ময়মনসিংহে চলছে ফিজিক্স অলিম্পিয়াড

বেলুন উড়িয়ে ময়মনসিংহ ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের উদ্বোধনকাজী আকাশ

প্রিমিয়ার আইডিয়াল হাই স্কুলে চলছে ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের ময়মনসিংহ আঞ্চলিক পর্ব। সকাল ৮টা থেকে শিক্ষার্থীরা এই স্কুলে জড়ো হতে শুরু করে। 

এ উৎসবের উদ্বোধনী পর্বের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক গাজি হাসান কামাল, ময়মনসিংহ শাখার ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ম্যানেজার মো. গোলাম কিবরিয়া, প্রিমিয়ার আইডিয়াল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক চান মিয়া, পুলিশ লাইন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম, প্রথম আলোর ময়মনসিংহ প্রতিনিধি কামরান পারভেজ এবং ময়মনসিংহ বন্ধুসভার সভাপতি সুব্রত কুমার সিংহ।

উদ্বোধনী পর্বের শুরুতে শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ময়মনসিংহ শাখার ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ম্যানেজার মো: গোলাম কিবরিয়া  বলেন, 'গণিত এবং ফিজিক্সকে আমরা সবসময় কঠিন মনে করতাম। কিন্তু ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের মাধ্যমে ফিজিক্স বিষয়টা এখন আর কঠিন নেই। এই অলিম্পিয়াডের মাধ্যমে কিছুটা হলেও ফিজিক্সভীতি কমেছে।'

পতাকা উত্তোলন করছেন অতিথিরা
কাজী আকাশ
জাতীয় সঙ্গীত গাইছে ময়মনসিংহ বন্ধুসভার বন্ধুরা
কাজী আকাশ

প্রিমিয়ার আইডিয়াল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক চান মিয়া বলেন, 'আমরা এখানে যারা উপস্থিত আছি, তারা সবাই যেন মানুষ হতে পারি, সেই চেষ্টা সব সময় করব। কারণ, মানুষ হতে পারলে বাকি সব হবে।'

ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক গাজি হাসান কামাল বলেন, 'পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে। এগোচ্ছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাও। গণিত ও ফিজিক্সে আমাদের ভীতি আছে। সেই ভীতি কীভাবে কাটানো যায়, তার প্রাথমিক শুরুটা এই ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের মাধ্যমে হচ্ছে। এ জন্য প্রথম আলো ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংককে ধন্যাবাদ।'

সকাল ৯.১৫ মিনিটে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় এ উৎসব। ময়মনসিংহ বন্ধুসভার বন্ধুদের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা একযোগে গেয়ে ওঠে 'আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোভাসি।' সূচনা হয় ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের ময়মনসিংহ আঞ্চলিক পর্বের। এ সময় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর গাজি হাসান কামাল, বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন প্রিমিয়ার আইডিয়াল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক চান মিয়া ও ইভেন্টের পতাকা উত্তোলন করেন ময়মনসিংহ শাখার ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ম্যানেজার মো. গোলাম কিবরিয়া। উদ্বোধনী পর্ব সঞ্চালন করেন ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রথম আলোর বিজ্ঞাপন বিভাগের সাদিকুল ইসলাম।

এরপর অতিথিদের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা মিলে বেলুন উড়িয়ে শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন ময়মনসিংহ আঞ্চলিক ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের। 

ময়মনসিংহ ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের উদ্বোধনী পর্বে সার বেঁধে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীরা
কাজী আকাশ

এখন চলছে পরীক্ষা। সকাল ৯.৩০টা থেকে বেলা ১০.৪৫টা পর্যন্ত চলবে পরীক্ষা। এরপর শুরু হবে  ম্যাজিক শো ও প্রশ্ন-উত্তর পর্ব। দুপুর ১২.৩০টায় সমাপনী অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণীর মাধ্যমে শেষ হবে বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের এ আঞ্চলিক পর্ব।

১৩তম ফিজিক্স অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হচ্ছে চারটি ক্যাটাগরিতে। ৫ম-৬ষ্ঠ শ্রেণি বা সমমানের শিক্ষার্থীরা এ ক্যাটাগরি, ৭ম-৮ম শ্রেণি বা সমমানের শিক্ষার্থীরা বি ক্যাটাগরি, ৯ম-১০ম শ্রেণি বা সমমানের শিক্ষার্থীরা সি ক্যাটাগরি এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি বা সমমানের শিক্ষার্থীরা ডি ক্যাটাগরি। 

২০২৩ সালে জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত হবে ৫৩তম ফিজিক্স অলিম্পিয়াড। এ লক্ষ্যে প্রতিবারের মতো এবারও দেশব্যাপী ১৩তম ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো ফিজিক্স অলিম্পিয়াড ২০২৩ আয়োজন করা হচ্ছে। বাছাইপর্বের নির্বাচিতদের নিয়ে আয়োজিত হচ্ছে আঞ্চলিক ফিজিক্স অলিম্পিয়াড। ইতিমধ্যেই অনুষ্ঠিত হয়েছে ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের ঢাকা ও যশোর আঞ্চলিক পর্ব। এ পর্ব অনুষ্ঠিত হচ্ছে অফলাইনে, বিভিন্ন আঞ্চলিক ভেন্যুতে। এরপর আঞ্চলিক পর্বের বিজয়ীদের নিয়ে আয়োজিত হবে জাতীয় উৎসব। পরে জাতীয় উৎসবের বিজয়ীদের নিয়ে ক্যাম্প আয়োজন করা হবে। ক্যাম্প শেষে বাছাইকৃতদের নিয়ে গঠিত হবে বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পিয়াড দল। ওই দলটিই জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠেয় ৫৩তম ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে।

ময়মনসিংহ ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের একাংশ
কাজী আকাশ

এ অলিম্পিয়াডের আয়োজন করছে বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পিয়াড কমিটি। আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতা করছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক। ব্যবস্থাপনায় রয়েছে প্রথম আলো। এ ছাড়া ম্যাগাজিন পার্টনার হিসাবে থাকছে কিশোর আলো ও বিজ্ঞানবিষয়ক মাসিক ম্যাগাজিন বিজ্ঞানচিন্তা। টেকনিক্যাল পার্টনার হিসাবে আছে বিডিকম।

দেশের শিক্ষার্থীদের পদার্থবিজ্ঞানে দক্ষ করে তুলতে ২০১১ সাল থেকেই আয়োজিত হচ্ছে ফিজিক্স অলিম্পিয়াড। এবারেও একই উদ্দেশ্য নিয়ে শুরু হচ্ছে ফিজিক্স অলিম্পিয়াড ২০২৩।

ফিজিক্স অলিম্পিয়াড ও আঞ্চলিক পর্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে bdpho.org ওয়েবসাইটে।

লেখক: সম্পাদনা দলের সদস্য, বিজ্ঞানচিন্তা