অব দ্য চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সেন্ট গ্রেগরি হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের নিলয় ঘোষ। মাস্টারমাইন্ড ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষার্থী মাহপারা ফাতিন সেকেন্ডারি ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন অব দ্য চ্যাম্পিয়ন, আর হায়ার সেকেন্ডারি ক্যাটাগরিতে এ পুরস্কার পেয়েছেন নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুলাহ আল নাঈম।
৭-১৪ জুলাই কাজাখস্তানের আস্তানা শহরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ৩৫তম আন্তর্জাতিক জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে।
বিজয়ীদের নাম ঘোষণা এবং ফটোসেশনের মাধ্যমে শেষ হয় বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের ঢাকা দক্ষিণ আঞ্চলিক উৎসব ২০২৪। জাতীয় পর্বের বিজয়ীদের নিয়ে মে মাসে অনুষ্ঠিত হবে প্রথম ক্যাম্প। কয়েক ধাপে অনুষ্ঠিত ক্যাম্প শেষে চারজনকে বাছাই করা হবে। তারাই ৭-১৪ জুলাই কাজাখস্তানের আস্তানা শহরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ৩৫তম আন্তর্জাতিক জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে।
বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের (বিডিবিও) আয়োজক বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড কমিটি। প্রশিক্ষণে সহয়তা করবে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি। কারিগরি সহযোগিতা দেবে ল্যাব বাংলা। এ ছাড়া ম্যাগাজিন পার্টনার হিসাবে থাকছে কিশোর আলো ও বিজ্ঞানচিন্তা।
অলিম্পিয়াড সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন এই লিংকে: bdbo.org/reg।