পর্দা নামল জাতীয় জীববিজ্ঞান উৎসবের

শেষ হলো বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের জাতীয় পর্ব। ৪ মে, শনিবার রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ উৎসব আয়োজিত হয়। সারা দেশের নির্বাচিত ১ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী উৎসবে অংশগ্রহণ করে। এ উৎসবের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানে উৎসাহী করে তোলা ও জীববিজ্ঞানের ভয় দূর করা। আরেকটি উদ্দেশ্য, বলা বাহুল্য, আন্তর্জাতিক জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের জন্য বাংলাদেশ দল নির্বাচন।

উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান (এমপি)। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপচার্য অধ্যাপক অলোক কুমার পাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান ও ল্যাব বাংলার চেয়ারম্যান রাখাল রাহা। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া।

শনিবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে শুরু হয় পরীক্ষা। শেষ হয় দুপুর ১২টায়। এরপর টিএসসি মিলনায়তনে জাতীয় সংগীত ও পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে শুরু হয় উৎসবের দ্বিতীয় পর্ব। শুরুতেই ছিল অতিথিদের বক্তব্য। এরপর প্রশ্নোত্তর পর্বের আয়োজন করা হয়। মানুষ কেন মারা যায়, ডিএনএ পরিবর্তন করে কি নতুন প্রাণী আবিষ্কার করা সম্ভব, মাতৃগর্ভে বেড়ে ওঠা সন্তানকে কি প্যারাসাইট বলা যায়—শিক্ষার্থীদের এরকম নানা কৌতূহলী প্রশ্নের উত্তর দেন শিক্ষকরা। এ পর্বে সেরা দশ প্রশ্নকারীকে পুরস্কার দেওয়া হয়।

এরপর শুরু হয় পুরস্কার বিতরণী। বাংলার বিজ্ঞানীদের নামে বিশেষ সম্মানসূচক পুরস্কার ‘আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু পুরস্কার’ পেয়েছেন ফায়াদ আহম্মেদ। ২০২৩ আন্তর্জাতিক জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ স্কোরসহ পরপর দুইবার আন্তর্জাতিক জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে ব্রোঞ্জপদক জয়ী তিনি। বর্তমানে কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় অধ্যয়নরত। তাঁর পক্ষ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন তাঁর মা।

সব মিলিয়ে পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০০ জন। এদের মধ্য থেকে পরে আন্তর্জাতিক জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের দল নির্বাচন করা হবে।

‘উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী পুরস্কার’ পেয়েছে একাডেমিয়া স্কুল ঢাকার শিক্ষার্থী মো. আলিফ রায়হান। ‘একেএম নূরুল কবির পুরস্কার’ পেয়েছে মাস্টারমাইন্ড ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের মাহপারা ফাতিন। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী তাকিয়াহ তাসনিম পেয়েছে ‘গোপাল চন্দ্র ভট্টাচার্য পুরস্কার’। ‘এসএম হাসানুজ্জামান পুরস্কার’ পেয়েছে নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী সামসুল আলম।

এ ছাড়া জুনিয়র ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জারিন তাসনিম হাসান। সেকেন্ডারি ক্যাটাগরির চ্যাম্পিয়ন আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্বপ্না মন্ডল এবং হায়ার সেকেন্ডারি ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে নটর ডেম কলেজের মো. তরিফুর রহমান।

এর পাশাপাশি দশম জাতীয় আবাসিক বায়োক্যাম্পের জন্য আরও ২০ শিক্ষার্থীকে নির্বাচন করা হয়েছে। এই ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হবে ৯-১২ মে সাভারের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজিতে। সব মিলিয়ে পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০০ জন। এদের মধ্য থেকে পরে আন্তর্জাতিক জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের দল নির্বাচন করা হবে।

বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড আয়োজন করেছে জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড কমিটি। কেন্দ্রীয়ভাবে এ আয়োজনে প্রশিক্ষণ সহযোগী হিসেবে ছিল ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি। কারিগরি সহযোগী ল্যাব বাংলা। হেলথ পার্টনার ছিল প্ল্যাটফর্ম। মিডিয়া পার্টনার চ্যানেল ২৪। স্পেশাল পার্টনার এনার্জিপ্যাক এগ্রো। ম্যাগাজিন পার্টনার হিসেবে ছিল কিশোর আলো এবং বিজ্ঞানবিষয়ক মাসিক ম্যাগাজিন বিজ্ঞানচিন্তা।